নষ্টদের হাত থেকে রেহাই দিন
আমাদের সবচেয়ে আবেগের জায়গা মুক্তিযুদ্ধ। আবেগের জোরেই জাতি এক হ্যামিলিওনের বাঁশির সুর শুনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল শক্তিশালি পাকিস্তানি হানাদারের উপরে। সে ইতিহাস নাই বা বললাম কিন্তু ভুলি কিভাবে?
লাল রঙ্গা ইতিহাস এর গায়ে কালি লাগালে রক্তের আবেগ তো এটু নাড়া দেয়ই। এড়াতে পারি না কোনোভাবেই। আমাদের অহংকার , আমাদের সম্পদ আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা। এক একজন মুক্তিযোদ্ধা এক আকাশের সমান উঁচু। চাইলেও ছোঁয়া যায় না। তবে তাদেরও ছায়া পড়ে মাটিতে।চাইলেও ছোঁয়া যায় না সে উচ্চতা। তাদের উচ্চ শির। হ্যাঁ, তেমনই হবার কথা!
বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দল। সোজা কথায় আমরা নতুন প্রজন্ম তাদের ভোট দেই ওই বিবেচনাটুকু করেই। ভাবি অন্তত ইতিহাস এর সবচেয়ে মূল্যবান অধ্যায় অন্য সব দলের তুলনায় তাদের হাতে কিছুটা হলেও সুরক্ষিত থাকবে, তারা বিভিন্ন সময় এ আশার বাণী শোনায় আমাদের।আমরা আশ্বস্ত হই।
এবারও আমরা আমাদের বিজয় দিবষ উদযাপন করলাম মহা আনন্দ নিয়ে। বিজয় তো আনন্দেরই। হঠাৎ করে কানে এল এক যোদ্ধার লাঞ্ছিত হবার খবর। না, একজন না..। তালিকা নাকি আরো দীর্ঘ। হুম, আমরা বিশ্বাসঘাতক জাতি বটে! আমরা মানির মান রাখি না। আমরা অযোগ্য কে সম্মান দেই শুধু তার ক্ষমতার দাপটের কারণে।
আমরা ক্ষমতার জোরে ইতিহাস পাল্টাই। ইতিহাসের নায়কদের মেরে ফেলি জীবিত অবস্থায়ই বহুবার! অথচ তারা এ জীবন উৎসর্গ করেছিল আমাদের মুক্তির জন্য। আমাদের সমাজে টিকে থাকে তেলবাজরা। নীরবে কাজ করা কর্মিকে আমরা শুধু শোষণ করি। তার ঘামে, শ্রমে আমরা উন্নত হই। হই?
কিভাবে কোন স্বার্থের কারণে আমাদের এতটা নৈতিক স্খলন ঘটতে পারে? যোদ্ধারা তো আমাদের সম্পদ। তারা তো কোন দলের না, মতের না।তারা আমাদের। তারা কোন বাসদ নেত্রীর বাবা নন। আমাদের কোন ভুলের কারণে যদি তাদের অসম্মান হয় তার শাস্তি যেন আমরা মাথা পেতে নিতে শিখি। পাপ কে বাড়তে না দেই। লাঞ্ছিতের অভিশাপ বড় ভয়ংকর!
হে রাষ্ট্র আমাদের নায়কদের খলনায়ক বানাবেন না। নষ্টদের হাত থেকে রেহাই দিন আমাদের।
লেখক : শিক্ষক।
এইচআর/জেআইএম