অভিশাপ মানুষরূপী হায়েনাদের

সুমনা খান
সুমনা খান সুমনা খান
প্রকাশিত: ১০:২৭ এএম, ১৮ অক্টোবর ২০১৯

আজ ফুলের জন্মদিন! ধানমন্ডির বত্রিশ নম্বর বাড়িতে আজ থেকে পঞ্চান্ন বছর আগে ফুটেছিল এ ফুল। শেখ রাসেল! বাবার দেয়া নাম। শেখ মুজিব যার বাবা! রাসেল বঙ্গবন্ধুর সর্বকনিষ্ঠ পুত্র। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাত কেড়ে নেয় তাকে। তখন কতই বা বয়স তার, মাত্র দশ। দুরন্ত দশ! রাজধানীর ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।

সেদিন ভোররাতে একদল বিপথগামী সেনাকর্মকর্তা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের উপস্থিত সকল সদস্যকে হত্যা করে। বাঙালি জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কময় দিন। দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বাঁচেনি রাসেল। বাঁচতে দেয়নি হায়েনার দল।

কিছু বিশ্বস্ত কর্মচারী চেষ্টা করেছিল ছোট্ট রাসেলকে বাঁচাতে। লুকিয়ে রেখেছিল তাকে, কিন্তু হায়েনাদের চোখ এড়াতে পারেনি রাসেল। খুনিহৃদয়ে কি মায়ার জন্ম হয়! ছোট রাসেল তার চোখ দিয়ে দেখেছে, মানুষের নির্মমতা! মা-বাবার মৃতদেহ, ভাইয়ের রক্তাক্ত লাশ, পরিচিত জনের নিথর দেহ...

কেমন লেগেছে তখন রাসেলের? অতটুকু প্রাণ কীভাবে সামলেছে ওই মুহূর্ত! রমা বলেছিল, ‘তোমাকে ওরা কিছু করবে না’। কথা রাখেনি কেউ। রাসেল চেয়েছিল মায়ের কাছে যেতে। বলেছিল, ‘আমি মায়ের কাছে যাব’। দেখেছে মৃত মাকে! পরে ভীতসন্ত্রস্ত রাসেল চেয়েছে হাসু আপার (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) কাছে যেতে।

মায়ের কাছে নেয়ার কথা বলে বুলেটের আঘাতে ঝাঁঝরা করে দেয়া হয় অতটুকু রাসেলের বুক! আর কোনো সকাল হওয়া দেখেনি রাসেল! আর কখনো হাসেনি রাসেল! কী দোষ রাসেলের? কোন রাজনীতির শিকার রাসেল? রাসেলের তো তখন তার লাল-নীল সাইকেলে করে ঘুরে বেড়ানোর বয়স। প্রজাপতির পিছে ছুটে চলা বয়স। কালো রাজনীতি সব কেড়ে নিল!

বত্রিশ নম্বর বাড়ির প্রজাপতিরা আজও হয়তো খুঁজে ফেরে সেই ছোট ফুলের সুবাস, রাসেলকে। প্রিয় রাসেল... কেউ তোমাকে পায় না, তুমি মায়ের কাছে, বাবার কাছে! ভালো থেকো ফুল, আজ তো তোমার দিন।

এইচআর/বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।