প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার নিশ্চিতের তাগিদ
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি শুধু সহমর্মিতা নয় তাদের অধিকার নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন আলোচকরা। এ লক্ষ্যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন ও তাদের অধিকার রক্ষায় সরকারসহ সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর মিরপুরে ব্লাইন্ড এডুকেশন অ্যান্ড রিহেবিলিটেশন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (বার্ডো) আয়োজিত এক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
এছাড়া প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিষয়ে সামাজিক ট্যাবু ও স্টিগমা কাটিয়ে উঠতে জনসচেতনতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বার্ডোর উপ-ব্যবস্থাপক ফিরোজা খাতুন। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনে ৪৪টি ধারা এবং ১৬টি তফসিল রয়েছে। এই আইনে ১৬ নং ধারায় প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর ২১টি অধিকারের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া ১৭ থেকে ২৫ পর্যন্ত ৫টি কমিটি সম্পর্কে বলা হয়েছে এবং কমিটিগুলোর দায়িত্ব ও কার্যাবলী উল্লেখ রয়েছে। এগুলো হলো, জাতীয় সমন্বয় কমিটি, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি, শহর কমিটি। এই কমিটির মিটিংগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। সঠিকভাবে এই মিটিংগুলো কার্যকর হলে প্রতিবন্ধীরা উপকৃত হবে।
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চাকরি প্রসঙ্গে বলা হয়, এই আইনের ৩৫ নং ধারায় প্রতিবন্ধিতার কারণে নিয়োগ না পাওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে, আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও, প্রতিবন্ধিতার ধরন অনুযায়ী, উপযোগী কোন কর্মে নিযুক্ত হতে কোন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে বঞ্চিত বা তাহার প্রতি বৈষম্য করা বা তাহাকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব (রেক্টর) ড. মো. ওমর ফারুক বলেন, আমাদের প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে সম্ভাবনা আছে তা যদি প্রকাশের সুযোগ করে দিতে পারি তাহলে তাদের পাশাপাশি দেশ এগিয়ে যাবে। তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (আইন ও সংস্থা অধিশাখা) এরশাদ হোসেন খান প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে 'মুক্তা' পানি বিপণন ও উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগের কথা জানান। এছাড়া সাম্প্রতিক বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের আহতদের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি সুচিকিৎসা নিশ্চিত ও পুনর্বাসনে সরকার কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বার্ডোর নির্বাহী পরিচালক (একুশে পদকপ্রাপ্ত) মো. সাইদুল হক। তিনি বলেন, বার্ডো অত্যাধুনিক ব্রেইল প্রেস স্থাপন করেছে এবং মোট ৬টি ব্রেইল প্রিন্টার আছে। আবাসিক বিদ্যালয়ে ৬০ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র আছে। এছাড়া বার্ডো মেয়েদের জন্য একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা রয়েছে।
বার্ডোর সহ-সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাইটসেভারস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর অমৃতা রেজিনা রোজারিও, সিবিএম গ্লোবালের বাংলাদেশের প্রতিনিধি দেওয়ান মাহফুজ ই মওলা, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের পরিচালক (পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও তথ্যপ্রযুক্তি) ও যুগ্মসচিব মো. আজমুল হক, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহাকারী অধ্যাপক ডা. নওরোজ ফেরদৌস প্রমুখ।
এএএম/এসআইটি/এএসএম