জঙ্গির সর্বোচ্চ শাস্তি হোক

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ১০:০০ এএম, ২৮ নভেম্বর ২০১৯

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার সাত আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বুধবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন, আসলাম হোসেন র‌্যাশ, মো. হাদিসুর রহমান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, মো. আব্দুল সবুর খান, শরিফুল ইসলাম খালেক ও মামুনুর রশীদ রিপন। দেশে জঙ্গিবাদের বিস্তার রোধ ও জঙ্গিবাদ দমনে এই রায় একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। এখনো অনেক আইনি ধাপ বাকি আছে। সেগুলো পার হয়ে জঙ্গিদের ফাঁসি কার্যকর হবে বলে আশা করছেন মানুষজন।

মামলা দায়ের করার পর ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক হুমায়ুন কবির। একই বছর ২৬ নভেম্বর ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। অবশেষে কাঙ্খিত রায় এলো।

সে রাতে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। হামলার প্রাথমিক প্রতিরোধে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তাও। পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্টে’র মধ্য দিয়ে সঙ্কটের অবসান ঘটে। রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলার পর দেশব্যাপী জঙ্গিবাদবিরোধী একটি বাতাবরণ তৈরি হয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের মুখে বেরিয়ে আসে একের পর এক জঙ্গি আস্তানা। ধরা পড়ে অনেক বিপথগামী। এ অবস্থায় জঙ্গিবাদ দমনে অনেকটা সাফল্য এসেছে। কিন্তু এখনো সমস্যা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। ফলে জঙ্গি দমনে স্বস্তি এলেও শঙ্কা কাটেনি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে জঙ্গিমুক্ত করতে পারলেই হলি আর্টিসান হামলার ক্ষত কিছুটা হলেও প্রশমন হবে।

জঙ্গিবাদের সমস্যা থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়। বৈশ্বিক এই সমস্যা নিরসনে জিরো টলারেন্স দেখাচ্ছে সরকার। এ কারণে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সাফল্য দেখাচ্ছে। কিন্তু পুরোপুরি জঙ্গি নিপাত করা যায়নি। হলি আর্টিসান মামলার রায় হয়েছে এটি আশার কথা। এই নারকীয় ঘটনার পেছনে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। জঙ্গিবাদের পেছনে রয়েছে দেশি বিদেশি নানাচক্রও। ফাঁসির দণ্ড পাওয়া একজনের মাথায় আইএসের টুপি থাকা নিয়েও জোরালো প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

জঙ্গিদের অর্থের উৎসব বন্ধ করা জরুরি। বন্ধ করতে হবে অস্ত্রের সরবরাহও। জঙ্গিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন আরো জোরদার করাটাও এখন সময়ের দাবি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বাড়াতে হবে এটা ঠিক কিন্তু জঙ্গিবাদ শুধু আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা নয়। তাই প্রয়োজন সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিরোধ। অভিযানে গিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সে ব্যাপারে আরো সতর্ক থাকতে হবে। সক্ষমতা বাড়াতে হবে আরো।

দেখা যাচ্ছে গোটা পরিবারই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যাচ্ছে। নারী ও শিশুরাও জঙ্গিবাদের অভিশাপে জড়িয়ে যাচ্ছে পরিবারের কারণে। ধনাঢ্য পরিবারের পাশাপাশি দরিদ্র ও অসহায়দের ভেড়ানো হচ্ছে জঙ্গিবাদে। এ ব্যাপারে গভীর চিন্তাভাবনা করতে হবে। জঙ্গিতৎপরতা নজরে এলেই সেটি বন্ধে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।

সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। জঙ্গিবাদ সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়াক এটা কখনো কাম্য হতে পারে না। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। কারণ জঙ্গিবাদ উন্নয়ন ও প্রগতির অন্তরায়। এর অভিশাপ থেকে কেউ মুক্ত নয়। তাই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যার যার অবস্থান থেকে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

এইচআর/জেআইএম

সে রাতে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। হামলার প্রাথমিক প্রতিরোধে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তাও। পরদিন সকালে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্টে’র মধ্য দিয়ে সঙ্কটের অবসান ঘটে। রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলার পর দেশব্যাপী জঙ্গিবাদবিরোধী একটি বাতাবরণ তৈরি হয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের মুখে বেরিয়ে আসে একের পর এক জঙ্গি আস্তানা। ধরা পড়ে অনেক বিপথগামী। এ অবস্থায় জঙ্গিবাদ দমনে অনেকটা সাফল্য এসেছে। কিন্তু এখনো সমস্যা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। ফলে জঙ্গি দমনে স্বস্তি এলেও শঙ্কা কাটেনি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে জঙ্গিমুক্ত করতে পারলেই হলি আর্টিসান হামলার ক্ষত কিছুটা হলেও প্রশমন হবে।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।