‌সড়কে দুর্ঘটনা নয়, হত্যার আয়োজন চলছে: রোবায়েত ফেরদৌস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:৫৪ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

বাংলাদেশের সড়কগুলোতে সংঘটিত ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলা যায় না। এগুলোর মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের আয়োজন চলছে। আগের সরকারের সড়ক পরিবহন মন্ত্রীরা কারো সঙ্গে কোনো পরামর্শ করতেন না। এককভাবে তারা সিদ্ধান্ত নিতেন। তারা লুটপাটে সিদ্ধহস্ত ছিলেন। ফলে সড়ক পরিবহন খাতে ব্যাপক নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে যাত্রী অধিকার দিবস উপলক্ষে ‌বিগত সরকারের প্রণীত সড়ক আইনে যাত্রী স্বার্থ উপেক্ষিত শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস,

নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরিফ, সাংবাদিক মনজুরুল আলম পান্না, যাত্রী অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক   কেফায়েত সাকিল ও বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী প্রমুখ।

সভায় অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, বিগত সরকারের সড়ক পরিবহনমন্ত্রী কারও কোনো পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন না। তিনি একক সিদ্ধান্তে সব কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। সড়কের সব দুর্ঘটনা মানব সৃষ্ট। যদি আমাদের চালকদের লাইসেন্স ঠিক থাকে, গাড়ির ফিটনেস ঠিক থাকে এবং সড়ক ঠিক থাকে, আমরা যদি রোড সঙ্কেত মেনে চলি, যাত্রীরা যদি আচরণবিধি মেনে চলে, এরপরও যদি দু-একটি ঘটনা ঘটে, তার নাম দুর্ঘটনা। কিন্তু আপনার গাড়ির ফিটনেস ঠিক নেই, টাকা দিয়ে লাইসেন্স পাওয়া যায়, সড়ক ঠিক নেই। তাহলে এখানে প্রতি মুহূর্তে হত্যার আয়োজন হচ্ছে।

সড়ক দুর্ঘটনায় সাংবাদিক তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তখন আমরা তৎকালীন সড়ক পরিবহন মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে বলেছিলাম, এটি কোনো দুর্ঘটনা। এটি একটি হত্যার আয়োজন। এখানকার দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হলো চুক্তিভিত্তিক ড্রাইভার নিয়োগ। তারা প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষ মারছে। আমাদের মেয়র এবং সেতুমন্ত্রী সব সময় ভাগাড়ম্বর করতেন। আমরা প্রত্যেকেই এর ভুক্তভোগী হতে পারি। সড়কের সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ থাকতো এবং এখানে সীমাহীন লুণ্ঠন লুটতরাজ এবং ন্যূনতম সুশাসনের ব্যবস্থা না রেখেই সড়কগুলো ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে।

আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য তুলে ধরে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজ্জাম্মেল হক বলেন, দীর্ঘদিন পরিবহনে বিশৃংঙ্খলা ও নৈরাজ্য কিছুতেই থামছে না। ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশের ইতিহাসে সাড়া জাগানো সর্ববৃহৎ ছাত্র আন্দোলনের পরে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সড়ক পরিবহনের নতুন আইন করে। আইন বাস্তবায়নও হলো। কিন্তু পরিবহনে বিশৃংঙ্খলা কেবল বাড়ছেই।

পরিবহন আইন সংশোধন করে যাত্রী ও নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি বলেও জানান তিনি।

আরএএস/এমএইচআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।