উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী
নিরাপদ সড়ক গড়তে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সড়কসমূহ নিরাপদ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম। তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটিসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করছি। বিশেষত ডিএনসিসি ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিসের বৈশ্বিক সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এর আওতায় ঢাকা উত্তরের জনগণের জন্য নিরাপদ সড়ক গড়ে তুলতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
ডিএনসিসির উদ্যোগে সড়কে হতাহতদের স্মরণ ও ঢাকার সড়ক নিরাপদ করে তুলতে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণে রোববার (নভেম্বর ১৭) নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে গোলটেবিল সভায় এ কথা বলেন তিনি।
সড়কে হতাহতদের স্মরণে বৈশ্বিক দিবস ‘ওয়ার্ল্ড ডে অফ রিমেমব্রান্স ফর রোড ট্র্যাফিক ভিকটিমস’ উপলক্ষে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি (বিআইজিআরএস) ও ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর কারিগরি সহায়তায় এ সভা হয়। এ বছরের দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে সেই দিন- যে দিনে রোড ক্র্যাশের কারণে পরিবারের সদস্য মারা গেছেন বা চিরতরে পঙ্গুত্বের শিকার হয়েছেন।
ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিআইজিআরএস-এর ইনিশিয়েটিভ কোঅর্ডিনেটর আবদুল ওয়াদুদ। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভাইটাল স্ট্রাটেজিস এর কারিগরি পরামর্শক আমিনুল ইসলাম সুজন।
ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটির (ডিটিসিএ) সিনিয়র রোড সেফটি স্পেশালিস্ট মামুনুর রহমান বলেন, ঢাকায় মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে যাত্রী সাধারণের দুর্ভোগ কমাতে ডিটিসিএ কাজ করছে। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি হলে পথচারীদের সড়ক পারাপার ও যানবাহনের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার (ট্রাফিক-ঢাকা উত্তর) সুফিয়ান আহমেদ বলেন, সড়ক নিরাপদ করতে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ ও বিধিমালা ২০২২ অনুযায়ী পুলিশকে যে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে তার আলোকে ডিএমপি কাজ করে যাচ্ছে। সড়ক নিরাপদ করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। যানবাহনগুলো যদি আইন মেনে চলে তাহলে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহজ হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল কনসালটেন্ট (এনসিডি) ওয়াতিন আলম বলেন, সড়কে কোনো ক্র্যাশ হওয়ার পর দ্রুততার সঙ্গে আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে অকালমৃত্যু ও পঙ্গুত্ব অনেক কমানো সম্ভব। এছাড়া রোড ক্র্যাশ পরবর্তী ব্যবস্থাপনায় মানুষের সচেতনতা জরুরি বলে তিনি মনে করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকার সড়কে সন্তান হারানো মা বিএএফ শাহীন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রওনাক করিম। তিনি তার ছেলে সৌভিক অর্জুনকে (৪২) নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। তিনি তার সন্তানের মৃত্যুর পর ডেথ সার্টিফেকেট পাওয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন বলে উল্লেখ করেন।
সভায় উপস্থিত শিক্ষক রওনাক করিমের সন্তান সৌভিক অর্জুন (৪২) ও রেবেকা সুলতানার স্বামী মো. আরিফুল ইসলামসহ (৪১) ঢাকা সড়কে রোড ক্র্যাশে নিহতদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করার মাধ্যমে গোলটেবিল সভা শেষ হয়।
এসআরএস/এমআইএইচএস/এএসএম