এনআরসি ঝড় যেন বাংলাদেশে না আসে
বড় ঝড় একদিনে হয় না। আস্তে আস্তে ঝড় শক্তি সঞ্চয় করে এবং আঘাত হানে। তেমনি এক ঝড় উঠেছে ভারতের আসামে। ঝড়টি সৃষ্টি হয়েছে আগেই। ঝড়টি এখন শক্তি সঞ্চয় করছে, অল্প স্বল্প আঘাতও হানছে। চূড়ান্ত আঘাত হানার জন্য আরেকটু সময় হয়তো লাগবে। ভারতে সৃষ্ট, ভারতীয়দের সৃষ্ট ঝড় ভারতেই আঘাত হানতে পারে। তেমন হলে অসুবিধা নেই। ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় ভারতই সামলাবে। তবে আমাদের শঙ্কা হলো, এই ঝড় প্রবলভাবে বাংলাদেশেও আঘাত হানতে পারে। সেই শঙ্কা থেকেই যত উদ্বেগ।
আসলে আমরা ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পাই। চুন খেয়ে এমনভাবে মুখ পুড়িয়েছি, দই দেখলেও ভয়ে কুকড়ে যাই। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আসামের মোট জনসংখ্যা ৩ কোটি ৩০ লাখ ১৭ হাজার ৬৬১ জন। এর মধ্যে ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জন ভারতের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। কিন্তু ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জনের ঠাঁই হয়নি এনআরসিতে মানে নাগরিক তালিকায়। ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের সাম্প্রদায়িক সিন্ধান্তে একদিনেই বিশ্বে ১৯ লাখের বেশি রাষ্ট্রহীন মানুষের সৃষ্টি হয়েছে। এখন এই মানুষগুলোর কী হবে?
এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে পেছনটা একটু ঘুরে আসা যাক। এনআরসি বা নাগরিক তালিকার বিষয়টি অনেক পুরোনো। আসামে অসমীয়া আর বাঙালিদের মধ্যকার বিরোধও ভারতের সমান বয়সী। ভারতের স্বাধীনতার চার বছর পর ১৯৫১ সালে প্রথম নাগরিক তালিকা প্রকাশ করা হয়। তবে আশির দশকে আসামে বাঙ্গাল খেদাও আন্দোলনের সময় আবার সামনে আসে বিয়য়টি। তখন ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় বহু বাঙালি মুসলমান প্রাণ হারিয়েছিলেন। তখন একটি চুক্তিও হয়, যাতে নতুন করে নাগরিক তালিকা করার কথা ছিল। কিন্তু কোনো সরকারই বিষয়টি নিয়ে এগোয়নি। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর আরো অনেক সামস্প্রদায়িক ইস্যুর মত আসামের নাগরিক তালিকা হালনাগাদের বিষয়টিও সামনে আসে। ২০০৯ সালের জুলাইয়ে আসাম পাবলিক ওয়ার্কস নামে একটি এনজিও সুপ্রিম কোর্টে এনআরসি হালগানাগের আবেদন করে। ২০১৩ সালে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত এনআরসি হালনাগাদের নির্দেশ দেয়। আদালতের সেই নির্দেশকে পুঁজি করেই এগিয়ে যায় নাগরিক তালিকা হালনাগাদের কাজ। যার শেষ পরিণতি হলো ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন রাষ্ট্রহীন মানুষ।
বিজেপি সরকার বারবার বলছে, এটা তাদের সিদ্ধান্ত নয়, তারা শুধু আদালতের সিদ্ধান্ত মান্য করছেন। নিজেদের রাজনৈতিক কু-আকাঙ্খা আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে কার্যকর করাটা গণতান্ত্রিক স্বৈরাচারের পুরোনো কৌশল। আর এটাও ভুলে গেলে চলবে না, এই এনআরসি হালনাগাদের পর্যায়ে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি ছিলেন অসমীয়া রঞ্জন গগৈ, এক পর্যায়ে তিনি প্রধান বিচারপতিও হয়েছিলেন। একজন অসমীয়া সুযোগ থাকলে বাঙালি মুসলমানদের তাড়াতে চাইবেন, এটাই স্বাভাবিক।
