শিক্ষাব্যয় কমান

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ১০:১৪ এএম, ২১ জানুয়ারি ২০১৮

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে ব্যয়সীমা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। সব স্তরের শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ তৈরি করে দিতে মন্ত্রী এমন আহ্বান জানিয়েছেন। মন্ত্রীর আহ্বান অত্যন্ত যৌক্তিক ও সময়োপযোগী। কথা হচ্ছে এই আহ্বান যাদের উদ্দেশ্যে তারা যেমন বিষয়টি মেনে চলবেন তেমনি শুধু আহ্বান জানিয়েই দায়িত্ব শেষ করলে চলবে না- তা বাস্তবায়নেও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

গত শনিবার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, দেশের বাস্তবতা এবং জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও টিউশন ফিসহ সব ধরনের ব্যয় একটি সীমা পর্যন্ত নির্ধারিত রাখতে উদার দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে হবে। তিনি বলেন, কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখনও তাদের ন্যূনতম শর্ত পূরণ করতে পারেনি। এভাবে তারা বেশি দিন চলতে পারবে না। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, যারা মুনাফার লক্ষ্য নিয়ে চলতে চায়, যারা নিজস্ব ক্যাম্পাসে এখনও যায়নি, যারা একাধিক ক্যাম্পাসে পাঠদান পরিচালনা করছে তাদের বিরুদ্ধে অব্যাহত চাপ রেখেও সঠিক ধারায় আনা কঠিন হয়ে পড়েছে।

এজন্য তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া তারা আর কোন পথ খোলা রাখেনি। মন্ত্রী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তাদের ব্যবসা ও মুনাফার চিন্তা ত্যাগ করে জনকল্যাণ, সেবার মনোভাব ও শিক্ষার জন্য অবদান রাখার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে আমাদের দেশের বাস্তবতা এবং জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও টিউশন ফিসহ সব ধরনের ব্যয় একটি সীমা পর্যন্ত নির্ধারিত রাখতে অনুরোধ করেন।

দেশে একদিকে শিক্ষা প্রসারে নানা উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। স্কুল পর্যায়ে বিতরণ করা হচ্ছে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক। স্নাতক পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করা হয়েছে। দেয়া হচ্ছে উপ-বৃত্তিসহ নানা ধরনের প্রণোদনা। অন্যদিকে শিক্ষাকে বাণিজ্য হিসেবে নেওয়ার প্রবণতাও জোরালো। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অযৌক্তিক অর্থ আদায় করছে। বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজেও অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। টিউশন ফিও বাস্তবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। অনেক কলেজেও ফরম ফিলাপের জন্য অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে। আর নির্ধারিত পাঠ্যসূচির বাইরেও নানা ধরনের বই পাঠ্য করে সেগুলো কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে স্কুল পর্যায়ে। শিক্ষার চেয়ে এর সাথে বাণিজ্যের বিষয়টিই মুখ্য। এছাড়া অনৈতিক কোচিং বাণিজ্য তো রয়েছেই।

এ অবস্থায় শিক্ষাব্যয় কমানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। একদিকে বিনামূল্যে পাঠ্য পুস্তক বিতরণ অন্যদিকে নানা উসিলায় এবং উপায়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়- এটা মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষাব্যয়কে যে কোনো মূল্যে সর্বসাধারণের নাগালের মধ্যে রাখতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

এইচআর/এমএস

‘শিক্ষাব্যয় কমানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। একদিকে বিনামূল্যে পাঠ্য পুস্তক বিতরণ অন্যদিকে নানা উসিলায় এবং উপায়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়- এটা মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষাব্যয়কে যে কোনো মূল্যে সর্বসাধারণের নাগালের মধ্যে রাখতে হবে।’

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।