গুজব ছড়িয়ে সংঘর্ষের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে: আসিফ মাহমুদ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৫২ পিএম, ০১ অক্টোবর ২০২৪
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া

অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, সাভারে শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনাটি মূলত গুজব ছড়িয়ে বাধানো হয়েছে। শ্রমিকদের মধ্যে অনুপ্রবেশ করে তৃতীয়পক্ষ প্রথমে গুলি ছুড়ে উসকানি দিয়েছে।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

শ্রম উপদেষ্টা বলেন, সাভারের সংঘর্ষের ঘটনাটি পেছনে ‘একজন নারীকে ধর্ষণ এবং দুজনকে হত্যা করে ফেলে রাখা হয়েছে’ এমন গুজব ছড়িয়ে শ্রমিকদের আনা হয়েছে। সেখানে শ্রমিকদের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী ওই পক্ষ থেকে গুলি ছুড়ে উসকানি দেওয়া হয়েছে। যার কারণে সংঘর্ষটি বাধে। আমরা অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করেছি। আরও তদন্ত হচ্ছে। তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, সে ঘটনায় একজন শ্রমিক নিহত, ১৩ জন পুলিশ সদস্যসহ অনেক শ্রমিক আহত হয়েছে। আহত সবার আমরা চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছি। পাশাপাশি নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১৩ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে। এসময় শ্রমিক নিহতের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন তিনি।

তিনি  আরও বলেন, গতকালকে শ্রম অঞ্চলে একটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে অবস্থান করছিল। সেখানে ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে তারা কাজ করছিল। কিন্তু প্রথম থেকেই দেখে আসছি, কিছু সুনির্দ্রিষ্ট মানুষ প্ররোচিত করে। গতকালও সেখানে এমনই ঘটেছে। এজন্য সবার মূল ঘটনা জানা দরকার। একজন শ্রমিক সেখানে নিহত হয়েছে। এজন্য আমরা খুবই দুঃখিত। নিহত শ্রমিকের পরিবারের জন্য বিজিএমইএ, সরকার ও মালিকপক্ষ থেকে ১৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। যারা আহত হয়েছেন, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সিএমএইচে তাদের ভর্তি করা হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, ঘটনা মূলত একটা গুজবের ভিত্তিতে সূত্রপাত হয়েছিল। ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একজনকে ধর্ষণ করেছে এবং দুজনকে খুন করে মরদেহ ফেলে রাখা হয়েছে’ এধরনের গুজব ছাড়ানো হয়েছে। সেই গুজবের ভিত্তিতে কারখানাগুলো থেকে শ্রমিকদের নামিয়ে আনা হয়েছিল। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর ও তাদের ওপর হামলার মতো ঘটনা ঘটে। তখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু শ্রমিকদের মধ্য থেকে কোনো একজন অনুপ্রবেশকারী গুলি ছুড়েছে। সেখান থেকে দুঃখজনকভাবে গোলাগুলির সূত্রপাত হয়। সেখানে একজন শ্রমিক নিহত হন। সাতজন আহত হয়ে চিকিৎসারত আছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও ১৩জন মারাত্মকভাবে আহত হন। আমরা সবার দেখভাল করছি। পাশাপাশি যারা অনু্প্রবেশ করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের অনেককে আমরা চিহ্নিত করেছি, গ্রেফতার করেছি। বাকিদেরও চিহ্নিত করা হচ্ছে, আইনের আওতায় আনা হবে।

এই ঘটনার ক্ষেত্রে আপনারা একটু ফ্যাক্টটা উপস্থাপন করবেন। এমন পরিস্থিতি আমরা কখনোই চাই না। আমরা শ্রমিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাই না। প্রত্যেকটা জায়গায় যেখানেই অসন্তোষ দেখা দিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছে। মালিকদের থেকে কীভাবে বেতন আদায় করে দেওয়া যায়, সে কাজ করছে।

আসিফ মাহমুদ বলেন, ২৪ তারিখ যৌথ বিবৃতিতে সবাই স্বাক্ষর করেছে। এটির যারা ব্যত্যয় করবেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো। যেসব মালিক সেলারি দিচ্ছেন না আমরা এগুলোর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবো। আজকেও খবর পেয়েছি, বাইপাইলে শ্রমিকরা আন্দোলন করছে বকেয়া বেতনের দাবিতে। আমরা কারখানা মালিকদের খুঁজছি, তাদের ব্যাংকেও অনেক ঋণ। কিন্তু দুঃখজনক হলো তারা পলাতক। আমরা তাদের খুঁজে আইনের আওতায় আনবো। কেনো তারা বেতন দিচ্ছেন না, বের করবো। যার কারণেই অসন্তোষের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

 এসইউজে/এসএনআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।