ট্যুর অপারেটর সেবায় ভ্যাট প্রত্যাহার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:২৫ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪
বিভিন্ন দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ

পর্যটন শিল্পের বর্তমান অবস্থার উত্তরণে ট্যুর অপারেটর সেবায় ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)। একই সঙ্গে ট্যুর অপারেটর ও ট্যুরগাইড আইনের বিধিমালায় উল্লেখিত জামানত বাতিল ও বিভিন্ন অসংগতি দূর করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান টোয়াবের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে রাফেউজ্জামান বলেন, ট্যুর অপারেটরদের নিবন্ধন সংক্রান্ত নতুন গেজেটে কিছু নিয়ম ও শর্ত উল্লেখ করা হয়েছে, যা মেনে চলা আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন। গেজেটে উল্লেখিত বিধিনিষেধ ও নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিধিমালায় দেখা যায়, ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) লাইসেন্স আবেদনের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা নিবন্ধন সনদ ফি, ১০ লাখ টাকা ব্যাংক স্থিতির সার্টিফিকেট ও ৩ লাখ টাকা জামানত প্রদান করতে হবে। ট্যুর অপারেটরদের জন্য যা সম্ভব নয়। এতে করে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প এগিয়ে নিতে নতুন উদ্যোক্তারা নিরুৎসাহিত হবেন।

তিনি বলেন, বিকাশমান পর্যটন শিল্পের স্বার্থে ট্যুর অপারেটরদের সেবার ওপর মূসক (ভ্যাট) আরোপ রহিত করতে হবে। কারণ ট্যুর অপারেটররা বিভিন্ন খাত থেকে পর্যটন উপাদান সংগ্রহ করে পর্যটকদের সুবিধা ও আরামদায়ক ভ্রমণ সৃষ্টিতে যেসব প্যাকেজ তৈরি করে তার মধ্যেই মূসক অন্তর্ভুক্ত থাকে। তারা হোটেলের রুম ভাড়ার সময়, ট্রান্সপোর্টের টিকিট কেনার সময়, রেস্টুরেন্টে খাবারের বিল দেওয়ার সময়, বিভিন্ন পর্যটন আকর্ষণীয় স্থাপনা ও অ্যামিউজমেন্ট পার্কের টিকিট কিনতে মূসক দিয়ে থাকেন। এমনকি অন্যান্য পর্যটন সেবার ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। উল্লেখিত সব পর্যটন উপাদান একত্রিত করে ট্যুর অপারেটররা পর্যটকদের সেবা দিয়ে থাকে।

টোয়াব সভাপতি বলেন, এখন যদি পর্যটন উপাদান সম্মিলিত প্যাকেজে আবার নতুন করে ভ্যাট দাবি করা হয় কিংবা ট্যুর অপারেটর সেবার ওপর ১৫ শতাংশ মূসক ধার্য হলে প্যাকেজ মূল্য তথা ট্রাভেল কস্ট অনেকটাই বেড়ে যাবে। তাতে করে গোটা পর্যটন শিল্প বিশেষ করে অন্তর্গামী ও আভ্যন্তরীণ পর্যটন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যেহেতু পর্যটন শিল্প একটি ব্যাপক ও অনেকগুলো খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত, বিদ্যমান মূসক সুবিধা প্রত্যাহার হলে অগ্রসরমান বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশের অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো- ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) লাইসেন্স ও নবায়ন ফি ও ব্যাংক স্থিতি কমানো ও জামানত বাতিল, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে ইনবাউন্ড ট্যুরিজমকে রপ্তানি পণ্যের স্বীকৃতি, প্রণোদনা ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা প্রদান।

পর্যটকদের জন্য ব্যবহৃত সড়ক পরিবহন, নৌযান, আবাসন, বিভিন্ন সরঞ্জামাদি ইত্যাদিতে করমুক্ত/রেয়াত সুবিধা প্রদান। ইনবাউন্ড ট্যুর অপারেটরদের ব্যাংকিং চ্যানেলে সংগ্রহ করা বৈদেশিক মুদ্রা/রেমিট্যান্সের মোট বিলের ওপর ১০ শতাংশ অগ্রিম কর (এআইটি) কাটা বন্ধ করা, বছরব্যাপী সুন্দরবনে পর্যটকবহী জাহাজ চলাচল চালু রাখা। এছাড়া পার্বত্য অঞ্চলে পর্যটকদের জন্য পারমিশন গ্রহণ সহজ করা এবং টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণে বিকল্প পথ তৈরির দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- টোয়াবের প্রথম সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সহ-সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন, টোয়াবের সদ্য সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের গভর্নিং বডির সদস্য শিবলুল আজম কোরেশী, টোয়াবের পরিচালক (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন) মোহাম্মাদ ইউনুছ প্রমুখ।

এএএম/কেএসআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।