চট্টগ্রামে ৩ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৮:৪৬ এএম, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রাম নগরীতে প্রায় ৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। রোববার (১৭ নভেম্বর) এসব প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়।

জানা গেছে, ১৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭ তলা বিশিষ্ট হালিশহরে মহব্বত আলী সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবন, ২৬ নং হালিশহর ওয়ার্ডে ১৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭ তলা কিচেন মার্কেট কাম কমিউনিটি সেন্টার প্রকল্প এবং ৩৭ নং ওয়ার্ডস্থ জরিনা মফজল কলেজ সংলগ্ন ৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২ দশমিক ৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের রোডসহ ড্রেন উন্নয়ন কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মেয়র।

আলহাজ মহব্বত আলী সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে নৈতিক শিক্ষার ওপর জোরারোপ করে মেয়র বলেন, আমরা যদি নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হই তাহলে সমাজকে আমরা কিছু দিতে পারবো না। পড়াশোনা করে আজকে আমি ডাক্তার হয়েছি, সব ঠিক আছে। কিন্তু ডাক্তার যখন মানবিক হতে না পারবে, একটা গরিব রোগীকে চিকিৎসা বিনামূল্যে দিতে না পারবে তখন এই শিক্ষার কোনো দাম নেই। একজন শিক্ষক একটা মেধাবী গরিব ছাত্রকে বিনামূল্যে পড়াতে না পারলে তার শিক্ষার কোনো দাম নেই। এভাবে প্রতিটি পেশাতে আমাদেরকে মানবিক যদি হতে হয়, আমাদেরকে যদি সামাজিক হতে হয়, আমাদেরকে যদি সমাজের সত্যিকার দায়িত্ব পালন করতে হয় তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।

শিক্ষাখাতে দেশ পিছিয়ে গেছে দাবি করে মেয়র বলেন, গত ১৬টি বছর আমরা দেখেছি শিক্ষার নামে বিভিন্ন ধরনের নৈরাজ্য হয়েছে। চাঁদাবাজি হয়েছে। আমার ছাত্র-ছাত্রী ভাই-বোনদের বইয়ে বানোয়াট ইতিহাস পড়ানো হয়েছে। এখানে শিক্ষক-শিক্ষিকা যারা আছেন মনে রাখবেন যে, বিগত সরকারের সময় মাদকাশক্তিতে অনেক ছেলে নষ্ট হয়ে গেছে। কিশোর গ্যাং কালচার তৈরি হয়েছে। আপনাদেরকে আমাদের সন্তানদেরকে বাঁচাতে হবে। তাদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখবেন। তাদের নখ পরিষ্কার আছে কি না, তাদের চুল ঠিক আছে কি না, হাইজিন মেন্টেন করছে কি না ছাত্ররা।সব চেক করা আপনাদের দায়িত্ব। তাদেরকে সুস্থ্য নাগরিক হিসেবে গড়তে হবে আপনাদের।

কিচেন মার্কেট কাম কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে মেয়র বলেন, যেহেতু কোনো কমিউনিটি সেন্টার বা বড় মার্কেট এই এলাকায় ছিল না সেহেতু আমরা চমৎকার একটা মার্কেট এই এলাকায় করে দিচ্ছি যাতে করে এলাকাবাসীর সুবিধা হয়। এই আধুনিক স্থাপনা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি করবে।

বৃষ্টির পানির ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, রেইনওয়াটার হারভেস্ট সম্পর্কে আমি আপনাদের কিছু বলতে চাই। রেনওয়াটার হারভেস্টিং মানে বৃষ্টির পানি যেটা পড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় সেটাকে আমরা একটা বৈজ্ঞানিক উপায়ে ধারণ করে এই পানিটা রিসাইক্লিং করে ব্যবহার করতে পারি। পানির কিন্তু সংকট হবে ভবিষ্যতে। এজন্য ওয়াসার পানিকে আমরা নষ্ট করবো না। আমরা যত্রতত্র এই যে পানি নষ্ট করছি এটা কিন্তু আমাদের জন্য পরবর্তী সময়ে গিয়ে সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। কারণ পানি আমাদেরকে সেভ করতে হবে। পানির অপর নাম জীবন। আজকে আমরা হয়তো মনে করছি যে পানি তো আছে দেদারসে খরচ করি। এখন একটা নলকূপ লাগাতে গিয়ে দেখবেন অনেক গভীরে চলে যেতে হচ্ছে। তার অর্থ হচ্ছে এটা হয়তো গুড সাইন না। কাজেই পানির স্তর যত নিচে যাবে তত মনে করবেন যে ভূগর্ভে পানি কমে যাচ্ছে। ভূগর্ভে পানি কমে যাওয়া এটা রিস্কি। এজন্য বিল্ডিং নির্মাণের ক্ষেত্রে যে বিল্ডিং কোডগুলো আছে সেগুলো মেনে চলবেন। আপনারা নিয়ম মেনে চললে দেখবেন যে জলাবদ্ধতা হবে না। নেক্সট জেনারেশনের জন্য আপনাদের চিন্তা করতে হবে।

মেয়র ২৬ নং উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীদের হাজিরা নেন এবং বিভিন্ন এলাকায় নাগরিকদের কাছে এলাকার বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে মতবিনিময় করেন। এরপর মেয়র নগরীর সিআরবি এলাকার ভাঙা সড়ক মেরামতের কাজ পরিদর্শন করেন এবং প্রকৌশল বিভাগকে দ্রুত নগরীর ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো মেরামত করার নির্দেশ দেন।

এসময় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমি, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেম, শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিল্লুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি, উপপ্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব শর্মা, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরীসহ (মারুফ) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এমডিআইএইচ/এসএনআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।