খাদ্য সরবরাহে ঘাটতি হবে না, তবে অপচয় কমানো জরুরি: কৃষি উপদেষ্টা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২১ পিএম, ১৬ অক্টোবর ২০২৪
বিশ্ব খাদ্য দিবসের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

কৃষি খাতে উৎপাদন নির্বিঘ্ন করতে সরকার সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি দেশে সবার জন্য খাদ্য সরবরাহে কোনো ঘাটতি হবে না। তবে, আমাদের এ প্রত্যাশা সহজেই পরিপূর্ণতা পাবে যদি আমরা বড় উদ্বেগের জায়গা, খাদ্যপণ্যের সংগ্রহোত্তর ক্ষতি এবং অপচয় কমাতে পারি।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি উপদেষ্টা বলেন, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, ক্রমহ্রাসমান কৃষিজমি ও প্রাকৃতিক সম্পদ, জলবায়ু পরিবর্তন, নগরায়ন কিংবা অর্থনৈতিক উন্নয়নের কারণে আমাদের খাদ্য ও পুষ্টির চাহিদা পূরণ আজ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবখাতে দৃঢ় প্রত্যয়ে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে কৃষি উন্নয়ন একটি অগ্রগতির ধারা অনুসরণ করেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এ দেশের প্রায় সাড়ে ৭ কোটি মানুষের খাদ্য যে জমিতে উৎপন্ন হতো, এখন জমির পরিমাণ কমলেও প্রায় ১৮ কোটি মানুষকে খাওয়ানো সম্ভব হচ্ছে। আমরা বিশ্বে মধ্যম মাত্রার ক্ষুধার দেশ হিসেবে পরিচিত এবং বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে আমাদের সম্প্রতি তিন ধাপ অবনমন হয়েছে। দেশের জনসংখ্যার একটি অংশ বিশেষভাবে শিশুদের অপুষ্টিতে ভোগার চিত্র আমাদের সাফল্যকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। এ বিষয়গুলো লক্ষ্য রেখে কৃষি খাতকে আরও গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এখানে আরও একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো- খাদ্য উৎপাদনে আমাদের সাফল্য মাঝে মধ্যেই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। বিশেষ করে যখন আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব এবং প্রাকৃতিক এবং মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়। বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় কৃষি অবকাঠামো ও ফসল, গবাদিপশু ও মাছের খামার ক্ষতিগ্রস্ত করে। সাম্প্রতিক বন্যায় আমরা এটা প্রত্যক্ষ করেছি যে, কৃষি উৎপাদন কোন কোন এলাকায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, যা উৎপাদন হ্রাস করে আমাদের খাদ্য প্রাপ্তির অধিকার সীমিত করে তুলবে।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আধুনিক ফসল সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং সুশৃঙ্খল ও আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে এই ক্ষতির বড় একটা অংশ কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কমিয়ে আনা সম্ভব। আমি এ খাতে বিনিয়োগে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে একক এবং যৌথ উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

দেশে খাদ্যপণ্য উৎপাদনে আমরা যে সাফল্য দেখিয়েছি তা নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, তবে, উৎপাদনের পাশাপাশি আমরা খাদ্যপণ্যের সংগ্রহোত্তর ক্ষতি এবং অপচয় কমানোর ক্ষেত্রে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিতে পারিনি। আর তা আমাদের অর্জনকে যেমন ম্লান করছে তেমনই খাদ্যের অধিকারকে করছে ঝুঁকিপূর্ণ। তাই, দেশের সব মানুষের খাদ্যের অধিকার নিশ্চিত করতে আজ প্রয়োজন ফুড ভ্যালু চেইনের প্রয়োজনীয় অংশে বিনিয়োগ এবং একটি তথ্যনির্ভর সামাজিক আন্দোলন। আজ এই সেমিনার আয়োজনের মধ্য দিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় সে আন্দোলন শুরু করছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য সচিব মাসুদুল হাসান ও বিশ্ব খাদ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. জিয়াওকুন শি।

এনএইচ/কেএসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।