ঢাকায় হঠাৎ বেপরোয়া ছিনতাইকারী চক্র, রাত হলেই আতঙ্ক
যানজটে স্থবির রাজধানী ঢাকার সড়কে চাপাতি হাতে ঘুরছে তিন যুবক। একপর্যায়ে একটি প্রাইভেটকারের জানালা দিয়ে ছোঁ মেরে মোবাইল ফোন নিয়ে ভোঁ-দৌড়। মাজহারুল ইসলাম মহসিন নামে ফেসবুক আইডি থেকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি আসাদগেট এলাকায় ১৬ ডিসেম্বর রাতের। ভিডিওটি মুহূর্তে ফেসবুকে ভাইরাল হয়। প্রশ্ন ওঠে শহরের নিরাপত্তা নিয়ে।
সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী ছিনতাইয়ের অন্যতম হটস্পট হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি হাফেজ কামরুল হাসান রাজধানীর সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার জন্য হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। এসময় ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে কাছে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিতে চায়। কামরুল ছিনতাইকারীদের বাধা দেওয়ায় ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে ছিনতাইকারীরা হাতে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে তার বুকে আঘাত করে।
কামরুল হাসান ফ্লাইওভারের ওপর লুটিয়ে পড়লে ছিনতাইকারীরা তার কাছে থাকা একটি মোবাইল ফোন ও নগদ সাত হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় অবশ্য দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার দুজনের বয়স ১৬ ও ১৭ বছর।
হঠাৎ গত কয়েক সপ্তাহে ঢাকায় ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, মিরপুর, খিলগাঁও, হাতিরঝিল, শাহজাহানপুর, হাজারীবাগ, শাহ আলী, এমনকি গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়েছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। সন্ধ্যা নামতেই বেপরোয়া হয়ে উঠছে ছিনতাই চক্রের সদস্যরা। এসব ঘটনায় প্রায়ই গুরুতর আহত এমনকি প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে। ভুক্তভোগী ও নগরবাসী প্রশ্ন তুলছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয়তা নিয়ে। ছিনতাই রোধে পুলিশ নানান পদক্ষেপের কথা জানালেও কার্যত ছিনতাই কমেনি।
পুলিশ ও ঢাকার আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার ৫০টি থানা এলাকায় গত ১ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪০ দিনে অন্তত ৩৪ জন ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে মামলা করেছেন। সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন শতাধিক ভুক্তভোগী। এসময় ছিনতাইকারীর হাতে নিহত হয়েছেন একজন। গুরুতর জখম হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
রাজধানীর বিভিন্ন থানায় গত আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে ৬৫টি। চলতি বছর ঢাকায় জানুয়ারিতে ছিনতাইয়ের মামলা ২৫, ফেব্রুয়ারিতে ২৬, মার্চে ২৮, এপ্রিলে ১৫, মে মাসে ১৯, জুনে ১৬ ও জুলাইয়ে ১৫টি
সবমিলিয়ে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সাড়ে চার মাসে ছিনতাইকারীর হাতে নিহত হয়েছেন সাতজন। পুলিশ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার কারণে এসব ঘটনা বাড়ছে।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর বিভিন্ন থানায় গত আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে ৬৫টি। চলতি বছর ঢাকায় জানুয়ারিতে ছিনতাইয়ের মামলা ২৫, ফেব্রুয়ারিতে ২৬, মার্চে ২৮, এপ্রিলে ১৫, মে মাসে ১৯, জুনে ১৬ ও জুলাইয়ে ১৫টি।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছরের সঙ্গে এ বছরের তুলনা যথার্থ নয়। চলতি বছরের আগস্ট মাসে পুলিশি কার্যক্রম একেবারেই ভেঙে পড়েছিল। এখনো পুলিশি কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।
ছিনতাই মামলা বেশি চার থানায়
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন সরকারের সামনে যেসব বিষয় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আসে তার মধ্যে অন্যতম আইনশৃঙ্খলা রক্ষা। অভ্যুত্থানের পর পুলিশ থানা থেকে পালিয়ে যাওয়ায় অপরাধ দমন কার্যক্রমে স্থবিরতা এসেছিল। নতুন সরকার ঢাকায় পুলিশের জনবলে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। পুলিশের সর্বোচ্চ পদ আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার পদে পরিবর্তন আনা হয়। তারপরও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হয়নি।
- আরও পড়ুন
- জ্যাকেট-আইডি কার্ড না দেখিয়ে আসামি ধরছে না ডিবি
- আইজিপির বাসভবনে প্রবেশে ‘নিষেধাজ্ঞা’
