ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ান
রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বর বস্তিতে রোববার দিবাগত রাতে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও এ ঘটনায় বস্তির হাজারো ঘর পুড়ে গেছে। সব হারিয়ে বস্তিবাসী অবস্থান করছেন খোলা আকাশের নিচে। তাৎক্ষণিক খাদ্য সাহায্যসহ দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীদের জন্য সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধেও নিতে হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।
মিরপুর ১২ নম্বরের ইলিয়াস মোল্লা বস্তিতে রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে আগুন লাগে। পরে তা দ্রুত পুরো বস্তিতে ছড়িয়ে পড়ে। রাত সাড়ে তিনটার দিকে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। গতকাল সোমবার সকাল সাতটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ২৩টি ইউনিট কাজ করে। বস্তিতে যাওয়ার রাস্তাগুলো খুব সরু। এ কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলোর ঘটনাস্থলে যেতে অনেক সময় লেগে গেছে। তাছাড়া বাইরে বাতাসও ছিল। সব মিলিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। বস্তির অধিবাসীদের বেশির ভাগই পোশাক কারখানার কর্মী। প্রায় সবার ঘরেই পোশাকের ঝুট ছিল। ছিল দাহ্য পদার্থও। এ কারণে আগুন খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
বস্তিটিতে ৮ হাজারের বেশি ঘর রয়েছে। ধারণা করা যাচ্ছে, ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ঘর পুড়ে গেছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী মোল্লা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এরই মধ্যে। অগ্নিকাণ্ডে জীবন বাঁচাতে ঘর ছেড়ে সবাই বেরিয়ে আসলেও জীবনের অর্জিত সম্পদ বা প্রয়োজনীয় কিছুই বের করতে পারেননি। জীবনযুদ্ধে এ অকল্পনীয় অমানিশায় সব হারিয়ে দিশেহারা ইলিয়াস আলী মোল্লা বস্তিবাসী। এখন তাদের পাশে দাঁড়ানো জরুরি কর্তব্য। বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল দেবে ঢাকা জেলা প্রশাসক। সোমবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী মোল্লার বাসভবনে এ তথ্য জানান ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শাহিদুজ্জামান। ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীর জন্য ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে তারা যেন আবারা মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেন সেই ব্যবস্থায়ও করতে হবে। পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধান করতে হবে।
অগ্নিকাণ্ড নির্বাপণে ফায়ার সার্ভিসের দক্ষতা বেড়েছে। এটা আশার কথা। তবে ঘটনা ঘটার চেয়ে প্রতিরোধ ব্যবস্থায়ই উত্তম। যাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা না ঘটে এবং ঘটলেও যেন নিজেরাই নিভিয়ে ফেলতে পারে এজন্য সচেতনতা এবং পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামাদি থাকা প্রয়োজন।
এইচআর/জেআইএম