পাকিস্তানের সঙ্গে শত্রুতা করে কোনো ফায়দা নেই: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:০৫ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন/ফাইল ছবি

পাকিস্তানের সঙ্গে এখন আমাদের শত্রুতা করে কোনো ফায়দা নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দিল্লি-ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বর্তমানে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক নিবিড় হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে এই উপদেষ্টা বলেন, এ দুটোর একটিকেও আমি ঠিক মানছি না। আমি মনে করি, কোনো একপর্যায়ে, কোনো এক কারণে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কে একটু টানাপোড়েন ছিল। স্বাভাবিক একটা সম্পর্ক যদি উন্নীত হয়, আমাদের সবার খুশি হওয়া উচিত। আমরা তো সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। পাকিস্তানের সঙ্গে তো এখন আমাদের শত্রুতা করে কোনো ফায়দা নেই।

‘আর ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আপনারা যদি মনে করেন একটু টানাপোড়েন চলছে, দ্বিপাক্ষিকভাবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে সেটাকে কিনারায় নিয়ে আসা। তবে আমরা একটা কথা মনে করি, সম্পর্ক মানুষকেন্দ্রিক হতে হবে। আসলে এমন হতে হবে যেন মানুষও মনে করে যে, সম্পর্কটা ভালো।’ বলেন তৌহিদ হোসেন।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সোনালি অধ্যায়ের কথা বলা হতো- এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় ছিল দুই সরকারের মধ্যে। আমরা চাই, সুসম্পর্ক থাকুক জনসাধারণ পর্যায়ে, মানুষ সেটাতে যুক্ত হোক। মানুষ মনে করুক আসলে খুব ভালো সম্পর্ক। সেটা যে ছিল না এটা স্বীকার করা ভালো। মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছিল, দ্বিপাক্ষিক সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে সেগুলো প্রশমন করা সম্ভব বলে আমি মনে করি।

ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তাতে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কি না- জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটা তো বিচার করবেন আরও অনেক পরে। তখন দেখবেন যে আমাদের কোনো ক্ষতি হয়েছে কি না। এই মুহূর্তে আমরা একটা পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। এখন আপনি বিচার করতে পারবেন না, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি কি না। তাৎক্ষণিক আমি কোনো সমস্যা দেখছি না।

আরও পড়ুন

ভারতীয় গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতীয় মিডিয়ায় যেটা হয়েছে, সেটা একেবারে মিথ্যার বেসাতি, বাড়াবাড়ি। বিপ্লব সাধিত হওয়ার পর কিছু বিশৃঙ্খলা থাকে। এখানে একটা বিপ্লব হয়েছে। এটা মেনে নিতে হবে। কিছু বিশৃঙ্খলা ছিল, সেখানে কিছু দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। সেটা নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া যেভাবে লেগে পড়েছিল…। বিশ্ব মিডিয়ায় যারা নিরপেক্ষ তারা কেউ কিন্তু ভারতীয় লাইনটাকে গ্রহণ করেনি। ভারতীয় মিডিয়া একেবাবে হাইপ সৃষ্টি করেছে। আমার মনে হয় আমরা সেই স্টেজ পার হয়ে আসছি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনো দিল্লিতে আছেন কি না বা তিনি অন্য কোথাও চলে গেলে জানতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নে তৌহিদ হোসেন বলেন, ওনার সঙ্গে তো আমাদের কোনো চ্যানেল নেই। উনি ভারতের আশ্রয়ে আছেন। যদি উনি অন্য কোনো দেশে চলে যান, সেটা তো আপনাদের আমার কাছ থেকে জানতে হবে না। আপনারা নিজেই জানতে পারবেন। আপনারা যেভাবে জানবেন, আমিও হয়তো সেভাবে জানবো। কারণ, এটা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পত্রপত্রিকায়, মিডিয়ায় চলে আসবে। এটা নিয়ে আমরা চিন্তা করছি না।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে এবং পরবর্তীতে শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর টানাপোড়েন চলছিল বলে অভিমত ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে এক ধরনের টানাপোড়েন চলছিল। স্বীকার করে নেওয়া ভালো। যেসব ইস্যুতে টানাপোড়েন চলছিল, সেগুলো কিন্তু এই সরকারের যে এজেন্ডা আছে বা ছাত্র-জনতার যে এজেন্ডা এসেছে, তার সঙ্গে কিন্তু সংগতিপূর্ণ। আমি চূড়ান্তভাবে দ্বন্দ্বের কোনো সুযোগ দেখি না। তারা (পশ্চিমাদের সঙ্গে) যেসব ইস্যুতে উদ্বিগ্ন ছিল, আমাদের ছাত্ররা যেসব ইস্যুতে উদ্বিগ্ন ছিল।

আইএইচআর/ইএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।