জনপ্রত্যাশার মানবিক পুলিশ কবে?
সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান উদ্দিনের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। পুলিশ হচ্ছে সরাসরি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। তার কোনো সদস্য যদি হত্যাকাণ্ডের মত গুরুতর অপরাধে যুক্ত হয় এরচয়ে ভয়াবহ আর কিছু হতে পারে না। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আমরা আশা করবো ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা এবং পুলিশের ভাবমূর্তি রক্ষায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত শনিবার (১০ অক্টোবর) মধ্যরাতে রায়হানকে তুলে নিয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করে পরিবার। সকালে তিনি মারা যান। নির্যাতনের সময় এক পুলিশ সদস্যের মুঠোফোন থেকে রায়হানের পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে টাকা চাওয়া হয়। পরিবারের সদস্যরা সকালে ফাঁড়ি থেকে হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের মরদেহ শনাক্ত করেন।
ঘটনার শুরুতে ওই ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা ছিনতাইকারী সন্দেহে নগরের কাষ্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হয়েছেন বলে প্রচার করেন। কিন্তু গণপিটুনির স্থান হিসেবে যে কাষ্টঘর এলাকার কথা বলেছিল পুলিশ, সেখানে সিটি কর্পোরেশনের বসানো সিসিটিভি ক্যামেরায় ওই সময়ে এমন কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।
রোববার (১১ অক্টোবর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে পুলিশ সদস্যরা নির্যাতন করে তার স্বামীকে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ এনে মামলা করেন। এদিকে সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান উদ্দিনের মরদেহ পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
ইংরেজি POLICE শব্দের বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায়- P – Polite, O – Obedient, L – Loyel, I – Inteligent, C – Courageous, E – Efficient। এই বহুগুণে গুণান্বিত মানবিক পুলিশই মানুষ জন দেখতে চায়। পুলিশের কাজ হচ্ছে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা। মানুষের জানমাল রক্ষায় তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে এটিই কাম্য। দিন দিন পুলিশের কর্মপরিধি বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে পুলিশের সক্ষমতাও। পুলিশ জননন্দিত কাজ করবে-এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির আকবরের মত পুলিশ সদস্যদরা বাহিনীর কলঙ্ক। সর্ষের ভিতর ভূত তাড়াতে হবে। একটি স্বাধীন দেশের পুলিশ বাহিনী জনবান্ধব হবে- এটি একটি সাধারণ প্রত্যাশা।
এইচআর/জেআইএম