গণমাধ্যম কমিশনের সুপারিশ ও বাস্তবতা

আমীন আল রশীদ
আমীন আল রশীদ আমীন আল রশীদ , সাংবাদিক, কলামিস্ট
প্রকাশিত: ০৯:১৯ এএম, ২৪ মার্চ ২০২৫

বিবিসির সাবেক সাংবাদিক ও খ্যাতিমান কলাম লেখক কামাল আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন শনিবার ১৮০ পৃষ্ঠার যে প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছে, সেখানে গণমাধ্যমের মালিকানা, গণমাধ্যম কমিশন, সাংবাদিকতা সুরক্ষা আইন, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা, অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা, বেসরকারি টেলিভিশন, এফএ রেডিও, অনলাইন পোর্টাল, রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম বিটিভি-বেতার ও বাসস, পিআইবি, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট, সংবাদমাধ্যমের বিজ্ঞাপন, সাংবাদিকের আর্থিক নিরাপত্তা, ভুয়া ও অপতথ্য মোকাবিলা, গণমাধ্যম সাক্ষরতাসহ নানা বিষয়ে একগুচ্ছ সুপারিশ করা হয়েছে।

অধিকাংশ সুপারিশ যৌক্তিক এবং এগুলোর বাস্তবায়ন জরুরি। কিন্তু বাংলাদেশের বিদ্যমান বাস্তবতায় এর কতগুলো সুপারিশ সত্যিই বাস্তবায়ন করা যাবে, বিশেষ করে গণমাধ্যমের মালিকানা ও সাংবাদিকের আর্থিক সুবিধার ইস্যুতে এমন কিছু সুপারিশ করা হয়েছে, যা এ মুহূর্তে তো বটেই, আগামী এক দশকেও বাস্তবায়ন করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে সত্যিই এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে দেশের গণমাধ্যমে শৃঙ্খলা ফিরে আসার পাশাপাশি সাংবাদিকের পেশাগত অনিশ্চয়তা যে দূর হবে, তাতে সন্দেহ নেই।

বিজ্ঞাপন

কয়েকটি সুপারিশ এবং তার বাস্তবতা নিয়ে সংক্ষেপে আলোকপাত করা যাক।
১. গণমাধ্যমের মালিকানার বিষয়ে কমিশনের বক্তব্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণমাধ্যমের মালিকানার বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং একক মালিকানা ও একাধিক গণমাধ্যমের মালিকানা অর্জনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের কেন্দ্রীকরণের বিষয়গুলোয় সংস্কার শুরু হয়েছে। এমনকি দর্শক বা পাঠকের কত শতাংশ একটি গণমাধ্যমের গ্রাহক/ ভোক্তা, এর ভিত্তিতেও সেই গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের নতুন প্রকল্পের অনুমোদন বা আবেদন প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে।

এমতাবস্থায় কমিশন প্রথম পর্যায়ে মাঝারি ও বৃহৎ মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে সর্বসাধারণের জন্য শেয়ার ছাড়া ও স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার সুপারিশ করেছে। সেইসাথে উদ্যোক্তা পরিচালক ও ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে শেয়ার ধারণের সীমা ২৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত করা ও প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে শেয়ারবণ্টন বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করেছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এখানে চ্যালেঞ্জ হলো বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের অতীত অভিজ্ঞতা। পুঁজিবাজার থেকে কীভাবে শত বা হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে, তা দেশবাসীর অজানা নয়। এই কারসাজির সঙ্গে বড় বড় কিছু কোম্পানির সঙ্গে যে খোদ পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থার শীর্ষ থেকে মাঝারি পর্যায়ের লোকজনও জড়িত, সেটিও পুরোনো অভিযোগ। গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে দুর্নীতির দায়ে গ্রেপ্তারকৃতদের একজন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম। যিনি এখন কারাগারে।

