আইনশৃঙ্খলায় স্বস্তি ফেরানোই বড় চ্যালেঞ্জ

তৌহিদুজ্জামান তন্ময়
তৌহিদুজ্জামান তন্ময় তৌহিদুজ্জামান তন্ময় , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২৩ পিএম, ০৮ অক্টোবর ২০২৪

পদত্যাগ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পলায়নের আগে নিজেদের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করে পুলিশ বাহিনী। ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে সম্মুখসারিতে থেকে গুলি চালায় তারা। রোষানলে পড়ে প্রাণ হারান অর্ধশত পুলিশ সদস্য। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থানায় পুলিশ দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানানোয় কার্যত স্থবির হয়ে পড়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি।

অন্তর্বর্তী সরকারের দুই মাসে পুলিশ দায়িত্বে ফিরলেও স্বাভাবিক হয়নি সে অবস্থার। একের পর এক হামলা, পিটিয়ে হত্যা, ভাঙচুর, কারখানায় অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটছেই। শ্রমিক আন্দোলনও মাথা চাড়া দিয়ে আছে। মাজার, আখড়ায় একের পর ভাঙচুর চালালেও কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। ভেঙে পড়েছে দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থাও। শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীসহ তিন সশস্ত্র বাহিনীর কমিশনপ্রাপ্তদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

অন্তর্বর্তী সরকারের গত দুই মাসে বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বাহিনীর সদস্যদের। বিশেষ করে তৈরি পোশাক কারখানায় অস্থিরতা, পার্বত্য অঞ্চলে অস্থিরতা, পিটিয়ে হত্যার মতো ঘটনার পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাই, দখলদারি, মব জাস্টিসের মতো ঘটনা উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। ডাকাতদের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন তরুণ সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন। তার এমন মৃত্যুতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মনেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

আইনশৃঙ্খলায় স্বস্তি ফেরানোই বড় চ্যালেঞ্জ

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দায়িত্ব পাওয়া উপদেষ্টাদের সবার আগে জোর দিতে হবে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করায়। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে বাহিনীর সদস্যদের সর্বোচ্চ নির্দেশনা দেওয়া, যাতে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় তারা জনগণের জান-মালের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নিতে পারে।

আদিলুর রহমান, রিজওয়ানা হাসানরা এত কথা বলেন কিন্তু এখন তারা কথা বলেন না কেন? কথা বলতে হবে, কথা না বললে মানুষ বিশ্বাস করছে না। আর বিশ্বাস অর্জন করতে হলে কাজ করতে হবে।-অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ

আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টারও। দেশের একটি শীর্ষ দৈনিকে এক সাক্ষাৎকারে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা করছি। এখনো সফল হইনি। এখনো তো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। নানা রকম ব্যাখ্যা আছে। ব্যাখ্যার মধ্যে যেতে চাই না। কিন্তু এখনো উন্নতি হয়নি। কিঞ্চিৎ হয়েছে হয়তো। কিন্তু যে পর্যায়ে আসার কথা, সেই লেভেলে হয়নি। কাজেই আমাদের সার্বিক চেষ্টা হবে, ওটাকে আগে স্থির করা। এটা প্রথম কাজ। এটা না করলে তো বাকি জিনিস করতে পারছি না।’

শিল্প-কারখানায় টানা অস্থিরতা

সরকারের নানামুখী উদ্যোগ সত্ত্বেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ঘাটতি, ঝুটসহ কারখানা সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, কিছু কারখানার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তৎপরতা, বেতন-ভাতা সংক্রান্ত সমস্যা এবং বাইরের ইন্ধনসহ বিভিন্ন কারণে পোশাক কারখানাগুলোতে অস্থিরতা বন্ধ হচ্ছে না।

বিজিএমইএ ও পোশাক খাতের নেতারা বলছেন, গত কয়েক দিনে বেশ কিছু কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে কয়েকটি খোলার প্রক্রিয়াও চলছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আগামী দু-এক মাসে আরও কিছু কারখানা বন্ধ হওয়ারও আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।

আরও পড়ুন

বিভিন্ন দাবিতে আশুলিয়া অঞ্চলের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন বেশি। শ্রমিকদের টানা বিক্ষোভের জেরে শেষ পর্যন্ত তাদের ১৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে সম্মত হয় মালিকপক্ষ। এরপরও সহিংস আন্দোলন চালালে ৩০ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে একজন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এরপরও পুরোপুরি থামেনি আন্দোলন।

পার্বত্য অঞ্চলে অস্থিরতা

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ভোরে খাগড়াছড়িতে মো. মামুন (৩০) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা কেন্দ্র করে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। একটি ঘটনা কেন্দ্র করে হঠাৎ করে তিন পার্বত্য জেলা অশান্ত হয়ে ওঠে। পরে পরিস্থিতি শান্ত করতে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিন পাবর্ত্য জেলায় সেনাবাহিনীর বেশ কড়াকড়ি অবস্থানও দেখা যায়। এই সংঘাত নিরসনে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য জেলাগুলোর পাড়া-মহল্লায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের নিয়ে বৈঠক করে জেলা প্রশাসন।