মজাটা হলো, আসামের নাগরিক তালিকা নিয়ে এখন অসন্তোষ সব মহলে। যারা এনআরসি হালনাগাদের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল, সেই আসাম পাবলিক ওয়ার্কসের সভাপতি অভিজিৎ শর্মা খুবই অসন্তুষ্ট। তার দাবি আসামে অনুপ্রবেশকারী বিদেশীর সংখ্যা আরো অনেক বেশি। তার দাবি এই তালিকা ত্রুটিপূর্ণ। এমনকি গতবছর খসড়া তারিকায়ও ৪০ লাখের বেশি নাগরিক বাদ পড়েছিলেন। এবার সংখ্যাটা অর্ধেকে নেমে আসাই তার অসন্তোষের কারণ। তবে সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে আছে ক্ষমতাসীন বিজেপি। ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিজেপি অসাম্প্রদায়িক ভারতকে সাম্প্রদায়িকতার নিরিখে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে। কদিন আগেই কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে একে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করা হয়েছে। আসামে নাগরিক তালিকায় বিজেপির মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাভাষী মুসলমানদের বহিরাগত হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের বহিষ্কার করা। কিন্তু ঘটনা ঘটেছে উল্টো।
চূড়ান্ত তালিকায় বাদ পড়া ১৯ লাখের বেশিরভাগাই বাংলাভাষী হিন্দু। পুরো হিতে বিপরীত ঘটনা। রাজ্য বিজেপি সরকারের দুই নাম্বার প্রভাবশালী ব্যক্তি হিমন্ত বিশ্বশর্মা, স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, এই তালিকায় তারা ভরসা রাখতে পারছেন না। তবে তালিকায় বেশিরভাগ বাংলাভাষী হিন্দু হলেও তাদের অত বিপাকে পড়তে হবে না হয়তো। কারণ বিজেপি সরকার শিগরিগরই নাগরিকত্ব আইন পাস করতে যাচ্ছে। তাতে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে যাওয়া সংখ্যালঘু মানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের কেউ ভারতে গেলে তারা নাগরিকত্ব পাবেন। বিজেপি সরকারের টার্গেট আসলে মুসলমানরা, আসামে তাদের লক্ষ্য বাঙালি মুসলমানরা। নাগরিকত্ব আইনে হিন্দুদের আবার নাগরিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে নিতে পারলে বাকি থেকে যাবে নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাওয়া মুসলমানরা। তখন তাদের বের করে দেয়া, ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা বা নানাভাবে নিপীড়ন করতে আরো সুবিধা হবে।
এবার চলুন তেদখে আসি, আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা প্রকাশের পর বাদ পড়া ১৯ লাখের বেশি মানুষের কী হবে। প্রথম কথা হলো রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়লেও এখনই তাদের বিদেশী হিসেবে চিহ্নিত করা হবে না। বাদ পড়া নাগরিকরা এখন ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আবেদন করতে পারবেন। সেখানে ন্যায়বিচার না পেলে তারা হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টেও যেতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টে হেরে গেলেই তাদের চূড়ান্তভাবে বিদেশী হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। তখন তাদের কী হবে?
