টিকিটপ্রাপ্তি নিশ্চিত করুন

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৮:৪০ এএম, ০৮ আগস্ট ২০১৮

ঈদে নাড়ির টানে যারা বাড়ি যান তাদের কাছে খুব কাঙ্খিত বিষয় হচ্ছে বাস, লঞ্চ, বা ট্রেনের টিকিটের সহজ প্রাপ্তি। ঘরমুখো মানুষের এ স্বাভাবিক প্রত্যাশা থাকলেও প্রাপ্তির বেলায় এর বিস্তর ব্যবধান ঘটে। অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু না হতেই পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। রাতভর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও টিকিট পাওয়া যায় না। অথচ বেশি দামে সেই টিকিটই কালোবাজারিতে পাওয়া যায়। ফি বছর এ অবস্থা চললেও এ বছর তা থেকে উত্তরণ ঘটবে এমনটি প্রত্যাশিত। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আজ ৮ আগস্ট থেকে। এদিন মিলবে ১৭ আগস্টের টিকিট। আর ফিরতি টিকিট বিক্রি কার্যক্রম শুরু হবে ১৫ আগস্ট থেকে। ৯ আগস্ট বিক্রি হবে ১৮ আগস্টের টিকিট। এভাবে ১০, ১১ ও ১২ আগস্ট পর্যায়ক্রমে টিকিট মিলবে ১৯, ২০ এবং ২১ আগস্টের টিকিট। এই দিনগুলোতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সকাল ৮ টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হবে।

একইভাবে ১৫ আগস্ট থেকে শুরু হবে ঈদ ফেরত যাত্রীদের জন্য ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি। ঈদ ফেরত অগ্রিম টিকিট রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিহাট স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হবে। ফিরতি টিকিট ১৫ আগস্টে পাওয়ায়া যাবে ২৪ আগস্টের টিকিট। একইভাবে ১৬, ১৭, ১৮ ও ১৯ আগস্ট যথাক্রমে পাওয়া যাবে ২৫, ২৬, ২৭, ২৮ আগস্টের টিকিট। এদিকে গত রোববার (৫ আগস্ট) থেকে বাসের অগ্রিম টিকিট শুরু হয়েছে।

অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা যায় বিক্রির শুরুর দিনই টিকিট সংকট দেখা দেয়। ট্রেন, লঞ্চ, বাস সবক্ষেত্রেই একই অভিযোগ। ট্রেনে কোটা পদ্ধতির কারণে সাধারণ যাত্রীরা বঞ্চিত হয়। অভিযোগ রয়েছে, এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভিআইপিসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বরাদ্দ দেওয়া টিকিট নিজেরাই কিনে নিয়ে উচ্চ দামে তা যাত্রীদের কাছে বিক্রি করে। এছাড়া টিকিট কালোবাজারির অভিযোগ তো অনেক পুরনো। দেখা যায় সারারাত টিকিটের জন্য অপেক্ষা করেও যাত্রীরা টিকিট পায় না। আবার বেশি মূল্য দিলেই ভিন্ন পথে তা পাওয়া যায়। এই কালোবাজারি বন্ধ করতে হবে। যাত্রীরা যাতে সহজেই টিকিট পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে এ জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালাতে হবে। ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধ করতে হবে। এছাড়া সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণ রেললাইনের ব্যাপারে। এবার বন্যায় রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্রুত সেগুলো রেল চলাচলের উপযোগী করতে হবে। ফিটনেসবিহীন লঞ্চ যাতে চলতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করাও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এক্ষেত্রে যাত্রী সচেতনতাও অত্যন্ত জরুরি।

দূরপাল্লার বাসগুলো যাতে ঈদের সময় যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারে সে ব্যাপারেও কর্তৃপক্ষকে নজরদারি চালাতে হবে। অননুমোদিত বাস চলাচলের ব্যাপারেও দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ ঈদে মুনাফার লোভে লোকাল বাসও হাইওয়েতে চলে। এগুলোর ফিটনেস না থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই রাস্তায় বিকল হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে রাস্তা থেকে নষ্ট বাস সরানোর তেমন কোনো ব্যবস্থা থাকে না। এ কারণে দেখা দেয় তীব্র যানজট।

বিপুল সংখ্যক মানুষ যারা মাটির টানে প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদ করতে গ্রামে যাবেন তাদের আনন্দ যেন যাত্রাপথের ভোগান্তিতে নষ্ট না হয়ে যায় সেইদিকে নজর দেওয়াই এখনকার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। এ ব্যাপারে কোনো উদাসীনতা কাম্য নয়।

এইচআর/পিআর

বিপুল সংখ্যক মানুষ যারা মাটির টানে প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদ করতে গ্রামে যাবেন তাদের আনন্দ যেন যাত্রাপথের ভোগান্তিতে নষ্ট না হয়ে যায় সেইদিকে নজর দেওয়াই এখনকার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। এ ব্যাপারে কোনো উদাসীনতা কাম্য নয়

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।