ফেনীর ফাজিলের ঘাট

কয়েক হাজার মানুষের পাশে স্থানীয় বিত্তশালীরা

আবদুল্লাহ আল মিরাজ
আবদুল্লাহ আল মিরাজ আবদুল্লাহ আল মিরাজ , নিজস্ব প্রতিবেদক ফেনী থেকে
প্রকাশিত: ০৭:৫২ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২৪
এই ভবনে হাজার খানেক মানুষকে আশ্রয় দিয়েছেন মালিক

বন্যায় চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফেনী জেলা। জেলার দাগনভূঞা উপজেলার ফাজিলের ঘাট বাজারে আশ্রয় নিয়েছেন আশপাশের এলাকার আড়াই হাজার বাসিন্দা। এলাকার বিত্তশালীদের আর্থিক অনুদানে এখানে আশ্রয় নেওয়াদের তিনবেলা খাবার, ওষুধ ও প্রয়োজন অনুযায়ী দ্রব্যাদি সরবরাহ করা হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, এলাকার বাজারটির একটি সদ্য গড়ে ওঠা ছয়তলা ভবনের চারটিতে আশ্রয় নিয়েছেন হাজার খানেক মানুষ। এর পাশে ফাজিলের ঘাট প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়েও আশ্রয় নিয়েছেন বাকি মানুষজন। আশ্রয় নেওয়াদের বেশিরভাগই নারী, বৃদ্ধ ও শিশু। বাজারের এক কোনায় নিয়মিত হচ্ছে রান্নাবান্না। এসব দেখভাল ও নিরাপত্তায় এলাকার তরুণরা রাত-দিন পরিশ্রম করছেন।

আশ্রয়কেন্দ্রগুলো সমন্বয় করতে রাতদিন খাটছেন এলাকার যুবকরা। তাদের একজন মামুন জাগো নিউজকে বলেন, চর মজলিশপুর, মাতু ভূইয়া, জগৎপুর, রামানন্দ পুরসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষজন এখানে আশ্রয় নিয়েছেন। এলাকার বিত্তশালীরাই এই আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনায় অর্থ দিচ্ছেন। এর বাইরে মাঝে মাঝে কিছু ত্রাণের গাড়ি আসে। তাদের ভেতরের বিভিন্ন এলাকায় এসব ত্রাণ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

তিনি বলেন, গ্রামের অনেক মানুষ যারা আশ্রয়কেন্দ্রে না এসে বাড়িতেই থাকছেন এবং রান্নাবান্নার সুযোগ হচ্ছে না, তাদের আমরা নৌকা বা ভ্যানে করে খাবার পৌঁছে দিচ্ছি।

কয়েক হাজার মানুষের পাশে স্থানীয় বিত্তশালীরা

বাজারে ভাড়া দেওয়ার জন্য নির্মিত মার্কেট আশ্রয়কেন্দ্র করার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন আয়েশা এম্পোরিয়ামের স্বত্বাধিকারী হাজী শরিয়ত উল্লাহ। তিনি বলেন, আমার এলাকার মানুষ বিপদে পড়েছে। এই সময় তাদের জন্য কাজ করার সুযোগ এসেছে, তাই মার্কেট সবার জন্য খুলে দিয়েছি।

তিনি বলেন, আমার এই মার্কেটের প্রতিটি ফ্লোর প্রায় সাড়ে ৯ হাজার বর্গফুট। এই ভবনের চারটি তলায় হাজার খানেক মানুষ বর্তমানে আছেন। চাইলে আরও মানুষকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব হবে।

চর মজলিশপুরের বাসিন্দা আয়েশা তার দুই শিশুকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ফাজিলের ঘাটে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এদিকের ঝড় বা জোয়ারের সঙ্গে অনেক সময় এলাকায় পানি উঠে যায়। আর বর্তমান অবস্থায় তো ঘরই ডুবে গেছে। এখন তো থাকার অবস্থাই নেই। আর পানি কমছে না। কখন কী হয় তা তো জানি না। তাই বিপদ এড়াতে এখানে এসেছি। এলাকায় চাষাবাদ করে খেতাম। কিন্তু এখন তো সব জমি ডুবে গেছে। কখন যে আল্লাহ এই বিপদ থেকে উদ্ধার করবে তা জানি না। সবার জন্য দোয়া করবেন।

এএএম/ইএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।