আনসার ডিজি

ভিডিপি বাহিনীর সদস্যদের উসকানি দিচ্ছে স্বার্থান্বেষী মহল

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২৫ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ বলেছেন, বর্তমানে ভিডিপি বাহিনীর কিছু সদস্যকে ভুল তথ্যের মাধ্যমে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাদের উসকানি দিচ্ছে।

তিনি বলেন, সব স্বেচ্ছাসেবী সদস্যকে আইনসিদ্ধ নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করার জন্য এবং বাহিনীর শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদরদপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

আনসার মহাপরিচালক বলেন, বর্তমানে ভিডিপি বাহিনীর কিছু সদস্যকে ভুল তথ্যের মাধ্যমে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে, বিশেষ করে তাদের নিয়োগের ধরন, মূল কাজ এবং বাহিনী থেকে আইনগত অধিকার বিষয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল উসকানি দিচ্ছে। সব স্বেচ্ছাসেবী সদস্যকে আইনসিদ্ধ নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করার জন্য এবং বাহিনীর শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

আনসার ও ভিডিপি বাহিনী তার সুনামের সঙ্গে দেশের উন্নয়নে এককাতারে কাজ করে যাচ্ছে এবং নতুন বাংলাদেশ গঠনে এক সক্রিয় অংশীদার হিসেবে সর্বদা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, ভিডিপি দেশের সর্ববৃহৎ স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী হিসেবে আর্থসামাজিক উন্নয়নে অব্যাহতভাবে অবদান রেখে আসছে। ভিডিপি গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল গ্রামভিত্তিক স্বনির্ভর সমাজ প্রতিষ্ঠা, সামাজিক উন্নয়ন, এবং জননিরাপত্তায় স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ভূমিকা রাখা। ১৯৭৬ সালে গঠিত হওয়া এ বাহিনী, ১৯৯৫ সালের ভিডিপি আইনের মাধ্যমে একটি সুশৃঙ্খল কাঠামো পায় এবং জনগণের সেবায় আরও কার্যকরভাবে অবদান রাখার সুযোগ লাভ করেন।

চলতি ২০২৪ সালের এপ্রিলে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে, যা স্বেচ্ছাসেবী ভিডিপি সদস্যদের দায়িত্বের পরিধি, নিয়োগ এবং মেয়াদ স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে। এ নীতিমালার মাধ্যমে ভিডিপির মূল চেতনার সঙ্গে তাদের কর্মকাণ্ডকে আরও দৃঢ়ভাবে যুক্ত করা হয়েছে। ৮০-এর দশকে খাল খনন, কৃষিভিত্তিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে সামাজিক সুরক্ষা, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং খাদ্য নিরাপত্তায় ভিডিপি সদস্যরা তাদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। ‘অপারেশন রেলরক্ষা’, ‘অপারেশন সুরক্ষিত যাতায়াতসহ বিভিন্ন জাতীয় প্রয়োজনে ভিডিপির স্বেচ্ছাসেবীরা জনগণের পাশে থেকে সুনাম অর্জন করেছে। নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন বা নির্দিষ্ট সময়ে ভাতাভিত্তিক দায়িত্বের মধ্যে তাদের ভূমিকা সীমাবদ্ধ না রেখে, তারা জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছেন।

মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ আরও বলেন, ভিডিপি আইন ও নীতিমালা অনুযায়ী, সদস্যদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে বাহিনী নিরলসভাবে কাজ করছে। মৌলিক প্রশিক্ষণকে আরও আধুনিক ও আকর্ষণীয় করতে অডিও-ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট সংযোজন করা হচ্ছে, যা প্রশিক্ষণকে সহজবোধ্য ও কার্যকরী করে তুলবে। কর্মদক্ষ সদস্যদের মধ্যে যারা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে বিশেষ অবদান রাখবে তাদেরকে সাধারণ আনসার পদে অগ্রাধিকার দিয়ে নিয়োগের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

ভবিষ্যৎ কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, পিকেএসএফ, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে আনসার-ভিডিপি কারিগরি প্রশিক্ষণের মানোন্নয়নকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে, যোগ করেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ডিজি।

মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব বলেন, এ প্রশিক্ষণ সমাপ্তির পর স্বাবলম্বী হতে আর্থিক সহায়তার জন্য ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক সদস্যদের পাশে থাকবে, যেখান থেকে জামানতবিহীন ঋণ সুবিধা পাওয়া যাবে। ভিডিপি দলনেতা এবং দলনেত্রীদের গুণগত ও মানগত প্রশিক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট কিছু সূচক নির্ধারণ করা হয়েছে যাতে তৃণমূল পর্যায়ে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং সামাজিক সুরক্ষায় তারা আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে, আনসার ও ভিডিপি বাহিনী দেশের মানবসম্পদ উন্নয়ন, আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি, ডিজিটালাইজেশন এবং সদস্যদের রাজনীতিমুক্ত সামাজিক জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বাহিনীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি প্রশিক্ষণ ও পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

টিটি/এমএএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।