শিক্ষক যখন ধর্ষক!

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ১০:২০ এএম, ০৪ জুলাই ২০১৯

এটা খুবই উদ্বেগের বিষয় যে ধর্ষণের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেই চলেছে। এবার নারায়ণগঞ্জে নানা কৌশলে ফাঁদে ফেলে অন্তত ২০ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও তাতে সহয়াতার অভিযোগে আটক হলেন দুই শিক্ষক। মামলার প্রেক্ষিতে আটক করা হয় তাদের। তাদের বিরুদ্ধে দুটি করে মামলা হয়েছে।

ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নিযার্তন দমন আইনে একজন অভিভাবক একটি এবং পর্নগ্রাফি আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে র‌্যাব ১১-এর ডিএডি আব্দুল আজিজ আরেকটি মামলা করেন। শুক্রবার বিকেলে তারা এসব মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার মিজমিজি এলাকার অক্সফোর্ড হাইস্কুল থেকে সহকারী শিক্ষক আশরাফুল আরিফ ও প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। উভয় মামলায় তাদের আসামি করা হয়।

মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে, শিক্ষক আরিফুল বিদ্যালয়ের ২০ থেকে ২৫ জনকে ছাত্রীকে পরীক্ষায় কম নম্বর দেওয়া ও ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে ও ফুসলিয়ে ধর্ষণ করেছেন। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে সেগুলো দিয়ে ব্লাকমেইলিং করে পুনরায় ধর্ষণ করতেন। আর এতে মদদ দেওয়ার অভিযোগে প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে।

র‌্যাব-১১ এর জ্যেষ্ঠ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন বলেন, “আরিফুল ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত অক্সফোর্ড স্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং স্কুলের বাইরের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন কৌশলে ফাঁদে ফেলে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে আমরা প্রমাণ পেয়েছি। পঞ্চম শ্রেণি থেকে শুরু দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী পর্যন্ত তার যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছেন। আরিফুল ইসলামের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপসহ বিভিন্ন ডিভাইস জব্দ করে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রীকে ধর্ষণের ছবি এবং আপত্তিকর ছবি পাওয়া গেছে। তাকে মদদ দেওয়ার অভিযোগে প্রধান শিক্ষককেও আটক করা হয়েছে।

ধর্ষণ নারীর বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্য অপরাধ। তাই মামলাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের শাস্তি না হলে তার পুনরাবৃত্তি হতেই থাকবে। একটি দুর্ভাগ্যজনক প্রবণতা হচ্ছে অনেক সময় অপরাধীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যায়। তাছাড়া নির্যাতিতাকেও নানাভাবে নাজেহাল করা হয়। ধর্ষণের বিচার প্রক্রিয়াটিও অত্যন্ত জটিল। এখানে নির্যাতিতাকে আক্ষরিক অর্থেই নানা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সমাজ থেকে এই অন্ধকার দূর করতে হবে।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে প্রযুক্তিকে অপব্যবহার করে ব্লাকমেইলিং করে ধর্ষণ করা। দুই শিক্ষকও এই অপকর্মটি করেছেন। এরা শিক্ষক নামের কলঙ্ক। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে পারে।

বিভিন্ন দিক থেকেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে, মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে। এসব উন্নতি বিফলে যাবে যদি নারী নির্যাতন বন্ধ করা না যায়। বিশেষ করে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধের শাস্তি হতেই হবে। অপরাধীরা যতোই প্রভাবশালী হোক না কেন।

এইচআর/জেআইএম

বিভিন্ন দিক থেকেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে, মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে। এসব উন্নতি বিফলে যাবে যদি নারী নির্যাতন বন্ধ করা না যায়। বিশেষ করে ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য অপরাধের শাস্তি হতেই হবে। অপরাধীরা যতোই প্রভাবশালী হোক না কেন।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।