অনুষ্ঠানে নারী সাংবাদিককে বাধা
অতি উৎসাহী কোনো তৃতীয় পক্ষ এটি করতে পারে: ধর্ম উপদেষ্টা

রাজধানীতে কওমি উদ্যোক্তা সম্মেলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনে একজন নারী সাংবাদিককে প্রবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ বিষয়ে ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, অতি উৎসাহী কোনো তৃতীয় পক্ষ এটি করতে পারে।
এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না এবং আয়োজক কর্তৃপক্ষও কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন এ উপদেষ্টা।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ধর্ম উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
গতকাল বুধবার রাজধানীর চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে কওমি উদ্যোক্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা উদ্যোক্তারা অংশ নেন। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
আরও পড়ুন
- হেফাজতের বাধায় বন্ধ হলো পরীমণির অনুষ্ঠান
- জয়পুরহাটে নারীদের ফুটবল ম্যাচ বন্ধ করতে মাঠে ভাঙচুর
- ঢাকায় অনুষ্ঠানে যেতে অপু বিশ্বাসকে বাধা
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমাদের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জন্য নারী-পুরুষ সব সাংবাদিকের জন্য দরজা সবসময়ই উন্মুক্ত। গতকালকে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে কওমি উদ্যোক্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমি সেখানে ছিলাম মাত্র এক ঘণ্টা। আমি জানতাম না বা আমাকে কেউ বলেনি যে সেখানে নারী সাংবাদিকদের বাধা দেওয়া হয়েছে। সেখানে অনেক সাংবাদিক ছিল। রাত সাড়ে ১১টার দিকে একজন নারী সাংবাদিক ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন, সেটি আমার কাছে পাঠানো হয়েছে। রাত গভীর হাওয়ায় আমি ওই নারী সাংবাদিকের সঙ্গে আর কথা বলতে পারিনি। আজকেও সেটা নিয়ে ফেসবুকে নানা কথা হয়েছে।
খালিদ হোসেন বলেন, কওমি উদ্যোক্তার যিনি ফাউন্ডার, উনি একসময় সাংবাদিকতা করতেন, তার সঙ্গে আমি যোগাযোগ করলাম। তিনি একটি লিখিত কাগজ (প্রেস বিজ্ঞপ্তি) পাঠিয়েছেন।
‘সেখানে তিনি লিখেছেন, এমি জান্নাত নামে একজন নারী সাংবাদিককে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি বলে তিনি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। আমাদের জানা মতে এ অনুষ্ঠান আয়োজন সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি থেকে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমাদের অজ্ঞাতে এরূপ কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে সেজন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছি। এ ধরনের কোনো ঘটনার দায় কোনোভাবেই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ধর্ম উপদেষ্টার নয়। এরূপ কোনো ঘটনার জন্য ধর্ম উপদেষ্টার ওপর দায় চাপানো অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক।’
‘কওমি উদ্যোক্তা কখনোই নিউজ সংগ্রহ বা কর্মস্থলে নারীকে বাধা দেয়নি। আগামীতেও এমনটি করবে না বলে তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন’- জানান খালিদ হোসেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, উদ্যোক্তারা বিষয়টি পরিষ্কার করে বিবৃতি দিয়েছেন। মনে হয় এটি এখানেই সমাপ্ত হওয়া দরকার।
তিনি বলেন, হয়তো তৃতীয় কোনো পক্ষ অতি উৎসাহী হয়ে এটা করতে পারে। এটার দায় তো আমার ওপর কোনোভাবেই পড়ে না। আমি তো তাদের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে গিয়েছি।
আরও পড়ুন
- নারীদের ফুটবল ম্যাচ বন্ধে খেলার মাঠে ভাঙচুর
- বাধার মুখে শোরুম উদ্বোধন করতে পারলেন না মেহজাবীন
- মাজারে হামলা বন্ধের দায়িত্ব আমার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
এ বিষয়টি নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নারীর প্রতি যেন কোনো ধরনের অসম্মান ও অমর্যাদা না হয়। নারী সাংবাদিকদের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে- এ বিষয়ে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন। আমি একই কথা সেখানেও বলেছি।
নারী ফুটবলারদের বিভিন্ন জায়গায় খেলতে দেওয়া হচ্ছে না, সেখানে মারামারি হচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এটি আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে না। এটি নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে এটা স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে খতিয়ে দেখা হবে।
‘এসব জায়গায় অনেক সময় রাজনৈতিক এলিমেন্ট সক্রিয় থাকতে পারে। এর মধ্যে কোনো রাজনৈতিক এলিমেন্ট ঢুকে নিজের স্বার্থসিদ্ধি করছে কি না, সেটিও দেখতে হবে।’
খালিদ হোসেন আরও বলেন, ওরশে অনেক সময় কিছু অনৈতিক ও অনৈসলামিক কাজ হয়। এজন্য যেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সচেতন থাকে। আগামী দিনে মাজারকে যেন কেউ অপবিত্র করতে না পারে, এ ব্যাপারে সরকার সচেতন থাকবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে এ বিষয়ে তারা সচেতন থাকবে।
আরএমএম/এমকেআর