উন্নয়নভোগান্তি আর কতদিন?

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৯:৪৭ এএম, ০৬ মার্চ ২০১৮

উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে লোকজনের খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু কিছু উন্নয়ন প্রকল্প এত ধীর গতিতে হচ্ছে যে তাতে জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। এতে যার পর নাই মানুষজন বিরক্ত। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে উন্নয়ন কাজ শেষ করতেই যদি বছরের পর বছর পার হয়ে যায় তাহলে লোকজন এর সুফল পাবে কখন?

রাজধানীতে চলছে নানামুখি উন্নয়ন কাজ। পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ নির্মাণ, ফুটপাতের উন্নয়ন কাজ, স্যুয়ারেজ লাইন, সড়ক সংস্কার, ওয়াসা, ডেসা ও তিতাসের সংযোগ লাইন স্থাপনসহ বিভিন্ন কারণে নগরীর সড়কগুলোতে খোঁড়াখুঁড়ি লেগেই আছে। যে কারণে দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে ফ্লাইওভার, মেট্রোরেলসহ আরও বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন কাজ চলছে। সড়কগুলো কেটে ফেলায় ভোগান্তির মাত্রা কয়েকগুণ বেড়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের অলিগলিতে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এসব সড়ক দিয়ে পথচারীদের চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চললে তাতে সাময়িক ভোগান্তি হবে এটাই স্বাভাবিক। মানুষজন এটা মেনেও নেয়। কিন্তু এটা যখন বছরের পর বছর ধরে চলে তখনই তা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়। এছাড়া ওয়াসা, ডেসা ও তিতাসের উন্নয়ন কাজের সাথে কোনো সমন্বয় না থাকায় সারাবছর ধরেই চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এতে এক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ধুলার রাজ্যে চলাই দায়। মিরপুরেও চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ চলায় এক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মিরপুর ১২ নম্বর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শুরু করে মিরপুর সাড়ে ১১, কালশী মোড়, মিরপুর ১১ নম্বর, মিরপুর ১০ নম্বর এলাকা, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, তালতলা ও আগারগাঁও এলাকা পর্যন্ত দিন-রাত কয়েকশ শ্রমিক কাজ করছেন। এর মধ্যে কালশী মোড় ও আগারগাঁও মোড়ে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ।

বিশেষ করে আগারগাঁও এলাকায় মেট্রোরেলের একটি অবকাঠামো গড়ে ওঠছে। সেখানে মেট্রোরেলের কাজে ব্যবহৃত বড় বড় ক্রেন, পাইলিং যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি রাখা হয়েছে। কাজের সুবিধার্থে আগারগাঁওয়ে নির্মাণ স্থাপনার পাশেই প্রকল্প অফিস তৈরি করা হয়েছে। সড়কের পাশে স্তূপ করে রাখা হয়েছে অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহৃত সিমেন্ট, ইট, বালু ও সুরকি। ফলে সরু হয়ে পড়া সড়কে স্বাভাবিক গতিতে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া গাড়ি চলাচলের অংশ খানাখন্দে ভরে গেছে। রয়েছে রিকশার চাপও। ফলে ইচ্ছা করলে সহজেই এ সড়কের ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো উপায় নেই।

এভাবে রাজধানী জুড়েই এক সংস্থার কাজ শেষ হয় তো আরেক সংস্থা শুরু করে। এতে শুধু জনভোগান্তিই হয় না রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থের শ্রাদ্ধও হয়। এমনিতেই বাস-অযোগ্য তালিকায় বার বার উঠে আসছে রাজধানী ঢাকার নাম। তারওপর সারাবছর ধরে উন্নয়ন কাজের নামে খোঁড়াখুঁড়ি চলতে থাকায় পরিস্থিতিকে তা আরও নাজুক করে তুলছে। রোদ থাকলে ধুলা আর একটু বৃষ্টি হলেই কাদা। দেখা দেয় জলাবদ্ধতাও। যানজট, ধুলো দূষণে নগরবাসী এমনিতেই অতিষ্ঠ। এখন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের ভোগান্তি যেন চরমে না পৌঁছে সেটি নিশ্চিত করতে হবে যে কোনো মূল্যে। সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জনভোগান্তির বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমলে নিয়ে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এইচআর/জেআইএম

‘উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চললে তাতে সাময়িক ভোগান্তি হবে এটাই স্বাভাবিক। মানুষজন এটা মেনেও নেয়। কিন্তু এটা যখন বছরের পর বছর ধরে চলে তখনই তা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়। এছাড়া ওয়াসা, ডেসা ও তিতাসের উন্নয়ন কাজের সাথে কোনো সমন্বয় না থাকায় সারাবছর ধরেই চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এতে এক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ধুলার রাজ্যে চলাই দায়।’

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।