স্বাধীনতা মানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব

ফরিদুন্নাহার লাইলী
ফরিদুন্নাহার লাইলী ফরিদুন্নাহার লাইলী , রাজনীতিক, সাবেক সংসদ সদস্য
প্রকাশিত: ১০:১৪ এএম, ৩০ মার্চ ২০১৮

 

পাকিস্তান ও ভারতের মতো আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পাইনি। ২৩ বছরের আন্দোলন সংগ্রাম এবং একাত্তরের নয় মাস সশস্ত্র যুদ্ধে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেই বিজয় ছিনিয়ে আনা হয়েছে।

বাংলার অনেক সূর্যসন্তানই হয়তো বাঙালি জাতির শৃঙ্খল মোচনের স্বপ্ন দেখেছেন। কিন্তু সেই স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করেছেন বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, ইতিহাসের মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

শেখ মুজিবুর রহমান ইতিহাসে এক অমর নাম। তিনি একজন ব্যতিক্রমধর্মী নেতা। তাঁর মধ্যে যত রাজনৈতিক গুণাবলি ছিল, বিশ্ব রাজনীতিতে কোনো বড় নেতার মধ্যেই হয়তো এককভাবে এত গুণের সমাহার দেখা যায় না। শত বছরের উত্থান-পতনের ইতিহাসে কিউবার কিংবদন্তি নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো যথার্থই বলেছিলেন 'আমি হিমালয় দেখিনি। কিন্তু আমি শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব এবং সাহসে এই মানুষটি হিমালয়ের সমান। তাই আমি মুজিবকে দেখে হিমালয় দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছি।'

শেখ মুজিবের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে ১৯৬৬ সাল থেকেই। বাঙালিদের কাছে তিনি সবচেয়ে বড় নেতা হিসেবে গৃহীত হয়েছিলেন। কারণ, তারা জানতেন যে, একমাত্র তিনিই পারবেন তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে। তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাঙালিদের স্বার্থ রক্ষাকারী দল হিসেবে পরিচিত হয়।

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণটি ছিল মাত্র উনিশ মিনিটের। কিন্তু এই সময়টুকুর মধ্যে তাঁর মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি একই সঙ্গে আপোসের কথা বলেন, দাবি উত্থাপন করেন এবং স্বাধীনতার ঘোষণাও দেন। তিনি জনগণকে আহ্বান জানান, ঘরে ঘরে দুর্গ তৈরি করতে। দরকার হলে যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে। তিনি গ্রেফতার হতে পারেন- এটাও তিনি আশংকা করেছিলেন।

তাই তিনি বলেন যে- ‘তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে…-আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি’। তিনি ভাষণ শেষ করেন আসল কথাটি দিয়ে, ‘৭ কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না।

আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউই আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। …মনে রাখবা, রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেবো। এই দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।’

যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট নিক্সন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হেনরি কিসিঞ্জার মুজিব ও বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছেন, কয়েক বছর আগে সেই দেশের অবমুক্ত গোপন দলিলে স্বীকার করা হয়েছে- শেখ মুজিব ২৫ মার্চ রাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্বে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন।

যতদিন এই বিশ্বে মানুষের অস্তিত্ব থাকবে, বাঙালি জাতি বেঁচে থাকবে ততদিন শেখ মুজিবের নাম শ্রদ্ধাভরে উচ্চারিত হবে। শেখ মুজিবের নেতৃত্বেই যে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, মুজিবই যে পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ জন্মের ঐতিহাসিক কাজটি সম্পন্ন করেছেন, তা আজ বিশ্ব ইতিহাসের অংশ।

তাইতো দুই বাংলার বিখ্যাত কবি অন্নদাশংকর রায় যথার্থই বলেছেন, 'যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা গৌরি যমুনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।'

লেখক : কৃষি ও সমবায় সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং সাবেক সংসদ সদস্য।

এইচআর/এমএস

‘দুই বাংলার বিখ্যাত কবি অন্নদাশংকর রায় যথার্থই বলেছেন, 'যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা গৌরি যমুনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।'

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।