আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শিপুর ওপর হামলাকারীদের বিচারের দাবি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৮:৩৬ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী রবিউস সানী ওরফে শিপুর (২২) ওপর হামলাকারী আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীসহ জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান শিপু। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী শিপু। এ সময় তিনি নিজের ও তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানান।

শিপু বলেন, আমি রবিউস সানী শিপু, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) এর ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ সেমিস্টারের একজন নিয়মিত ছাত্র। ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রথম থেকেই সক্রিয় ছিলাম। আমি গত ১৬ জুলাই থেকে নিজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অন্যান্য সহপাঠীদের সঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের বৈষম্যমূলক নীতি ও ছাত্র নিপীড়নের বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলি। তৎকালীন সরকার ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অপতৎপরতায় বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে নিজ এলাকা সাং- মধুপুর, ডাকঘর-ধামসোনা-১৩৪৯, থানা- আশুলিয়া, জেলা- ঢাকাতে চলে যাই এবং সেখানে আন্দোলনে সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা রাখি। গত ৪ আগস্ট আনুমানিক বিকেল ৩টায় আমরা ডেইরি গেট হতে বাইপাইলের দিকে মিছিল নিয়ে যেতে থাকি।

মিছিলে চারজন গুলিবিদ্ধ হন জানিয়ে তিনি বলেন, মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ায় বেশিরভাগ সময় আমাকে সামনেই থাকতে হয়েছে। ওই দিন আনুমানিক বিকেল ৪ টার দিকে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী বাইপাইলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত গুলি ছোড়ে। আন্দোলনের ফ্রন্ট লাইনে অবস্থান করায় বাইপাইল জামে মসজিদের ছাদের ওপর থেকে আমাকে গুলি করে, আমার পেটের একপাশ দিয়ে গুলি ঢুকে আরেক পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। পরপর আমার শরীরে এবং পায়ে চারটি গুলি করে, সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। তখন আমার সহযোদ্ধারা সরকারি-বেসরকারি তিন/চারটি হাসপাতাল ঘুরে আমাকে চিকিৎসাসেবা দিতে ব্যর্থ হন। অতঃপর আমার ইউনিভার্সিটির শিক্ষক এবং সহযোদ্ধাদের হস্তক্ষেপে ঢাকা মেডিকেলে টানা ৬ ঘণ্টার অপারেশন করে শরীর থেকে চারটি গুলি বের করা হয়। কিডনি, ইউরোলজি ড্যামেজসহ আমি বিকলাঙ্গ হয়ে যাই।

তিনি আরও বলেন, সামান্য সুস্থ হওয়ার পর স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, ইউজিসির চেয়ারম্যান এবং সচিবসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা করি। যাহার ‘মামলা নম্বর-২৬, তারিখ- ১১/০৯/২০২৪ ধারা-১৪৭/১৪৮/১৫৩/১২০ (খ)/৩২৩/৩২৬/৩০৭/১০৯/৩৪ পেনাল কোড’। পূজার বন্ধে আমি গ্রামের বাড়ি আশুলিয়াতে যাই এবং ১৪ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ফারুকনগর ইসমাইল বেপারী হাইস্কুল মাঠে হাঁটতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে। আমাকে উপর্যুপরি আঘাত করায় জ্ঞান হারাই। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এমতাবস্থায় আমার মা, আমি, পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার ওপর হামলাকারী আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীসহ জড়িতদের অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি প্রার্থনা জানাচ্ছি।

এমএইচএ/এমএএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।