এই প্রশ্নের উত্তরেও পরে আসছি। আপাতত ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের কথা শুনুন। এখন ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল আছে একশ। শিগগিরই সেটা এক হজারে উন্নীত করা হবে, যাতে বাদ পড়ারা সহজেই আবেদন করতে পারেন। আবেদন করার সময় ৬০ দিন থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে এই আবেদন করা যাবে। তবে প্রাথমিক হিসেবে বলা হচ্ছে, ফরেনার্স টাইব্যুনালে আবেদন করতে ৪০ হাজার রুপির মত খরচ হবে। আর হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে যেতে হলে খরচ আরো অনেক বাড়বে। কিন্তু বাদ পড়াদের মধ্যে বেশির ভাগই অতি দরিদ্র, দিন আনি দিন খাই দশা। তারা এত টাকা পাবে কোথায়।
রাজ্য সরকার বলছে, দরিদ্রদের তারা বিনামূল্যে আইনী সহায়তা দেবে। কিন্তু যে সরকার তাদের তাড়াতে চায়, তাদের আইনী সহায়তা নিয়ে এই দরিদ্র মানুষগুলো কতটুকু উপকৃত হবে, সেটা নিয়ে সংশয় রয়েই যায়। আর আইনী সহায়তা না হয় বিনা পয়সায় পেল, কিন্তু কাজকর্ম ফেলে ট্রাইব্যুনালে আর আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরতে হলে তো তাদের না খেয়ে মরতে হবে। তারচেয়ে বড় কথা হলো, ফরেনার্স টাইব্যুনালে যেতে হলে কিন্তু আপনাকে নৈতিকভাবে মেনে নিতে হবে আপনি আসলে ফরেনার্স। এরকম নানা সংশয়, অনিশ্চয়তা, ভয়ে ঠাসা ১৯ লাখ মানুষ। এই ১৯ লাখ মানুষের অভিশষাপ বইতে হবে বিজেপি সরকারকে।
সব বিচারে শেষ পর্যন্ত যারা বিদেশী নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত হবেন, তাদের ভবিষ্যৎ কী? প্রথম কথা হলো, তারা ভোটার থাকবেন না, নাগরিক থাকবেন না। বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ বংশানুক্রমিকভাবে ভারতে বসবাস করে আসা এই মানুষগুলো সকল নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। তাদেরকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হতে পারে। তবে বিজেপি সরকারের আলটিমেট লক্ষ্য হলো তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া। কারণ বিজেপির নীতিনির্ধারকরা বারবার আসামের নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়া মানুষগেুলোকে বাংলাদেশে থেকে যাওয়া বলে চিহ্নিত করে আসছেন।
সমস্যা হলো, নাগরিক তালিকা এমন একটি হাস্যকর ও অমানবিক বিষয় যা একজন মানুষকে এক লহমায় রাষ্ট্রহীন বানিয়ে দেয়। কারগিল যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য পদক পাওয়া অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার নামও নেই তালিকায়। এমনকি ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে অংশ নেয়া সৈনিকের সন্তান বিদেশী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। এছাড়া রাজ্যের একাধিক বিধায়কের নামও নেই নাগরিক তালিকায়। মজা হলো এই নাগরিক তালিকা এমন এক হাস্যকর বিষয়, গোটা ভারতে এখন নাগরিক তালিকা করলে কয়েক কোটি মানুষ তালিকা থেকে বাদ পড়ে যাবে। কারণ নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য যেসব ডকুমেন্ট চাওয়া হয়, দরিদ্র মানুষদের কাছে তার বেশিরভাগ থাকে না।
দিন আনি দিন খাই মানুষের কাছে, জন্ম নিবন্ধনের কোনো মূল্য নেই। ভারতের কোটি কোটি দরিদ্র মানুষের কাছে নাগরিকত্ব প্রমাণের মত পর্যাপ্ত ডকুমেন্ট পাওয়া যাবে না। আসামের নাগরিক তালিকার বাইরে থাকা মানুষের মধ্যে হিন্দুদের সংখ্যা বেশি কেন জানেন? হিন্দুরা বুঝতেই পারেননি, ভারতে তাদের কখনো এমন পরীক্ষা দিতে হবে। তাই তাদের কাছে ডকুমেন্ট কম ছিল। মুসলমানরা বরং অনেক সাবধানী। তাই তারা বরং কিছু কাগজপত্র জোগার করে রেখেছিলেন। ভারত সরকার বারবার বলছে, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কদিন আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বাংলাদেশ সফর করার সময়ও বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, আসামের নাগরিক তালিকা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে বাংলাদেশের শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু তাও বাংলাদেশের শঙ্কিত হওয়া যথেষ্ট কারণ আছে।