যে দেশের পুঁজিবাজার এখনও অনিয়ম, দুর্নীতি ও কারসাজির বিরাট আখড়া, সেখানে মাঝারি ও বৃহৎ মিডিয়া কোম্পানিগুলো সর্বসাধারণের জন্য যদি শেয়ার ছাড়ে, তাহলে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শেয়ার বাজারের বিনিয়োগকারীরা কতটা ভরসা পাবেন, সেটি বিরাট প্রশ্ন। কেননা, এমনিতেই এখন পর্যন্ত দেশের গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠানগুলোকে মালিকের ‘লুজিং কনসার্ন’ বা ‘সাবসিডাইসড প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

সুতরাং, বিনিয়োগকারীরা এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনতে কতটা আগ্রহী হবেন, সেটি যেমন প্রশ্ন। তেমনি বৃহৎ ও মাঝারি গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের যেহেতু অন্যান্য ব্যবসা আছে এবং তাদের কারো কারো বিরুদ্ধে শেয়ার বাজার কারসাজির অভিযোগ আছে, ফলে শেয়ার বাজারে তাদের মিডিয়াগুলো তালিকাভুক্ত করার পরে সেখান থেকে কী পরিমাণ টাকা তুলে নেবেন, অর্থাৎ কী পরিমাণ টাকার নয়ছয় হবে, সেটিও চিন্তার বিষয়। অতএব, মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তির আগে শেয়ারবাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে হবে। এটি একেদিনের বা এক মাসের কাজ নয়। শেয়ারবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠার আগে এখানে মিডিয়া কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করে খুব ভালো ফল পাওয়া যাবে না।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

২. কমিশনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ হলো একই কোম্পানি, গোষ্ঠী, ব্যক্তি, পরিবার বা উদ্যোক্তা যাতে একই সঙ্গে একাধিক গণমাধ্যমের মালিক না হতে পারে। তাদের সুপারিশ হলো, যেসব কোম্পানি/গোষ্ঠী/প্রতিষ্ঠান/ব্যক্তি/পরিবার একই সঙ্গে টেলিভিশন ও পত্রিকার মালিক তারা যেকোনো একটি গণমাধ্যম রেখে অন্যগুলোর মালিকানা বিক্রির মাধ্যমে হস্তান্তর করে দিতে পারে। অথবা দুটি মিডিয়ার (টেলিভিশন ও পত্রিকা) সাংবাদিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একত্রিত করে আরও শক্তিশালী ও বড় আকারে একটি মিডিয়া (টেলিভিশন অথবা দৈনিক পত্রিকা) পরিচালনা করতে পারে। কমিশন মনে করে, একক মালিকানায় একই ভাষায় একাধিক দৈনিক বা একাধিক টেলিভিশন চ্যানেল প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট করে। সেই সাথে গণমাধ্যমের যে ক্ষমতা তা নিজ স্বার্থে কেন্দ্রীভূত করে।

এটি আপাতদৃষ্টিতে একটি অবাস্তব ধারণা। কেননা এখনও পৃথিবীর অনেক দেশেই একই প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় একাধিক মিডিয়া প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং এটিকে অস্বাভাবিক হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল্ট ডিজনির মালিকানাধীন টিভি এবিসি নিউজ, ইএসপিএন, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক; কমকাস্টের মালিকানাধীন পত্রিকা সিএনবিসি ডিজিটাল, এনবিসি নিউজ ডিজিটাল, এনবিসি, সিএনবিসি, এমএসএনবিসি টিভি চ্যানেল; জার্মানির বের্টলসম্যানের মালিকানাধীন বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও ডিজিটাল মিডিয়া, আরটিএল টিভি; নিউইয়র্ক টাইমসের মালিকানাধীন পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস, নিউইয়র্ক টাইমস ডকুমেন্টারি টিভি চ্যানেল; থমসন রয়টার্সের রয়টার্সের রয়টার্স নিউজ এজেন্সি ও রয়টার্স টিভি; ভায়াকম সিবিএসের সিবিএস নিউজ ডিজিটাল, সিবিএস নিউজ চ্যানেল, এমটিভি, শো টাইম, প্যারামাউন্ট নেটওয়ার্ক; যুক্তরাজ্যের দ্য গার্ডিয়ান গ্রুপের পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান এবং অনলাইন ভিডিও কনটেন্ট প্রতিষ্ঠান গার্ডিয়ান ডকুমেন্টারি; আলজাজিরার ইংলিশ, আরবি ও বলকান টিভি ইত্যাদি। এমনকি বিবিসির মালিকানাধীন বেশ কিছু গণমাধ্যম রয়েছে।

