নিজামীর রায়ের কপি ট্রাইব্যুনালে


প্রকাশিত: ১১:১৩ এএম, ০৯ মে ২০১৬

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউয়ের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি ট্রাইব্যুনালে পৌঁছেছে। সোমবার বিকেলে আপিল বিভাগের রেজিষ্ট্রার অরুণাভ চক্রবর্তী ও ডেপুটি রেজিষ্ট্রার মেহেদি হাসান রায়ের কপি ট্রাইব্যুনালে নিয়ে যান।

এর আগে, সোমবার দুপরে আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের চার বিচারপতি স্বাক্ষর করার পর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ২২ পৃষ্টার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়।

রায় প্রকাশের ফলে নিজামীর ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকল না। এখন তিনি শুধু রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার সুযোগ পাবেন।

নিজামীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেছেন, যারা ইসলামী আন্দোলন করেন তারা শহীদী তামান্না নিয়ে কাজ করে। ইসলামী আন্দোলনের সৈনিকরা ফাঁসির রশিতে ভয় পান না। নিজামী আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে মাথা নত করবেন না, তাই রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই আসে না।

উল্লেখ্য, গত ৫ মে (বৃহস্পতিবার) প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এক শব্দেই এ রায় ঘোষণা করেন। বেলা সাড়ে ১১টায় এজলাসে এসে প্রধান বিচারপতি শুধু বলেন, ‘ডিসমিসড’।

বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

এর ফলে একাত্তরের হত্যা, ধর্ষণ এবং বুদ্ধিজীবী গণহত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর আমিরের দণ্ড কার্যকরে আর কোনো আইনি বাধা থাকল না। নিয়ম অনুযায়ী একাত্তরের বদরপ্রধান নিজামী এখন কেবল নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনার কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে পারবেন। রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টির নিষ্পত্তি হলেই সরকার দণ্ড কার্যকর করবে।

এদিকে, সাবেক বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মন্ত্রী নিজামীকে গতরাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়েছে।

নিজামী হলেন পঞ্চম মানবতাবিরোধী, যার সর্বোচ্চ সাজার রায় কার্যকরের পর্যায়ে এসেছে। আপিল বিভাগের এই বেঞ্চ গত ৬ জানুয়ারি নিজামীর আপিলের রায় ঘোষণা করেন। ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া প্রাণদণ্ডের সাজাই তাতে বহাল থাকে।

জামায়াত আমির নিজামী একাত্তরে ছিলেন দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নাজিমে আলা বা সভাপতি এবং সেই সূত্রে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত আল বদর বাহিনীর প্রধান। তার পরিকল্পনা, নির্দেশনা ও নেতৃত্বেই যে আলবদর বাহিনী বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন করেছিল- এই মামলার বিচারে তা প্রমাণিত হয়।

গত ২৯ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার আইনজীবীরা রিভিউ আবেদন করেন। রিভিউতে ৭০ পৃষ্ঠার মূল রিভিউর আবেদনের সঙ্গে  মোট ২২৯ পৃষ্ঠার নথিপত্রে দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে ৪৬ টি (গ্রাইন্ড) যুক্তি তুলে ধরা হয়। রিভিউতে অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড হলেন, আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুলর আবেদীন তুহিন।

রিভিউ আবেদন করার পরের দিন ৩০ মার্চ রিভিউ আবেদনটির দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন জানান রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিনই এ আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন মির্জা হোসেইন হায়দারের আদালত।

এফএইচ/এআরএস/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।