আইন উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা, হাসনাত-সারজিসের সংহতি
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহিন সরকার। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিতে কমিশন গঠনে গড়িমসি করে সরকার দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে অভিযোগ এনে এ ঘোষণা দেন তিনি।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ ঘোষণা দেন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করার কথা জানান তিনি। কর্মসূচিতে অংশ নিতে মঙ্গলবার সবাইকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সমন্বয়ক মাহিনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সমন্বয়ক সারজিস আলম।
মাহিনের পোস্ট শেয়ার করে হাসনাত লিখেছেন, ‘আমি আমার ভাই মাহিনের পক্ষে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার হতেই হবে। (হ্যাশট্যাগ) আইএমউইথমাহিন।’
সারজিস আলম ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘বিডিআর হত্যাকাণ্ড নিয়ে গঠিত কমিশন বাতিল করায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এমডি মাহিন কমিশন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ঘেরাও করার যে ঘোষণা দিয়েছেন, তার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। আগামীকাল বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেখা হবে, ইনশাআল্লাহ।’
- আরও পড়ুন
বিচারের নামে প্রহসন নয়, হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই: আখতার
রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
কর্মসূচি ঘোষণা করে মাহিন সরকার তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একজন নগন্য অংশীদার হিসেবে আমি মাহিন সরকার বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ভিক্টিম পরিবারগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আগামীকাল (১৭ ডিসেম্বর) আইন উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও করবো। আমার সঙ্গে যদি কেউ না-ও যায়, এমনকি পুরো বাংলাদেশের একজনও যদি আমার পক্ষে না থাকে; তবুও আমি আমার এই দৃঢ় অবস্থান থেকে বিন্দুমাত্র পিছু হটবো না।’
ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সমন্বয়ক সারজিস আলম/ ফাইল ছবি
মাহিন আরও লিখেছেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পরেও বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে না পারা এই অন্তর্বর্তী সরকারের একটি চরম ব্যর্থতা। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিতে কমিশন গঠনে গড়িমসি করে এই সরকার দেশের তামাম জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। যা স্পষ্টতই প্রহসনের শামিল।’
তিনি লিখেছেন, ‘একাত্তরে বাংলাদেশের আপামর মুক্তিকামী জনতার অর্জিত বিজয়কে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত তাদের নিজেদের জয় বলে আখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এমতাবস্থায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে অবহেলা করা এবং ভারতের এমন ইতিহাস বিকৃতির স্পষ্ট প্রতিবাদ না জানানো আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।’
মাহিন তার পোস্টে আরও লিখেছেন, ‘কোনো ভিনদেশি পরাশক্তি কিংবা হাজারও শহীদের রক্তের বিনিময়ে ক্ষমতায় আসীন হওয়া এই অন্তর্বর্তী সরকারও যদি আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তবুও আমি বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিতে আমৃত্যু লড়ে যাবো। এই বিচার নিশ্চিত না করা পর্যন্ত সংস্কার কার্যক্রম কিংবা কমিশন গঠনের নামে দীর্ঘসূত্রতার কোনো পদক্ষেপ আমি গ্রাহ্য করবো না। আগামীকাল বেলা ১১টায় সচেতন ছাত্র-নাগরিকের সঙ্গে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেখা হবে ইনশাআল্লাহ।’
এনএস/কেএসআর