সরকারের উচিত হবে কমিশনের এই সুপারিশগুলোর ওপরে গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা এবং তাদের মতামত ও পর্যবেক্ষণ শোনা। বিশেষ করে এইসব সুপারিশ বাস্তবায়নের কী কী বাস্তবসম্মত সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেগুলোও তাদের কাছ থেকে শোনা দরকার এবং সেই চ্যালেঞ্জ উত্তরণে সরকার কী করতে পারবে; সরকার কোথায় কোথায় নীতি ও আর্থিক সহায়তা দিতে পারবে—সেটিও আলোচনা করা দরকার।

তাছাড়া, বাংলাদেশের বাস্তবতায় এখনও গণমাধ্যমে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা যথেষ্ট কম। এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এটি মনে করা হয় যে, কালো টাকার বড় ধরনের জোগান ছাড়া কোনো গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠান দাঁড় করানো সম্ভব নয়। অর্থাৎ মিডিয়াকে কালো টাকা সাদা করার একটি বড় মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কোনো ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা নিছক ব্যবসার উদ্দেশ্যে পত্রিকা, টেলিভিশন, রেডিও বা অনলাইন পোর্টাল চালু করেন, এই সংখ্যাটি খুব কম কিংবা এই মুহূর্তে এরকম প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়াই হয়তো কঠিন। সেক্ষেত্রে বড় বড় ব্যবসায়ী গ্রুপগুলো যখন একাধিক গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠান চালু করে, সেখানে তার নিজের কালো টাকা সদা করা কিংবা অন্য আর যে স্বার্থই থাকুক না কেন, অনেক লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। কিন্তু যখন একটি কোম্পানি একটির বেশি গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠানের মালিক হতে পারবে না, তখন গণমাধ্যমে বিনিয়োগ কমে যাবে। অসংখ্য মানুষ কর্মহীন হবে বা নতুন নতুন চাকরির সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

মালিকরা যখন নিতান্তই ব্যবসা বা অন্যান্য ব্যবসার মতো গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠানকেও বিবেচনা করবেন বা করতে পারবেন, তখন একক মালিকানায় একটির বেশি গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠান না রাখার বিষয়টি যুক্তিযুক্ত হবে। বাংলাদেশর বিদ্যমান বাস্তবতায় এটি এখনও বেশ কঠিন।

৩. গণমাধ্যমে কালোটাকার অনুপ্রবেশ নিরুৎসাহিত করতে প্রতি বছর গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক হিসাব উন্মুক্ত করার সুপারিশ করেছে কমিশন। আগেই বলা হয়েছে, বাংলাদেশের গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিরাট অংশেই যে বিনিয়োগ হয়েছে, তা মূলত কালো টাকা। সুতরাং, মিডিয়ায় কালো টাকায় অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে গেলে শেষমেষ কতটি গণমাধ্যম টিকবে, সেটি বিরাট প্রশ্ন।

৪. কমিশনের আরেকটি সুপারিশ হলো, কোনো গণমাধ্যমে নিয়োগপত্র ও ছবিসহ পরিচয়পত্র ছাড়া এবং বিনাবেতনে কোনো সাংবাদিককে অস্থায়ী, স্থায়ী বা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, সাংবাদিকদের স্থায়ী চাকরির শুরুতে সরকারি প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তাদের মূল বেতনের সমান বেতন ধার্য করারও সুপারিশ করেছে কমিশন।

