পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে কী ভাবছে সরকার, জানালেন মাহফুজ আলম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৩৬ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম/ ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে জাতীয় অখণ্ডতা, নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্বকে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। সরকার চায়, বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক হবে বাস্তবভিত্তিক, যেখানে কোনো দুঃসাহস বা হঠকারিতার জায়গা হবে না।

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ‘নতুন বাংলাদেশ গঠন: অভ্যন্তরীণ সংস্কার ও পররাষ্ট্রনীতি’ শীর্ষক আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে পরিবর্তন প্রশ্নে মাহফুজ আলম বলেন, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’-এটা একটা লক্ষ্য আকারে ছিল। এটা খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। বরং আমরা চাই সবার সঙ্গে একটা বাস্তবভিত্তিক সম্পর্ক থাকুক, বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে। যেটা বাস্তবভিত্তিক হবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঞ্চালনায় আলোচনায় ছিলেন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। আলোচনার বিষয়ে মাহফুজ আলম বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি কেমন হওয়া উচিত, মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে ভারত, চীন, মিয়ানমার বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ কেমন হওয়া উচিত- এটা নিয়ে আলোচনা করেছি। এ পর্যায়ে এসে আমরা রাষ্ট্রের কিছু সংস্কারের প্রস্তাবনা এবং পদক্ষেপ নিয়েছি। এসব আসলে কীভাবে টেকসই করা যায় এবং এ সময়ে সংস্কারগুলোকে কীভাবে দৃশ্যমান করা যায়। সেক্ষত্রে আমাদের মতামত হিসেবে বলেছি, আমাদের একটা বিস্তৃত পরামর্শ দরকার। রাজনৈতিক দলসহ সব স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে।

তিনি বলেন, আমাদের দরকার সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশের একটা ঐকমত্যের দিকে এগোনো। পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে যে ঐকমত্য এটা যেন জাতীয় জায়গা থেকে হয়, জাতীয় ঐকমত্য হয় এবং এটা কোনোভাবে যেন সরকার অদল-বদলের ভিত্তিতে না হয়। বরং বাস্তবতার ভিত্তিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেন বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে উপস্থাপন করে। আমরা যেন বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাময় এক জায়গায় পুরো দুনিয়ার কাছে উপস্থাপন করতে পারি।

অন্তর্বর্তী সরকারের এ উপদেষ্টা বলেন, আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছি। জনকূটনীতি, সফট পাওয়ার কীভাবে সামঞ্জস্য করা যায় বাইরের দেশগুলোতে। কীভাবে আমরা বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পারি, এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, আমাদের সামর্থ্য বাড়ানো।

বিগত সময়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দলীয়করণ হয়ে গিয়েছিল মন্তব্য করে মাহফুজ আলম বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগে যে জায়গায় ছিল এটা দলীয়করণ হয়ে গিয়েছিল এবং বিভিন্ন দলের উপস্থাপন ফুঁটে উঠেছিল। আমরা চাই, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশকে উপস্থাপন করবে। কোনো দলের হয়ে নয়, বরং বাংলাদেশকে উপস্থাপন করুক। এটাই আমাদের জন্য এখন বড় বিষয়। আমরা এখানে থাকতে চাই। বাংলাদেশকে সামনে রাখার ক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দল এবং আমাদের যত স্টেক হোল্ডার আছে সবার ঐকমত্য চাই আমরা। এটাই এখন আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রের জায়গা থেকে আমাদের যেটা দরকার তা হলো বাস্তবতা। কোনো রকম হঠকারিতা আমরা করতে পারি না। আমরা রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তা, অখণ্ডতা- এটা হচ্ছে আমাদের জাতীয় অখণ্ডতা, নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্ব। আমাদের জায়গায় আমাদের শক্তি কীভাবে বৃদ্ধি করা যায় সেখানে মনোযোগ দিতে চাই। কোনো রাষ্ট্র কী করলো সেটার চেয়ে বড় বিষয় আমাদের সক্ষমতা বাড়ানো এবং ওখান থেকে আমাদের দরকষাকষির সক্ষমতা বাড়ানো। আমাদের নিজের সক্ষমতা বাড়াতে পারলে বাংলাদেশের দরকষাকষির সক্ষমতা বাড়বে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। এটা আমাদের জনগণকে উপকৃত করবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মাহফুজ আলম বলেন, গত সরকার হঠকারিতার চেয়ে যেটা বেশি করেছে সেটা হচ্ছে নতজানু একটা পররাষ্ট্রনীতি তারা নিয়েছে। আর আমাদের সরকারের জায়গা থেকে আমরা চেষ্টা করছি, বাস্তবভিত্তিক যেন হয়। যদি কোনো হঠকারী বা ভুল থাকে সেটা আমরা শুধরানোর চেষ্টা করবো। এটা মোটামুটি আমাদের সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি।

আইএইচআর/কেএসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।