বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে এজেন্সি মালিকদের ২ প্যাকেজ ঘোষণা
আগামী বছর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালনে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন এজেন্সি মালিকরা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকদের ব্যানারে এজেন্সি মালিকরা এ প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর বাতিল হওয়া কমিটি মূলত এ হজ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। প্যাকেজ ঘোষণা করেন হাবের সদ্য সাবেক কমিটির সভাপতি ফারুক আহমেদ সরদার।
খাবার খরচ যুক্ত করে সাধারণ হজ প্যাকেজের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার এবং বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন
গত ৩০ অক্টোবর সরকারি হজ প্যাকেজ ঘোষণার সময় ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, বেসরকারি মাধ্যমের সাধারণ হজ প্যাকেজ মূল্য ৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৬ টাকা। সাধারণ হজ প্যাকেজ গ্রহণ করে এজেন্সি একটি অতিরিক্ত বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে।
ফারুক আহমেদ সরদার বলেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য দুটি হজ প্যাকেজ করা হয়েছে। সাধারণ হজ প্যাকেজ ও বিশেষ হজ প্যাকেজ। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য কোরবানি ছাড়া সাধারণ হজ প্যাকেজের মূল্য মোট ৫ লাখ ২৩ হাজার টাকা এবং বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
হাবের সাবেক মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার বলেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা করা বেসরকারি হজ প্যাকেজ প্রত্যাখ্যান করার সুযোগ নেই। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে লাইসেন্স নিয়ে আমরা কাজ করি। সরকারের প্যাকেজ গ্রহণ করে এজেন্সি মালিকদের পক্ষ থেকে আরেকটি প্যাকেজ নীতিগত ও আইনগতভাবে দেওয়ার সুযোগ আছে। সেটিই আমরা উপস্থাপন করেছি। আমরা খাবার খরচ যুক্ত করে আমাদের প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। খাবার খরচ ছাড়া পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ হয় না।
আগামী বছর হজে যেন সরকারিভাবে দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষিত সাশ্রয়ী সাধারণ প্যাকেজ-১ অনুযায়ী খরচ ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৭৮ হাজার ২৪২ টাকা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রায় প্রত্যেক হজযাত্রীর চলতি বছরের প্যাকেজ-১ এর চেয়ে এক লাখ ৯ হাজার ১৪৫ টাকা কম খরচ হবে। অন্য প্যাকেজে (প্যাকেজ-২) খরচ ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা।
এ বছর সরকারিভাবে হজে যেতে সাধারণ প্যাকেজে ৫ লাখ ৮৭ হাজার ৩৮৭ টাকা খরচ হয়েছিল। বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ছিল ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা।
চলতি বছর বেসরকারিভাবে এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে সাধারণ প্যাকেজে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ হয় ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৮০০ টাকা। বিশেষ প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনে খরচ হয়েছিল ৬ লাখ ৯৯ হাজার ৩০০ টাকা।
ফারুক আহমেদ সরদার বলেন, হাবের পক্ষ থেকে বারবার বিমানভাড়ার যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণের জন্য আবেদন করা হয়। আমরা প্রত্যাশা করছি ধর্ম উপদেষ্টা হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া কমানোর বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। বিমানভাড়া কমানো হলে হজ প্যাকেজের মূল্যও কমানো হবে। তাছাড়া হজ সংক্রান্ত সব সভায় হাব বিমানভাড়া কমানোর দাবি জোড়ালোভাবে উত্থাপন করে। হাবের জোড়ালো দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ও যৌক্তিক কারণে ২০২৫ সালের হজে বিমান ভাড়া এক লাখ ৬৭ হাজার ৮২০ টাকা নির্ধারণ হলেও আমরা এটি যৌক্তিক মনে করি না।
এ বছর শতভাগ হজযাত্রীর (সিলেট ও চট্টগ্রাম বাদে) সৌদি অংশের ইমিগ্রেশন বাংলাদেশেই সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে সাবেক হাব সভাপতি বলেন, মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভের আওতায় হজযাত্রীদের কল্যাণে প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন বাংলাদেশেই সম্পন্ন করার জন্য ডেডিকেটেড (শুধু হজযাত্রী পরিবহন) হজ ফ্লাইট হওয়া বাধ্যতামূলক। হজযাত্রী পরিবহনে ডেডিকেটেড ফেরি ফ্লাইটের হিসাব করেই সর্বোচ্চ মূল্যে বিমানভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে ডেডিকেটেড ফেরি ফ্লাইটের ভাড়া নিলেও এয়ারলাইন্সগুলো শিডিউল ফ্লাইটেও হজযাত্রী পরিবহন করেছে।
‘কিন্তু হজযাত্রীদের প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন ঢাকায় সম্পন্ন করতে হলে অবশ্যই সব হজ ফ্লাইট ডেডিকেটেড হতে হবে। প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশনের জন্য ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইট থাকা বাধ্যতামূলক।’ যোগ করেন তিনি।
তাই সব হজ ফ্লাইট ডেডিকেটেড হতে হবে। কোনোভাবেই কোনো শিডিউল ফ্লাইটে হজযাত্রী পরিবহন করা যাবে না বলেও দাবি জানান হজ এজেন্সি মালিকরা।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী বছরের ৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছরের মতো আগামী বছরও (২০২৫ সাল) বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে ১০ হাজার সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং বাকি হজযাত্রীরা যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে।
আরএমএম/ইএ/এমএস