সচেতনতার বিকল্প নেই
দেশে চলছে করোনা মহামারি। মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলেছে। এরইমধ্যে অপঘাতেও প্রাণহানি হচ্ছে। বিশেষ করে পানিতে ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন এটাকে ‘নিয়তি’ বলে বসে থাকলে চলবে না। বরং মৃত্যুর কার্যকারণগুলো ব্যাখ্যা করে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে সাঁতার শেখার ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিতে হবে। এ ব্যাপারে সচেতনতাও বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। নইলে বাড়তে থাকবে মৃত্যুর সংখ্যাও।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় পানিতে ডুবে সিফাত (২) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের সেন্দ-শিলাউর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত সিফাত ওই গ্রামের কবির মিয়ার ছেলে। বিকেলে বাড়ির পাশের একটি পুকুরের কাছে খেলা করছিল সিফাত। এ সময় সবার অগোচরে পুকুরে পড়ে যায় সে। অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর মুমূর্ষু অবস্থায় পুকুর থেকে সিফাতকে উদ্ধার করে করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ধরনের শোকাবহ পরিস্থিতি কিছুতেই কাম্য নয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১৫ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়, যা মোট শিশুমৃত্যুর ৪৩ শতাংশ। আর প্রতিদিন গড়ে ৪০টি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। বলতে গেলে শিশুর অন্যতম ঘাতক এই পানিতে ডুবে মৃত্যু। এই মৃত্যু রোধ করতে হলে সচেতনতা বাড়াতে হবে। সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে পরিবারকে। শিশুরা জলাধারের কাছে যাতে যেতে না পারে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।
এ ব্যাপারে বাড়াতে হবে সামাজিক সচেতনতা। গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে যে সমস্ত শিশুরা সাঁতার শেখার উপযোগী হয়েছে তাদেরকে অবশ্যই সাঁতার শেখাতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে স্থানীয় প্রশাসন, এনজিওসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে। সাঁতার না জানার কারণেই অধিকাংশ শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। শুধু শিশুরাই নয় প্রাপ্তবয়স্কদেরও পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। আমাদের দেশে সাঁতার শেখা বা শেখানোকে একটি অপ্রয়োজনীয় কাজ হিসেবে এখনো মনে করা হয়। এ ধরনের মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। শিশুরাই আগামী, তাদের রক্ষায় আরো যত্নশীল ও দায়িত্ববান হতে হবে।
এইচআর/জেআইএম