নতুন বছরে নতুন প্রত্যাশা

সম্পাদকীয়
সম্পাদকীয় সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: ০৩:৫৫ এএম, ০১ জানুয়ারি ২০১৮

কালের গর্ভে হারিয়ে গেল আরও একটি বছর। শুরু হল ২০১৮ খ্রিস্টাব্দ। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা। নানা দিক থেকেই ২০১৭ সালটি ছিল অত্যন্ত ঘটনাবহুল। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হলো রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দান। অন্যদিকে বছরের প্রায় শেষে পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশ সফরও আলোচনায় ছিল বিশ্ববাসীর কাছে। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের মর্মান্তিক ৭ খুন মামলার রায়, নিজ বাসায় আততায়ীদের হাতে ক্ষমতাসীন দলের এমপি লিটন হত্যা।

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার পদত্যাগ নিয়ে মিডিয়া ছিল সরগরম। নির্বাচন কমিশন আয়োজিত সংলাপও ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। বছর জুড়ে দ্রব্যমূল্যের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছে সাধারণ মানুষ। চাল, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচের উচ্চমূল্য ছিল আলোচনার বিষয়। নতুন বছরে দ্রব্যমূল্য স্বস্তিকর পর্যায়ে আসবে এমনটিই আশা করছে মানুষজন। বছরের শেষে রোবট সোফিয়ার বাংলাদেশ সফর তথ্যপ্রযুক্তিপ্রেমীদের মধ্যে উন্মাদনা, উৎসাহ সৃষ্টি করে। সোফিয়াকে দেখতে গিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন তারা। নানা স্তরের শিক্ষক আন্দোলনও দেখা দেয় বছর শেষে। বেতন বৈষম্য দূর করাসহ এমপিওভুক্তির দাবিতে অনশন কর্মসূচি দেন শিক্ষকরা। হত্যা, গুম, ধর্ষণের ঘটনাও ছিল আলোচনার কেন্দ্রে।

নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করছে বাংলাদেশ। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর দৃশ্যমান হওয়াটাও ছিল আলোচনার বিষয়। পদ্মা সেতু থেকে বিশ্ব্যাংকের ঋণ প্রত্যাহার এবং নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা ঘোষণা ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় সংকল্প নেতৃত্বের সাহসের প্রতীক। দেশাত্মবোধেরও জাগরণ সৃষ্টি হয় পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে। নানা দিক মিলিয়ে ২০১৭ ছিল অন্যান্য বছরের চেয়ে অন্যরকম, ঘটনাবহুল।

শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন নিয়ে এসেছে বর্তমান সরকার। প্রতি বছর জানুয়ারির প্রথম দিন প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে পাঠ্যপুস্তক দিবস পালন করা হচ্ছে। এ বছরও পহেলা জানুয়ারি পাঠ্যপুস্তক দিবস পালন করা হচ্ছে।

সামাজিক, অর্থনৈতিক নানা সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে গেলেও রাজনৈতিক অনৈক্য, সংঘাত, সহিংসতা, সন্দেহ, অবিশ্বাস এক প্রধান সমস্যা হিসেবেই এখানে রয়ে গেছে। রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন দেশের রাজনীতিতে স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ শক্তির সহাবস্থান সম্ভব নয় বলেই এই সংকট দূর হচ্ছে না- এমনটিই বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এছাড়া জঙ্গিবাদও মাথাচাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করছে বার বার। ঘটছে ব্লগার হত্যা, হুমকি আসছে প্রগতিশীল চিন্তার মানুষদের ওপর। এসব সমস্যা উজিয়ে একটি আদর্শিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের পৌঁছাতেই হবে। তবেই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার যে লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। ২০১৮ সাল সবার জন্য মঙ্গলময় হোক এটাই প্রত্যাশা।

এইচআর/জেআইএম

‘নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করছে বাংলাদেশ। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর দৃশ্যমান হওয়াটাও ছিল আলোচনার বিষয়।’

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।