সরকার অভ্যন্তরীণ বিষয় বললেও রাজনৈতিকভাবে বিজেপি নেতারা বলছেন, এরা সবাই বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে গেছে। আসামের নাগরিক তালিকার ডেটলাইন ধরা হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ। মানে একাত্তর সালের ২৪ মার্চ রাত ১২টার আগে যারা ভারতে গেছেন, তারা সবাই ভারতের নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবেন। এরপরের সবাইকে তারা বলছেন অনুপ্রবেশকারী। আমি একটা কথা নিশ্চিত করেই বলতে পারি, বাংলাদেশ থেকে কেউ একাত্তরের পর আসামে অনুপ্রবেশ করে সেখানে থেকে যাওয়ার মত বোকামি করেননি। কারণ বাংলাদেশ বরাবরই আসামের চেয়ে উন্নত। কিন্তু সাবেক পূর্ব পাকিস্তান বা পূর্ব বাংলা থেকে অনেকেই আসাম গেছেন এটা ঠিক। আসামকে গড়ে তোলা, চাষবাসের উপযোগী করে গড়ে তোলার কৃতিত্ব অবশ্যই পূর্ব বাংলা বা পূর্ব পাকিস্তান থেকে যাওয়া বাংলাভাষীদের। এখন তাদেরকে তো আপনি অনুপ্রবেশকারী বলতে পারবেন না। বরং তাদের প্রতি আসামের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।
বাংলাদেশ থেকে ভাগ্য অন্বেষণে অনেকে বিভিন্ন দেশে যান, অনেকে অবৈধভাবেও যান। তবে সেটা আসাম নয়; ইউরোপ, আমেরিকা, ব্রিটেন, মধ্যপ্রাচ্য, এমনকি মালয়েশিয়াও। কিন্তু আসামে গিয়ে ভাগ্য অন্বেষণ করার কিছু নেই। ভারত যতই অভ্যন্তরীণ বিষয় বলুক, তারা চাইলেই কলমের এক খোঁচায় ১৯ লাখ মানুষকে রাষ্ট্রহীন বানিয়ে দিতে পারে না। কাশ্মীরে মুসলমানদের ওপর যে নিপীড়ন চলছে, তা কিছুতেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হতে পারে না। কোথাও মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলে, নিপীড়ন-নির্যাতন হলে বিশ্ব মানবতা প্রতিবাদ করবেই, কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
আসামের নাগরিক তালিকাকে ভারত অভ্যন্তরীন বিষয় বললেও বাংলাদেশের নিশ্চিন্তে থাকার উপায় নেই। মিয়ানমারও আশির দশকে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছিল। আর তাদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ২০১৭ সালে। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল, হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে যখন বিষয়টি ফাইনাল হবে, তখন এই রাষ্ট্রহীন মানুষগুলো কই যাবে? আমার কেন জানি মনে হয়, ভারত তাদের কৌশলে বাংলাদেশে পাঠানোর করার চেষ্টা করবে। অনেকে হয়তো ভয়ে নিজেরাই বাংলাদেশে চলে আসার চেষ্টা করবে। সীমান্তটাই এমন, এই নাগরিকদের বাংলাদেশ ছাড়া আর যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। ভারত তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় বললেও আমার ভয়ের কারণ অন্য।
বিজেপির আইনজ্ঞ সেলের সদস্য ও দলের নেতা বিবেক রেড্ডি বলেছেন, বাংলাদেশ সরকারকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এনআরসি নিয়ে যে আশ্বাস দিয়েছেন, সেটাই শেষ কথা বলে মনে করার কোনো কারণ নেই। ভবিষ্যতে অনেক কিছুই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিবেক রেড্ডীর কাছে যেটা সম্ভাবনা, আমাতের কাছে সেটাই আশঙ্কা। আজ হোক আর পাঁচ বছর পরে হোক, আমার শঙ্কা ভারত এই রাষ্ট্রহীন নাগরিকদের বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করবে। এটা করার জন্য তো তাদের এত আয়েোজন। নাই যদি পাঠাবে, তাহলে আর এনআরসি করা হলো কেন। তাই ভারতের কথায় নিশ্চিন্ত হয়ে বসে থাকার উপায় নেই বাংলাদেশের।
বাংলাদেশকে সতর্ক থাকতে হবে- রাজনৈতিকভাবে, কূটনৈতিকভাবে এবং সীমান্ত সুরক্ষায়ও নতুন করে ভাবতে হবে। জন্মের সময় থেকেই বাংলাদেশে আটকা পড়ে আছে কয়েক লাখ পাকিস্তানী। প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা এখন টেকনাফে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী ক্যাম্পে আছে। ভারত যদি তাদের নাগরিককে জোর করে বাংলাদেশী বানিয়ে ঠেলে পাঠাতে চায়, আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করতে হবে। এত চাপ নেয়ার সামর্থ্য বাংলাদেশের নাই। এনআরসি ভারতের ঝড়, ভারতই সামলাক; সেই ঝড় যেন বাংলাদেশের দিকে না আসে।
এইচআর/পিআর