- আতঙ্কের জনপদ মোহাম্মদপুর, বিষফোড়া ‘জেনেভা ক্যাম্প’
- সড়কে নিয়ম ভাঙার মহোৎসব, ট্রাফিক পুলিশকে ‘থোড়াই কেয়ার’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে বেশি আলোচনায় ছিল মোহাম্মদপুর এলাকা। গত ২ নভেম্বর স্থানীয় বাসিন্দারা থানার সামনে বিক্ষোভও করেন। এরপর সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাব যৌথ অভিযান শুরু করে।
ছিনতাইয়ের মামলার তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ১ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪০ দিনে ঢাকায় সর্বাধিক তিনটি করে ছিনতাই মামলা হয়েছে মোহাম্মদপুর, খিলগাঁও, হাতিরঝিল ও শাহজাহানপুর থানায়। দুটি করে ছিনতাই মামলা হয়েছে হাজারীবাগ, মিরপুর ও শাহআলী থানায়। একটি করে মামলা হয়েছে ১৬টি থানায়।
৬ বছরে ছিনতাইয়ের দেশে যত ছিনতাই মামলা
২০২৪
জানুয়ারিতে ১১৪টি, ফেব্রুয়ারিতে ১২১টি, মার্চে ১৩৮টি, এপ্রিলে ৯৭টি, মে মাসে ১১৫টি, জুনে ১০৩টি, জুলাইয়ে ১০১টি এবং আগস্টে ৭০টি ছিনতাই ও ডাকাতির মামলা হয়েছে। মোট ৮৫৯টি।
২০২৩
জানুয়ারিতে ১০৭টি, ফেব্রুয়ারিতে ৯৭টি, মার্চে ১১১টি, এপ্রিলে ১১৮টি, মে মাসে ৯৫টি, জুনে ১০৫টি, জুলাইয়ে ৯৪টি, আগস্টে ১০৪টি, সেপ্টেম্বরে ১০৬টি, অক্টোবরে ১০৬টি, নভেম্বরে ৭৯টি এবং ডিসেম্বরে ১০৫টি। মোট ১২২৭টি।
২০২২
জানুয়ারিতে ৯১টি, ফেব্রুয়ারিতে ৮৫টি, মার্চে ৯৪টি, এপ্রিলে ১০৭টি, মে মাসে ৮৫টি, জুনে ৮৫টি, জুলাইতে ৯৭টি, আগস্টে ১০৭টি, সেপ্টেম্বরে ১০৯টি, অক্টোবরে ১০২টি, নভেম্বরে ৯২টি এবং ডিসেম্বরে ৭৪টি। মোট ১১২৮টি।
ঢাকার ছিনতাইপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে কারা ছিনতাই করে তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। ডিএমপির প্রত্যেক বিভাগের ডিসি, এডিসি ও এসিকে নজরদারি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।- ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম
২০২১
জানুয়ারিতে ৮৭টি, ফেব্রুয়ারিতে ৬৭টি, মার্চে ৮৫টি, এপ্রিলে ৮০টি, মে মাসে ৮৩টি, জুনে ৮৬টি, জুলাইতে ৬১টি, আগস্টে ৮৪টি, সেপ্টেম্বরে ৮৬টি, অক্টোবরে ৯৪টি, নভেম্বরে ৮২টি এবং ডিসেম্বরে ৭৬টি। মোট ৯৭১টি।
২০২০
জানুয়ারিতে ৮৩টি, ফেব্রুয়ারিতে ৮৭টি, মার্চে ৭৮টি, এপ্রিলে ৩২টি, মে মাসে ৫৯টি, জুনে ৭৯টি, জুলাইতে ৯১টি, আগস্টে ৮৪টি, সেপ্টেম্বরে ১০৫টি, অক্টোবরে ১২০টি, নভেম্বরে ৭৯টি এবং ডিসেম্বরে ৮১টি। মোট ৯৭৮টি।
২০১৯
জানুয়ারিতে ৬৮টি, ফেব্রুয়ারিতে ৪৩টি, মার্চে ৩৯টি, এপ্রিলে ৭১টি, মে মাসে ৮২টি, জুনে ৯২টি, জুলাইতে ৯৬টি, আগস্টে ৭৯টি, সেপ্টেম্বরে ৭৫টি, অক্টোবরে ৯০টি, নভেম্বরে ৯৫টি এবং ডিসেম্বরে ৬৬টি। মোট ৮৯৬টি।
ছিনতাইয়ের কবলে সাংবাদিকরাও
গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক ঢাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে প্রাণ রক্ষার্থে খুইয়েছেন ক্যামেরা, মোবাইল, টাকা আর ব্যাগ। গত ১৩ নভেম্বর দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ফটোসাংবাদিক মো. নাঈমুর রহমান রাত ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে মোহাম্মদপুর থানার বসিলা রোডের তিন রাস্তার সামনে পৌঁছালে চারজন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাতের পর ভয়ভীতি দেখায়। এসময় তার কাছে থাকা নগদ সাত হাজার টাকা, একটি নাইকন ডিএসএলআর ক্যামেরা, একটি নাইকন ক্যামেরার লেন্স, একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে অবশ্য অভিযান চালিয়ে তিনজন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
- আরও পড়ুন
- ঢাকায় চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই ঠেকাতে নাজেহাল পুলিশ
- সেনা-র্যাব-পুলিশ-বিজিবির পোশাক কেনা যায় মার্কেটে, বাড়ছে অস্থিরতা
- আইনশৃঙ্খলায় স্বস্তি ফেরানোই বড় চ্যালেঞ্জ
- পরিবর্তন হচ্ছে জেলা-মেট্রোপলিটন পুলিশের ইউনিফর্ম-লোগো
১৬ ডিসেম্বর ছুটির দিন সন্ধ্যার দিকে রাজধানীর মিরপুর সনি সিনেমা হলের সামনে থেকে মফিজুল ইসলাম সাদিক নামে একজন সংবাদকর্মীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ছিনতাই হয়ে যায়। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, মোবাইলটি ছোঁ মেরে নিয়ে যায় ছিনতাইকারী। আশপাশে চিৎকার করলেও আমার কথা কেউ শোনেনি।’ পরে অবশ্য মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনি থানায় জিডি করেন। তবে এখনো তার মোবাইলটি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
