শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ন্যাশনাল মেডিকেল, সোহরাওয়ার্দী ও নজরুল কলেজে ব্যাপক হামলা-ভাঙচুর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫৮ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০২৪
ন্যাশনাল মেডিকেলে হামলা ও ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

‘ভুল চিকিৎসায়’ অভিজিৎ হালদার নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে হামলা ও ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এসময় বিক্ষুদ্ধরা সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজেও হামলা-ভাঙচুর চালায়। এতে ঢাকার ৩৫টিরও বেশি কলেজের শিক্ষার্থী অংশ নেন।

অভিজিৎ হালদার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের (ডিআরএমসি) শিক্ষার্থী। চিকিৎসায় অবহেলার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। এছাড়া অভিজিতের মৃত্যুর বিচার চাইতে গিয়ে তারা হামলার শিকার হয়েছেন বলেও দাবি করা হয়েছে।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে ঢাকার ৩৫টিরও বেশি কলেজের শিক্ষার্থী ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে জড়ো হন। তারা হাসপাতালের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেন এবং প্রতিষ্ঠানের নামফলক ভেঙে ফেলেন।

এর আগে মুরগীটোলা মোড় এবং রায়সাহেব বাজারে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে তারা পার্শ্ববর্তী সোহরাওয়ার্দী কলেজেও ভাঙচুর চালান। হামলা চালান কবি নজরুল কলেজেও।

ন্যাশনাল মেডিকেল, সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজে হামলা-ভাঙচুর

 

জানা গেছে, ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়ে গত ১৬ নভেম্বর ন্যাশনার মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন নগেন হালদার ও মনিমালা হালদার দম্পতির সন্তান অভিজিৎ হালদার। দুদিন পর হাসপাতালে মারা যান তিনি। এরপর চিকিৎসায় অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগ তুলে ২০ ও ২১ নভেম্বর হাসপাতাল অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন

তাদের অভিযোগ, কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর আক্রমণ করেন।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার হাসপাতালে হামলায় ঢাকা কলেজ, ঢাকা আইডিয়াল কলেজ, সিটি কলেজ, গিয়াসউদ্দিন কলেজ, সরকারি তোলারাম কলেজ, ইম্পেরিয়াল কলেজ, বোরহানউদ্দিন কলেজ, বিজ্ঞান কলেজ, দনিয়া কলেজ, লালবাগ সরকারি কলেজ, উদয়ন কলেজ, আদমজী, নটরডেম, রাজারবাগ কলেজ, নূর মোহাম্মদ, মুন্সি আব্দুর রউফ কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী কলেজ, গ্রিন লাইন পলিটেকনিক, ঢাকা পলিটেকনিক, মাহবুবুর রহমান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিসহ রাজধানীর প্রায় ৩৫টির বেশি কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।

এদিকে, চিকিৎসায় চিকিৎসক কিংবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনো অবহেলা ছিল না দাবি করেছেন ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) ডা. রেজাউল হক।

ন্যাশনাল মেডিকেল, সোহরাওয়ার্দী ও কবি নজরুল কলেজে হামলা-ভাঙচুর

তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, চিকিৎসা চলাকালীন তার (অভিজিৎ হালদার) অবস্থার অবনতি হলে রোগীর অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেষ্টার পরও ১৮ তারিখ তিনি মারা যান। এখানে আমাদের কোনো ত্রুটি কিংবা অবহেলা ছিল না।

তিনি বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত্যু-পরবর্তী মরদেহ হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে রোগীর আত্মীয়কে বুঝিয়ে দেন এবং রোগীর সম্পূর্ণ বিল স্থগিত রাখা হয়।

ডা. রেজাউল বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা হাসপাতাল ঘেরাও কর্মসূচি পালন করলে পরিচালকের কক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ছাত্র প্রতিনিধি ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়। সভা থেকে মৃত্যুর বিষয়ে ১১ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি মহল কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্তিমূলক, অসত্য ও উসকানিমূলক তথ্য দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হাসপাতালের পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন এই চিকিৎসক।

এএএম/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।