বিজ্ঞাপন

এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো সুপারিশ। কিন্তু দেশের কতগুলো গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠান স্থায়ী চাকরির শুরুতেই প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তাদের মূল বেতনের সমান বেতন দেবে বা দিতে পারবে, সেটি বিরাট প্রশ্ন। যে দেশে এখনও অনেক বড় প্রতিষ্ঠানও ১০-২০ হাজার টাকায় সাংবাদিক নিয়োগ দেয়, সেখানে এই সুপারিশ বাস্তবায়নে কতটি গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠানের মালিক রাজি হবেন, বা আদৌ কোনো মালিক রাজি হবেন কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

এখন যে দেশে অধিকাংশ গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠান ঠিকমতো তাদের কর্মীদের বেতনই দেয় ন, সেখানে চাকরি স্থায়ী হওয়ার শুরুতেই প্রথম শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তাদের সমান বেতন একটি বৈপ্লবিক সুপারিশ বলে মনে হতে পারে। তবে এটা বাস্তবায়ন করা গেলে দুটি ঘটনা ঘটবে। ক. যেসব প্রতিষ্ঠান কর্মীদের ঠিকমতো বেতন দিতে পারবে না, সেইসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। বন্ধ হয়ে গেলে ওইসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা বেকার হয়ে যাবেন। খ. যেসব গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠান এই সুপারিশ মেনে বা এই ধরনের কাঠামোয় বেতন দেবে, সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের আর্থিক বঞ্চনার অবসান হবে। এখন যেমন কম বেতন ও অনিয়মিত বেতনের কারণে অনেকেই সাংবাদিকতা পেশায় আসতে আগ্রহী হন না, সেই সংখ্যাটি কমে আসবে।

৫. অনলাইন পোর্টালের নিয়ন্ত্রণহীন ও বিশৃঙ্খল প্রসার বন্ধ করতেও কমিশন বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। যেমন এর নিবন্ধন নীতিমালা পর্যালোচনা করে সেটিকে বাস্তবানুগ এবং কার্যোপযোগী করা; অনলাইন পোর্টালগুলো নিবন্ধন পাওয়ার পর তার বার্ষিক নবায়ন পদ্ধতি বাতিল করা; অনলাইন নীতিমালায় আইপিটিভি এবং অনলাইন পোর্টালে সংবাদ বুলেটিন সম্প্রচার করা যাবে না—এমন নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা; অনলাইন পোর্টালে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার আলোকে সরকারি বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করা; নিবন্ধনহীন পোর্টালগুলো বন্ধের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশনা কার্যকর করা ইত্যাদি।

বিজ্ঞাপন

এরকম আরও অনেক বৈপ্লবিক, যৌক্তিক ও সময়োপযোগী সুপারিশ করেছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন। কিন্তু এগুলোর বাস্তবায়ন নির্ভর করছে গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের আন্তরিকতার ওপর। বিশেষ করে সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নোয়াব এবং টেলিভিশন চ্যানেল মালিকদের সংগঠন অ্যাটকো এইসব সুপারিশের বিষয়ে একমত না হলে এগুলোর বাস্তবায়ন অসম্ভব।

সরকারের উচিত হবে কমিশনের এই সুপারিশগুলোর ওপরে গণমাধ্যমপ্রতিষ্ঠানের মালিকদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করা এবং তাদের মতামত ও পর্যবেক্ষণ শোনা। বিশেষ করে এইসব সুপারিশ বাস্তবায়নের কী কী বাস্তবসম্মত সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেগুলোও তাদের কাছ থেকে শোনা দরকার এবং সেই চ্যালেঞ্জ উত্তরণে সরকার কী করতে পারবে; সরকার কোথায় কোথায় নীতি ও আর্থিক সহায়তা দিতে পারবে—সেটিও আলোচনা করা দরকার। না হয় এই সুপারিশগুলো অনেক সুন্দর সুন্দর কথার ফুলঝুরি হয়ে ফাইলবন্দি হয়ে থাকবে। গণমাধ্যমের বিকাশ এবং সাংবাদিকতা পেশার উন্নয়নে কোনো কাজেই আসবে না।

লেখক : সাংবাদিক ও লেখক।

বিজ্ঞাপন

এইচআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।