প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান ও জনপ্রশাসনের কর্মদক্ষতা
সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা সচিবদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশ ও দেশের মানুষের ভালো থাকার স্বার্থে সবাই মনোযোগ দিয়ে আরও বেশি করে কাজ করবেন। তিনি বলেন, শুধু ১০টি মন্ত্রণালয়/বিভাগ কেন? আগামীতে প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে পুরস্কার দিতে চাই। পুরস্কার পাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করবেন, আশা করি। গতকাল শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোর ২০১৯ ও ২০২০ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। এ ছাড়া জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ও বিদ্যুৎ সচিব আহমদ কায়কাউস বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রসাশনের কর্মকর্তাদের আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার ফলেই দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষ অপনাদের কাজের সুফল পাচ্ছে। কর্মকর্তাদের কাজের ফলেই আমাদের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে, মাথা পিছু আয় বেড়েছে। দেশ এগিয়ে যাওয়া এবং মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়ে যাওয়ার ফলেই আজ আমরা ৫ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিতে পেরেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘ প্লান ছাড়া দেশকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব না। এ কারণে আমরা সবসময় দীর্ঘ মেয়াদি প্লান নিয়ে কাজ করছি। আগামী ২১ এবং ৪১ সালকে সামনে রেখে আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এ পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায় হলে ৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার
গ্রামের ও শহরের মধ্যে সুযোগ সুবিধার ষৈম্য কমাতে চাই। তৃণমূল পর্যায়ের মানুষকে আধুনিক সুযোগ সুবিধা দিতে চাই। এ জন্য আমরা নির্বাচনী ইশতেহারে আমার গ্রাম আমার শহর কর্মসূচি ঘোষণা করেছি।
জনপ্রশাসনের দক্ষতার উপরই একটি দেশের সার্বিক উন্নতি নির্ভর করে। সরকারি কর্মকর্তারা দেশের সেবক। জনগণের অর্থ থেকেই তাদের বেতন-ভাতা ও যাবতীয় খরচ মেটানো হয়। তাই সরকারি কর্মচারীদের তাদের দায়িত্ব পালনকালে সর্বদা নিরপেক্ষ হতে হবে। দেশে এমন একটি সুস্থ পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে, যাতে প্রতিটি সরকারি কর্মকর্তা দেশপ্রেম, ত্যাগ ও সেবার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে পারেন। তাদের অবশ্যই ঔপনিবেশিক আমলের ধ্যান-ধারণা বিসর্জন দিতে হবে। সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে জনকল্যাণে কাজ করতে হবে- এ লক্ষ্য থেকে তাদের এতটুকু বিচ্যুত হলে চলবে না।
জনগণের দ্বারপ্রান্তে সেবা পৌঁছে দেওয়া এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, দ্রব্যমূল্য, ভূমি ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন অনেকাংশে নির্ভর করে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ের ওপর। প্রত্যেকে তার নিজ নিজ দায়িত্বের মধ্যে থেকে কাজ করলে কোনো সমস্যা হয় না। সীমা অতিক্রম করলেই দেখা দেয় সমস্যা। এছাড়া প্রশাসনিক অদক্ষতার কারণেও অনেক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সময়মতো বাস্তবায়িত হয় না। এমনকি অনেক সময় উন্নয়ন বরাদ্দ ফেরত আসার ঘটনাও ঘটে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। সবার আগে দেশের স্বার্থকে স্থান দিলে যে কেনো সংকট উত্তরণ সহজ হয়। সংশ্লিষ্ট সবাইকে জনপ্রত্যাশার এই বিষয়টি মনে রাখতে হবে।
এইচআর/জেআইএম