প্রশ্ন ফাঁসের ফাঁস থেকে কবে মুক্তি?

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ১০:০৯ এএম, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

প্রশ্নফাঁসের নানা অভিযোগের মধ্যেই গতকাল থেকে শুরু হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এবার থেকে সারা দেশে এক প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ ব্যবস্থায় ফাঁসের ঝুঁকি বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। তবে যে কোনো মূল্যে প্রশ্নফাঁস রোধ করতে হবে। বিপুলসংখ্যক পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকের ওপর প্রশ্নফাঁস এক বিশাল আতঙ্কের নাম। এর থেকে মুক্তি মিলতেই হবে।

গত চার বছরে পাবলিক পরীক্ষায় ৬৩টি প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় গোটা শিক্ষাব্যবস্থা হুমকিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক যে প্রশ্ন ফাঁসের মত গুরুতর অপরাধের ঘটনা ঘটেই চলেছে। নানা রকম উদ্যোগ স্বত্ত্বেও প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো যাচ্ছে না। বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা থেকে শুরু করে চাকরির প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হচ্ছে।

এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে প্রশ্নফাঁসকারী একাধিক চক্র বিরাজমান। তারা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে। তারা প্রযুক্তির অপব্যবহার করেও প্রশ্ন ফাঁস করছে। এদের পেছনে শক্তিশালী হাত থাকাও অসম্ভব কোনো ব্যাপার নয়। অভিযোগ আছে সর্ষের ভেতরেই রয়েছে ভূত। নাহলে এই চক্রকে কেন সামাল দেয়া যাচ্ছে না। ঘটছে নৈতিক অবক্ষয়ও। শিক্ষক, অভিভাবক, কর্মকর্তা-কর্মচারী- সবাই প্রশ্নফাঁসে জড়িয়ে পড়েছেন। এটা ভাবা যায়! প্রশ্নফাঁসের কারণে দেখা দিচ্ছে বিশৃঙ্খলা। পরীক্ষার্থীরা নানা রকম গুজবে কান দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অভিভাবকরাও যার পর নাই চিন্তিত। এ অবস্থায় যে কোনো মূল্যে প্রশ্ন ফাঁস রোধ করতে হবে।

প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধানসহ আইন রয়েছে। কিন্তু সেই আইনে কারো সাজা হয়েছে এমন নজির মেলা ভার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তি জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় তাদের বহিষ্কারাদেশ চূড়ান্ত হয়। এটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন ছাড়া সমাজে আইন প্রতিষ্ঠা কঠিন। যত ব্যবস্থার কথাই বলা হোক না কেন অপরাধীর শাস্তি না হলে কোনো অবস্থায়ই অপরাধ বন্ধ করা যাবে না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে সর্ষের ভেতরের ভূত আগে তাড়াতে হবে। অভ্যন্তরীণ কোনো সহযোগিতা ছাড়া প্রশ্নফাঁস অসম্ভব ব্যাপার। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রশ্নফাঁস রোধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

এইচআর/এমএস

অভিযোগ আছে সর্ষের ভেতরেই রয়েছে ভূত। নাহলে এই চক্রকে কেন সামাল দেয়া যাচ্ছে না। ঘটছে নৈতিক অবক্ষয়ও। শিক্ষক, অভিভাবক, কর্মকর্তা-কর্মচারী- সবাই প্রশ্নফাঁসে জড়িয়ে পড়েছেন। এটা ভাবা যায়!

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।