সার্বিক বিষয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ওমর ফারুক বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনোবল ফিরে না আসার সুযোগ নিচ্ছে অপরাধীরা।’
দুটি কারণে ছিনতাইয়ের ঘটনা বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রথমত, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেকেই এসব কাজে যুক্ত হচ্ছেন। দ্বিতীয়ত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখনো পুরোপুরি কার্যকর হয় উঠতে পারেনি। ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ছিতাইনকারীরা ব্যবহার করছে।’
আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর চেষ্টা করছি ঢাকা শহরে চুরি-ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ঘটনা যেন না হয়। এরই মধ্যে ডিএমপির সবগুলো বিভাগ ও গোয়েন্দা বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তারা ছিনতাইকারীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে। গত কয়েকদিনে দুই শতাধিক ছিনতাইকারীকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।- ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, রাজধানীতে ছিনতাই রোধে শেষ রাতে পুলিশি টহল বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় ছিনতাই বেড়েছে, এজন্য আমরা পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছি। শেষ রাতে সাধারণত ছিনতাইটা হয়, সেজন্য শেষ রাতে যাতে টহল বাড়িয়ে দেওয়া হয়। আপনারা যে কথাটা (ছিনতাই বেড়েছে) বলেছেন, এটার সঙ্গে আমিও দ্বিমত করবো না। এটা যাতে কমিয়ে আনা যায়… তবে এটা অ্যালার্মিং কিছু না।
যা বলছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা
এ বিষয়ে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঢাকায় সম্প্রতি চুরি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে র্যাব। র্যাবের প্রত্যেকটি ব্যাটালিয়নে সংশ্লিষ্ট এলাকার অপরাধপ্রবণ জায়গাগুলো নির্ধারণ করা হচ্ছে। কোন কোন এলাকায় কোন সময়ে চুরি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ বেশি হচ্ছে- সে অনুযায়ী টহল কার্যক্রমসহ চেকপোস্ট বাড়ানো হচ্ছে। বিশেষ করে মধ্যরাত এবং ভোরে বাসসহ বিভিন্ন টার্মিনালে যখন যাত্রীরা নামেন, তখন ওইসব এলাকায় চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটছে।’
তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে র্যাব বেশ কয়েকজন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে। বাকিদের গ্রেফতারেও অভিযান চলমান। চুরি-ছিনতাই এবং সব ধরনের অপরাধ নির্মূলে র্যাব সদা প্রস্তুত।’
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এস এন মো. নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঢাকার ছিনতাইপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে কারা ছিনতাই করে তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। ডিএমপির প্রত্যেক বিভাগের ডিসি, এডিসি ও এসিকে নজরদারি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক রাতে তারা গাড়ি নিয়ে মুভে থাকছে এবং তদারকি করছে। এছাড়া ডিএমপি কন্ট্রোলরুম থেকে ওয়ারলেসে পেট্রলগুলোর লোকেশন নেওয়া হচ্ছে এবং তারা সজাগ আছে কি না সেটিও তদারকি করা হচ্ছে।’
ছিনতাইকারীদের জামিনে বের হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যারা এসব ছিনতাইয়ের কাজে অভ্যস্ত তাদের আদালতে পাঠালে তারা অতি সহজেই জামিনে বের হয়ে আসছে এবং আবার ছিনতাইয়ে জড়িয়ে পড়ছে। ঢাকা মহানগরীতে দুই কোটির মতো মানুষের বসবাস। এসব ছিনতাইকারী যেন সহজে জামিন না পায় এজন্য আদালত বা সংশ্লিষ্টদের কাছে অনুরোধ থাকবে।’
জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জাগো জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর চেষ্টা করছি ঢাকা শহরে চুরি-ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ঘটনা যেন না হয়। এরই মধ্যে ডিএমপির সবগুলো বিভাগ ও গোয়েন্দা বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তারা ছিনতাইকারীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে। গত কয়েকদিনে দুই শতাধিক ছিনতাইকারীকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ইদানীং মোবাইল ছিনতাই বেড়েছে। মোবাইল ছিনতাই প্রতিরোধেও পুলিশ মোড়ে মোড়ে কাজ করছে। এছাড়া জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেলে মুহূর্তেই ছুটে যাচ্ছে পুলিশ। তবে সবকিছু মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
টিটি/এএসএ/এএসএম