এই সরকারের সবার আগে স্বীকার করতে হবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমস্যা আছে। স্বীকার করার পরে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নিতে হবে। বেশি করে প্রচার চালাতে হবে। মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। মাজার-মন্দির ভাঙা অপরাধ, এটার জন্য ব্যাপক বক্তব্য ও প্রচারণা চালাতে হবে।- অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ

স্থানীয়দের দাবি, বিভিন্ন সময় নানা কারণে পার্বত্য তিন জেলার সংঘাত সহিংসতার মতো ঘটনা ঘটলেও এবারের পরিস্থিতি হঠাৎই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। দুই জেলায় নিহত হন অন্তত পাঁচজন।

থামছে না পিটিয়ে হত্যা

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশে প্রায় প্রতিদিনই সামাজিক নানা কারণে হত্যার ঘটনা ঘটছে। গৃহকোণও হয়ে উঠেছে অনিরাপদ। সেখানেও হামলা চালিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। এসব ঘটনায় মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতা- কেউই রেহাই পাচ্ছেন না।

আইনশৃঙ্খলায় স্বস্তি ফেরানোই বড় চ্যালেঞ্জ

আর্থ-সামাজিক ও মনোগত পরিবর্তনের পাশাপাশি নৈতিক অবক্ষয়কে এর জন্য দায়ী করছেন অপরাধ ও সমাজ বিশ্লেষকরা। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র বলছে, মানুষ আগের চেয়ে অনেক সহিংস হয়ে উঠেছে। এসব ঘটনায় পুলিশও রেহাই পাচ্ছে না। মাঠ পর্যায়ে পুলিশ এখনো স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করতে পারছে না। এই সুযোগে যে যার মতো আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানীর দুটি এলাকায় তিনটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মোহাম্মদপুরে দুটি অপরাধীচক্রের সংঘর্ষে প্রাণ হারান নাসির বিশ্বাস ও মুন্না হাওলাদার নামের দুজন। এর বাইরে সূত্রাপুরে জিন্নাহ নামের একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এর আগে ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুনকে পিটিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সবশেষ ১ অক্টোবর খাগড়াছড়িতে আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা নামের এক কলেজশিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে।

মাজার-আখড়া-ধর্মীয় উপাসনালয়ে ভাঙচুর

ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গত দুই মাসে বেশ কিছু মাজার, ধর্মীয় উপাসনালয় ও আখড়ায় হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। কোনোটা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনোটায় দেওয়া হয়েছে আগুন।

যা বলছেন বিশিষ্টজনরা

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিগত সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিজেদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করেছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য বিগত সরকারের আমলে বেনিফিটেড ছিল, যার কারণে তারা ন্যায়-অন্যায় দেখেননি। অন্যায় জিনিসকেও তারা আইনগত স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।’

আইনশৃঙ্খলায় স্বস্তি ফেরানোই বড় চ্যালেঞ্জ

তিনি বলেন, ‘আদিলুর রহমান, রিজওয়ানা হাসানরা এত কথা বলেন কিন্তু এখন তারা কথা বলেন না কেন। কথা বলতে হবে, কথা না বললে মানুষ বিশ্বাস করছে না। আর বিশ্বাস অর্জন করতে হলে কাজ করতে হবে।’

সরকারের উদ্দেশে এই আইনজীবী বলেন, ‘আপনারা ছাত্র-জনতাকে ডেকে বলুন কোনো ভয় নেই, আমরা পাশে আছি। অন্তত এটা তো তারা বলতে পারেন। আপনারা কিছু শিক্ষার্থীকে এলাকাভিত্তিক ভাগ করে পরিচয়পত্র দিয়ে নিরাপত্তার জন্য ডিউটি দেন। প্রয়োজনে একটি সফটওয়্যার তৈরি করেন। যেখানে সবকিছু মুহূর্তে দেখা যাবে কে কোন এলাকায় ডিউটি করছেন। তারা অপরাধ করলে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনা যেতে পারে। এখন সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা আছে। প্রয়োজনে আরও সিসি ক্যামেরা বাড়ান।’

সুপ্রিম কোর্টের আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট এলিনা খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘যে কোনো স্বাধীনতার পরে যে কোনো দেশে দুই থেকে ছয় মাস পর্যন্ত অস্থিরতা থাকে। আগের সরকারের দীর্ঘমেয়াদি লোকবল সেট করা ছিল। সেই দীর্ঘমেয়াদি লোককে আপনি হুট করে সরিয়ে দিতে পারেন না। কারণ রিপ্লেসমেন্ট দিতে হবে। রিপ্লেসমেন্ট করতে গেলেও সময়ের ব্যাপার। আমাদের প্রধান কাজ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা।’

