বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সহযোগিতা করবে দাতা সংস্থাগুলো
বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পর দাতা সংস্থাগুলো পুনর্বাসনে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা এ কথা জানান। এর আগে তিনি বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের সমন্বয়ক, আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর, আইওএম চিব অব মিশন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি, ডাব্লিউএফপির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর, ইউনিসেফের ডেপুটি রিপ্রেজেন্টেটিভ, ইউএনআরসিও হিউম্যান্টেরিয়ান অ্যাফেয়ার অ্যাডভাইজারের সঙ্গে বৈঠক করেন।
দেশের মধ্যে ভারী বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের ১১ জেলায় বন্যা দেখা দেয়। বিপুল সংখ্যক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। ইতিমধ্যে বন্যায় ৭১ জন মারা গেছেন বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির ক্রমে উন্নতি হচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা বন্যার ত্রাণ পর্যায়টা অতিক্রম করে পুনর্বাসন পর্যায়ের দিকে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে মাঠপর্যায়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের যে বিষয়টি, সেটির কাজ খুব দ্রুত চলছে।’
বন্যার্তদের পুনর্বাসনে সহায়তার জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এগিয়ে এসেছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আজ ইউএন (জাতিসংঘ) বডির আটটি নানা রকমের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সভা করেছি। তারা এই (পুনর্বাসন) কাজে যুক্ত হওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে।’
‘তারা বাংলাদেশের মানুষের অপার স্বেচ্ছাসেবা, অভূতপূর্ব সহযোগিতার জন্য প্রশংসা করেছেন। ত্রাণ কার্যক্রমে সেনাবাহিনী ও জনগণের যে উদ্দীপনা তারা দেখেছেন, ত্যাগ তারা দেখেছেন- এটার প্রশংসা করেছেন।’
- আরও পড়ুন
- বন্যায় ৭১ জনের মৃত্যু, ফেনীতেই ২৮
- ফেনীতে বন্যা: বালুতে ঢেকে গেছে কৃষকের স্বপ্ন
- বন্যায় চাঁদপুরে দেড়শ কোটি টাকা ক্ষতির শঙ্কা
তিনি বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে থেকে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পর কোন কোন বিষয়ে তারা সহযোগিতা দিতে পারেন সেটা আমরা নির্ণয় করে দিলে তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত আশাবাদী যে, আমরা দুর্যোগ যেভাবে সাহসিকতার সঙ্গে সাধারণ মানুষ ও স্বেচ্ছাসেবীদের সহযোগিতায় অতিক্রম করতে পেরেছি, আমরা ভবিষ্যতে পুনর্বাসন কর্মসূচিও সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে পারবো।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘ডি-ফরমের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য দেওয়ার একটি সময় রয়েছে। সেটি তিন সপ্তাহের মধ্যে দিতে হয়। আমরা সেটি এক সপ্তাহের মধ্যে করতে বলেছি, যত দ্রুত করা যায়।’
ফারুক-ই-আজম আরও বলেন, মাঠ প্রশাসনে আমি যখন কথা বলেছি, তাদের দৃঢ়তা দেখেছি। তারা কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়া পুনর্বাসন কর্মসূচি বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমার সার্বিক বিক্ষণ হলো এটা- পরিবর্তিত একটি সময় যেন আমাদের সামনে আসছে, আমরা আশাবাদী। ক্ষুদ্র চিন্তা থেকে বড় চিন্তার দিকে যাওয়ার মতো দুঃসাহস আমাদের জেগেছে। মানুষের মধ্যে প্রত্যয় এসেছে।
বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, অনেকে ত্রাণ দিতে বুড়িগঙ্গা থেকে নৌকা নিয়ে গেছে। কিন্তু যখন পানি নেমে গেছে তখন তো আর নৌকা চলছে না। তাদের প্রাথমিক যে উচ্ছ্বাস ছিল, সেটা যখন ক্রমে স্থিমিত হয়েছে, তাদের পক্ষে আর সেখানে থাকাও সম্ভব হচ্ছে না। আমরা চট্টগ্রাম থেকে ক্রেন এনে এগুলোয় (নৌকা) তুলে ট্রাকে করে ঢাকা পাঠাতে হচ্ছে। যারা ত্রাণ দিতে গিয়েছিল তাদের আবার ত্রাণ করতে হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অব্যবস্থাপনা যে একেবারে হয়নি সেটা তো নয়। আমরাও শিখছি।’
আরএমএম/বিএ/এএসএম