জাহাজভাঙা শিল্প: ছয় মাসে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৬ শ্রমিকের

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
প্রকাশিত: ০২:৩৭ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

জাহাজভাঙা শিল্পে গত ৬ মাসে ১৪টি দুর্ঘটনায় ৬ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া ১৩টি দুর্ঘটনায় ২০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ইপসা এইচআরডি মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিকদের দুর্ঘটনার প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন বিলসের পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য কেন্দ্রের সমন্বয়ক ফজলুল কবির মিন্টু।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শ্রমিকরা নিয়োগপত্র বা পরিচয়পত্র ছাড়াই কাজ করেন এবং শ্রমিকদের অধিকাংশই অদক্ষ ঠিকাদারের অধীনে নিয়োজিত। এছাড়া শ্রমিকদের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য সুবিধা ও মজুরি প্রদান নিয়ে অনেক সমস্যা রয়ে গেছে। ২০১৮ সালে ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি আজও বাস্তবায়িত হয়নি।

তবে ২০২৩ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ হংকং কনভেনশন অনুস্বাক্ষর এবং কিছু শিপইয়ার্ডের গ্রিন ইয়ার্ডে রূপান্তরের মাধ্যমে শিল্পের উন্নতির নতুন আশা তৈরি হয়েছে। তবে এসব উন্নতির কারণে শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না হলে সামাজিক সংকট সৃষ্টি হতে পারে।

জাহাজভাঙা শিল্প: ছয় মাসে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৬ শ্রমিকের

প্রতিবেদনে জাহাজভাঙা শিল্পের উন্নয়নে ১৫টি সুপারিশ করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে শ্রমিকদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষিত টিম গঠন, নিয়োগপত্র প্রদান, শ্রমিকদের জন্য জীবনধারণ উপযোগী মজুরি নিশ্চিত করা এবং শ্রম আইন-বিধিমালা এবং আন্তর্জাতিক শ্রমমান অনুসরণ করে নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা। এছাড়া দৈনিক ৮ ঘণ্টার অতিরিক্ত কাজ নিষিদ্ধ করা এবং শ্রমিকদের প্রতি ঘণ্টায় ১৫ মিনিট বিশ্রাম দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

এই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ, জাহাজ ভাঙা শ্রমিক, সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সীতাকুন্ড উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের আহ্বায়ক ও সদ্য গঠিত শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জাহাজ শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক এ এম নাজিম উদ্দিন, সীতাকুন্ড উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা লুৎফুন্নেসা বেগম, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা তাজাম্মল হোসেন, কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন, জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের সদস্য মাহাবুবুল আলম, দিদারুল আলম চৌধুরী, জাহাজভাঙা শ্রমিক নেতা মো. আলী, মো. ইদ্রিছ, মো. জামাল উদ্দিন, মো. হাসান প্রমুখ।

এম মাঈন উদ্দিন/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।