সেনা হেফাজতে থেকেই আত্মসমর্পণ করতে চান সাবেক আইজিপি মামুন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫:২৩ এএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। এর প্রেক্ষিতে প্রাণ বাঁচাতে সেনানিবাসে আশ্রয় নেন পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

এরপর একের পর এক পুলিশের এই সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা রুজু হতে থাকে। এরপর তিনি নিজেই সিদ্ধান্ত নেন আত্মসমর্পণ করবেন।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ডিবিপ্রধান রেজাউল করিম মল্লিক জানান, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় সেনা হেফাজতে থাকা অবস্থায় আত্মসমর্পণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। এরপর তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়।

এদিকে রাজধানীর উত্তরা থেকে পুলিশের আরেক সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল ইসলামকে গ্রেফতার করে ডিবি। তাদের রাতে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।

গ্রেফতার দুই সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি হত্যা মামলা রুজু হয়েছে।

এর আগে ১৮ আগস্ট এক বিজ্ঞপ্তিতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৫ আগস্ট থেকে পরবর্তী সময়ে মোট ৬২৬ জন আশ্রয় নিয়েছিলেন দেশের বিভিন্ন সেনানিবাসে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিলেন পুলিশ সদস্য-কর্মকর্তা।

আইএসপিআর জানায়, ওই সময় সব মিলিয়ে ৬২৬ জন সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিল। এর মধ্যে ৫১৫ জনই পুলিশের সদস্য-কর্মকর্তা। ৫১৫ জনের মধ্যে ২৮ জন পুলিশ কর্মকর্তা, ৪৮৭ জন পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পুলিশের আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তার নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্যদের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানোর অভিযোগ আছে। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। গত ৬ আগস্ট আইজিপি থেকে তাকে অবসরে পাঠানো হয়।

এর আগে চৌধুরী আবদুল্লাহ র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ানের (র‍্যাব) মহাপরিচালক ছিলেন। এছাড়া পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান ছিলেন। র‍্যাবের ডিজি থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

১৯৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা থানার শ্রীহাইল গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি বিবাহিত এবং তার চিকিৎসক স্ত্রী সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ, ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক।

তিনি ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর অষ্টম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেছিলেন।

টিটি/এমআইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।