দেশের গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির পেছনে ভারতের সম্পৃক্ততা আছে উল্লেখ করে অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, ‘আমাদের দেশে গার্মেন্টস সেক্টরে ভারতের লোকজন বেশি কাজ করে। সেখানে তারা অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে। একটি নির্বাচিত সরকার সব সমস্যা সমাধান করতে পারে। তবুও এই অন্তর্বর্তী সরকার ধৈর্য সহকারে এখন পর্যন্ত যতটুকু পারছে দাবি-দাওয়া পূরণ করছে। তবে এই সরকারকে কিছুটা সময় দিতে হবে। কিন্তু ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা দরকার।’

এলিনা খান আরও বলেন, ‘মব জাস্টিস নামে কোনো আইনের বিধান নেই। যাকে সন্দেহ হলো তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হলো এটা কোনো প্রশ্নই আসে না।’

জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘এই সরকারের সবার আগে স্বীকার করতে হবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমস্যা আছে। স্বীকার করার পরে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নিতে হবে। বেশি করে প্রচার চালাতে হবে। মব ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। মাজার-মন্দির ভাঙা অপরাধ, এটার জন্য ব্যাপক বক্তব্য ও প্রচারণা চালাতে হবে।’

‘শুধু বাহিনী দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা সম্ভব নয়। জনমত তৈরি করে ন্যায়-অন্যায়ের বোধ মানুষের মধ্যে ভালোমতো পরিষ্কার করতে হবে। অনেক সুযোগসন্ধানী গোষ্ঠী আছে যারা কোনোটাকে ধর্মের নামে, কোনোটাকে স্বৈরতন্ত্রবিরোধীর নামে এগুলো বৈধতা দিতে চায়।’

‘সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের উচিত এগুলো নিয়ে জনমত তৈরি করা। জাতি, ধর্ম ও ভাষার কারণে কারও ওপর আক্রমণ-বৈষম্য করা ঠিক না। অপরাধীদের শাস্তি হওয়া উচিত। সরকারকে স্পষ্ট ভাষায় ও জোর গলায় কথা বলতে হবে।’ বলেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।

আইনশৃঙ্খলায় স্বস্তি ফেরানোই বড় চ্যালেঞ্জ

সার্বিক বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর জাগো নিউজকে বলেন, রেঞ্জ ডিআইজি, ৬৪ জেলা পুলিশ সুপার, সব মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ বিভিন্ন ইউনিটে নতুন নেতৃত্বে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এটি একেবারেই অনিবার্য ছিল এবং চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে এই পরিবর্তন করা হয়েছে। যারা নতুন নেতৃত্বে কাজ শুরু করেছেন তারা সবাই পেশাদার কর্মকর্তা এবং কঠোর পরিশ্রম করছেন পুলিশের মনোবল-সাহস ফিরিয়ে আনতে।’

তিনি বলেন, ‘দৃশ্যমান পরিবর্তনের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে কমিউনিটির সঙ্গে আস্থার সম্পর্কের সেতুবন্ধনে বিভিন্ন কমিউনিটির সঙ্গে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। মনোবল ফিরিয়ে আনতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন থেকে শুরু করে অধস্তন সদস্যদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কাঙ্ক্ষিত সেবাটা যাতে দেওয়া যায় সেক্ষেত্রে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।’

১৮৭ জন পুলিশ সদস্যের কাজে যোগদানের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা কাজে যোগ দেননি তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।’

ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সাগর জাগো নিউজকে বলেন, ‘৫ আগস্ট পরিবর্তিত সময়ে অনেকাংশেই অভিন্ন অবস্থায় ছিল। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এরই মধ্যে ডিএমপিতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পদায়ন হয়েছে। এই দুই মাসে চেষ্টা করা হয়েছে ডিএমপিতে কর্মরত ফোর্সদের মনোবল বাড়িয়ে পূর্ণভাবে কাজে লাগাতে, ডিএমপিতে এখন কার্যক্রম স্বাভাবিক। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে পুলিশি টহল বেড়েছে। দ্রুত আরও উন্নতি হবে।’

থানায় সেবা প্রাপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেসব থানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সেগুলো দ্রুত মেরামত কাজ সম্পন্ন হবে। যে থানা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল তার নিকটবর্তী থানায় সেই থানার কার্যক্রম চলমান। এক্ষেত্রে সেবা পেতে সমস্যা হচ্ছে না।’

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস সাগর জাগো নিউজকে বলেন, ‘পরিবর্তিত সময়ের পর ৮ আগস্ট র‍্যাবে নতুন মহাপরিচালক যোগ দেন। এরপর থেকে তার নেতৃত্বে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। স্বাভাবিক কার্যক্রমের পাশাপাশি বিশেষ দায়িত্ব যৌথ অভিযানে ২১৯টি অস্ত্র এবং প্রায় ১১ হাজার গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। আসন্ন শারদীয় দুর্গোৎসব ঘিরে সারাদেশে বিশেষায়িত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে র‍্যাবের।’

টিটি/এএসএ/এমএমএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।