অস্থির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ১০:১০ এএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৮

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অস্থিরতা দেখা দিয়ে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ঢাকার সাত কলেজকে ঢাবির অধিভুক্তি করাকে কেন্দ্র করে এর পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান নেয় কিছু শিক্ষার্থী। এর জের ধরে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করা হয়। অবরুদ্ধ উপাচার্যকে উদ্ধারে এগিয়ে আসে ছাত্রলীগ। সেখানে ঘটে অনাকাঙ্খিত ঘটনা। মূল সমস্যা থেকে সরে গিয়ে আলোচনা এখন হামলা, মামলা অস্থিরতা নিয়ে।

শিক্ষাঙ্গনে অস্থিরতা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। যে সাত কলেজের অধিভুক্তিকে কেন্দ্র করে এই অস্থিরতার সৃষ্টি সেটি আসলে হিতে বিপরীত হয়েছে। কোনো রকম পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই ঢাকার সাত কলেজকে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়েছে। সেশনজট কমানোর জন্য এটা করা হলেও তা আরো বাড়ছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোতে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শেষ হলেও ঢাবি অধিভুক্ত কলেজগুলোতে এখনো পরীক্ষার রুটিনই দেয়া হয়নি। এরচেয়ে দুঃখজনক আর কী হতে পারে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২০ জুলাই অধিভুক্ত সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে শাহবাগে অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিপেটা ও কাঁদুনে গ্যাসের শেল ছোড়ে। সে সময় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশি নৃশংসতায় চোখ হারিয়েছেন তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুর রহমান।

বেকারত্বের এদেশে পাস করলেই যেখানে চাকরি মিলছে না সেখানে শিক্ষা জীবন শেষ করতেই যদি অনেক সময় লেগে যায় সেটি হবে আরো দুঃখজনক। এ কারণে ঢাবি কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। এ নিয়ে একে অপরের দোষ দেয়া বা কারো সাথে রশিটানাটানিরও সুযোগ নেই। কোনো অবস্থায়ই যেন অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশসহ সময়মত পরীক্ষা নেয়া ও ফলপ্রকাশের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। অধিভুক্তিকে কেন্দ্র করে যে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে তা দূর করতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনাকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। নানা পক্ষ ক্যাম্পাসকে উত্তপ্ত করার চেষ্টা করতে পারে। বিশেষ করে নির্বাচনী বছরে এ ধরনের অপতৎপরতা চলাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাই সবাইকেই দায়িত্বশীল হতে হবে। ছাত্রলীগকেও দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। ক্ষমতাসীন দলের ঐতিহ্যবাহী ছাত্রসংগঠনটির নেতাকর্মীরা যেন কোনো ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্ম না দিতে পারে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। কোনো অবস্থায়ই যেন শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত না হয় সেজন্য যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।

এইচআর/এমএস

বেকারত্বের এদেশে পাস করলেই যেখানে চাকরি মিলছে না সেখানে শিক্ষা জীবন শেষ করতেই যদি অনেক সময় লেগে যায় সেটি হবে আরো দুঃখজনক।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।