প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ১০:১৭ এএম, ২৭ অক্টোবর ২০২০

দীর্ঘদিন হয়ে এলেও প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থামছে না। আরও উদ্বেগজনক তথ্য হচ্ছে রাজধানীর ৪৫ শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। সারাদেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪ লাখ ছাড়িয়েছে। গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য বুলেটিনে ২৪ ঘণ্টায় ১৫ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প কিছু নেই।

বর্তমানে দেশের মানুষের মধ্যে করোনার প্রতিরোধের প্রস্তুতির বিষয় হারিয়ে যাচ্ছে। করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কবে আসবে তা অনিশ্চিত। সুতরাং মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাই করোনাভাইরাস সংক্রমণমুক্ত থাকার সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা। প্রয়োজনে 'নো মাস্ক, নো সার্ভিস' পন্থা অবলম্বন করতে হবে।

রাজধানীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের অনেকেরই লক্ষণ বা উপসর্গ ছিল না। অভিজাত শ্রেণি থেকে বস্তির বাসিন্দা নারী ও পুরুষ সব বয়সের মানুষই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। সুতরাং কার করোনা আছে কার নেই সেদিকে খেয়াল না করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চর্চা ও অভ্যাস অব্যাহত রাখতে হবে। জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কষ্টসাধ্য হবে।

সম্প্রতি ইউএসএইডের সহায়তায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) ও আইসিসিডিআরবি কর্তৃক যৌথভাবে পরিচালিত ‘প্রিভিলেন্স, সেরোসার্ভিল্যান্স ও জেনোমিক ইপিডিমিওলজি অব কোভিড-১৯ ইন ঢাকা’ শীর্ষক জরিপ প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে বক্তারা আগামী দিনগুলোতে করণীয় সম্পর্কে সতকর্তামূলক উপর্যুক্ত কথা বলেন।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর ৪৫ শতাংশ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তদের ২৪ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি। গত জুলাই পর্যন্ত অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় এসব তথ্য পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকা শহরের বস্তির প্রায় তিন-চতুর্থাংশ মানুষ ইতোমধ্যে সংক্রমিত হয়েছে। করোনার কোনো লক্ষণ ছিল না এমন ৪৫ শতাংশ নগরবাসী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে পরীক্ষায় ধরা পড়েছে।

গবেষণার জন্য ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্য থেকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে ২৫টি ওয়ার্ড বেছে নেওয়া হয়। প্রতি ওয়ার্ড থেকে একটি মহল্লা বাছাই করা হয়। প্রতি মহল্লা থেকে ১২০টি খানা জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া আটটি বস্তিকে এ জরিপে যুক্ত করা হয়। ঢাকা শহরের সাধারণ খানার নমুনা সংগ্রহ করা হয় মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য জুলাই পর্যন্ত। বস্তির মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয় মধ্য জুলাই থেকে আগস্টের শেষ পর্যন্ত।

বাস্তবতা হচ্ছে, সারাবিশ্বে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। ফ্রান্সে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, দেশ থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ না গেলেও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। শপিংমল, রাস্তাঘাট, অফিস-আদালত সর্বত্র একই অবস্থা। বিশেষ করে পাবলিক পরিবহন চলছে যাচ্ছেতাই অবস্থায়। যাত্রী, পরিবহন শ্রমিক কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে দায়িত্বশীল নন। মুখে মাস্ক নেই। জীবাণুনাশক ছিটানোরও কোনো ব্যবস্থা নেই। আর সিটিংয়ের নামে চিটিংতো চলছেই। কাজেই স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে ভোগান্তির কোনো শেষ থাকবে না। এজন্য প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে।

এইচআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।