দুর্জনের ছলের অভাব হয় না!

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ১০:০৪ এএম, ০৫ মে ২০১৮

 

হঠাৎ করেই পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। তিনদিনের ব্যবধানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিতে আট থেকে ১০ টাকা। ফলে এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতাকে এখন গুণতে হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। মূল্যবৃদ্ধির জন্য নানা অজুহাত দেখানো হচ্ছে। কিন্তু পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদও রয়েছে। তাই দাম বাড়ার বিষয়টি কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। এমনিতেই দ্রব্যমূল্য নাগালের বাইরে, তার ওপর পেঁয়াজের দাম বাড়ায় যেন বাজ পড়ছে ভোক্তাদের মাথায়। প্রশ্ন হচ্ছে, এগুলো দেখার কি কেউ নেই?

ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানিমূল্য বেশি, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম, এরকম নানান অজুহাতে আড়ত ও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে, যার কারণে খুচরা দামও বেড়েছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, সরবরাহ বেশি থাকা সত্ত্বেও বাড়তি দাম নিচ্ছে বিক্রেতারা। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পবিত্র মাস রমজান আসছে। রোজা আসলেই একশ্রেণির অসাধু মুনাফালোভী মজুতদার ও ব্যবসায়ীরা কৌশলে পণ্যের দাম বাড়ায়। তা না হলে তিনদিনের ব্যবধানে কেন পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা বাড়বে?

কথায় আছে, দুর্জনের ছলের অভাব হয় না। ব্যবসায়ীদের আমরা দুর্জন বলতে চাই না। আর সব ব্যবসায়ীর দায়-দায়িত্ব এবং নীতিনৈতিকতাও একই পাল্লায় মাপা ঠিক হবে না। তবে একশ্রেণির মুনাফালোভী ব্যবসায়ীর লাভ ও লোভের কারণেই যে পেঁয়াজের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। সামনে রমজান মাস। এই মাসে পেঁয়াজের ব্যবহার বেড়ে যায়। আর এই সুযোগ নেয় মুনাফালোভী সিন্ডিকেট। মুনাফালোভী এই মানসিকতা কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা সরকারের হাতে খুব একটা নেই। তারপরও টিসিবিকে কার্যকর করে একটি প্যারালাল সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রেখে পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা যায়। বলা হচ্ছে, পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। এরপরও পেঁয়াজের দাম হঠাৎ করেই বাড়লো কেন? এক্ষেত্রে কী কারো কোনো দায়-দায়িত্ব নেই?

যে কোনো উসিলায় পণ্য-দ্রব্যের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে আইন-কানুন নীতি-নৈতিকতার কোনো বালাই নেই এখানে। ভোক্তাদের পকেট কাটা হবে আর সরকার শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবে এটা হতে পারে না। বাজারে নজরদারি বাড়ানো এবং সিন্ডিকেটধারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। অবিলম্বে পেঁয়াজের মূল্য জনসাধারণের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসতে যার যা করণীয় রয়েছে সেটি করতে হবে। এজন্য সরকার-ব্যবসায়ী সব পক্ষকেই এগিয়ে আসতে হবে। ত্যাগ করতে হবে মুনাফালোভী মানসিকতা।

এইচআর/এমএস

‘একশ্রেণির মুনাফালোভী ব্যবসায়ীর লাভ ও লোভের কারণেই যে পেঁয়াজের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি সেটি বলার অপেক্ষা রাখে না। সামনে রমজান মাস। এই মাসে পেঁয়াজের ব্যবহার বেড়ে যায়। আর এই সুযোগ নেয় মুনাফালোভী সিন্ডিকেট। মুনাফালোভী এই মানসিকতা কিছুতেই কাম্য হতে পারে না।’

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।