‘দুদক কখনো ব্যর্থ হয়নি, পাচার অর্থ ফেরাতে চেষ্টা চলছে’
হুন্ডি, চোরাচালান, বাণিজ্যে কারসাজির মাধ্যমে দেশ থেকে পাচার হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা টাকা পাচারের এসব তথ্য সামনে এনেছে। তবে অর্থপাচাররোধ কিংবা পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে দুদক ব্যর্থ নয় বলে দাবি করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুদক কার্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) দুই কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেন দুদকের কর্মকর্তরা। পরে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বৈঠকের বিষয়বস্তু তুলে ধরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বৈঠকে দুদকের পক্ষ থেকে ছিলেন মানিলন্ডারিং বিভাগের মহাপরিচালক মোকাম্মেল হক, পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী ও আব্দুল্লাহ-আল-জাহিদ।
টাকা পাচার ও পাচার হওয়া টাকা উদ্ধারের বিষয়ে দুদক সচিবকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, দুদক কখনোই ব্যর্থ হয়নি। একটি প্রতিষ্ঠান কাজ করে যাচ্ছে, কেন ব্যর্থ হবে? পাচার অর্থ ফেরত আনতে বিভিন্ন রকম প্রচেষ্টা চলছে। আমাদের নানান পদ্ধতি রয়েছে।
পাচার হওয়া টাকা উদ্ধারের প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে যেমন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠাতে হয়, সেখান থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যায়, সেখান থেকে যেসব দেশে টাকা পাচার হয়েছে সেখানে যায়। আবার সেসব দেশের মিশনে যায়। পররাষ্ট্রের মাধ্যমে এটা উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়। একটা চেইনের মাধ্যমে এটা হয়। একটু সময় লেগে যায়। ওইসব দেশের কী আইন বা বিধান আছে, সেগুলোর সঙ্গে আমাদের সমম্বয় করে একলাইনে কাজ করার চেষ্টা চলছে। এমএলআর করা হয়। এমএলআরের মাধ্যমে আমাদের ৩৫টার মতো সফল রেকর্ড আছে।
আরও পড়ুন
- দুদকের ৫৮ পদে রদবদল
- সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক
- সাবেক ট্রাফিক ইন্সপেক্টর তুহিন ও স্ত্রীর ৪ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ
এফবিআই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের দুই সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এসেছে। এটা একটা সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। মানিলন্ডারিং উইং প্রধানের সঙ্গে এই সাক্ষাৎটি হয়েছে। দুদক কীভাবে কাজ করে, অনুসন্ধান কীভাবে হয়, গোয়েন্দারা কীভাবে কাজ করে, পুরো দুদক কীভাবে কাজ করে সেমব তথ্য তারা জানতে চেয়েছেন। এফবিআই জানিয়েছে, আগামীতে দুদকের কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হলে তারা তা করবেন।
মানিলন্ডারিং নিয়ে দুদক দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে জানিয়ে দুদক সচিব বলেন, এ ধরনের ইস্যুতে যদি দুদকের কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হয়, নিশ্চয়ই দুদক সেই সহযোগিতা নেবে। পাচার হওয়া টাকা উদ্ধারে আমাদের কার্যক্রম চলছে। সেভাবে কোনো সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়নি, প্রয়োজন হলে সেটাও করা হবে।
পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে দুদক হাতগুটিয়ে বসে থাকবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে। আমাদের কাজ চলছে।
অর্থপাচাররোধে সরকার প্রণীত টাস্কফোর্সে দুদককে এখনো ডাকা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে আমাদের যে ধরনের কার্যক্রম দেওয়া থাকবে, সেই দায়িত্ব আমরা পালন করবো। টাস্কফোর্সের গঠন কাঠামোটা আমাদের কাছে এখনো আসেনি। টাকা যেন পাচার না হয় দুদক ছাড়াও আরও প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সবাই এটা নিয়ে কাজ করছে। সফলভাবে অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করলে আশা করি টাকা পাচার বন্ধ হবে।
এসএম/এসএনআর/জিকেএস