হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো দীপু মনি ও আরিফ খান জয়কে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:২০ এএম, ২০ আগস্ট ২০২৪

সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি এবং সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়কে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ। তাদের রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকালে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ওবায়দুর রহমান এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গতকাল (সোমবার) রাতে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে রাজধানীর বারিধারা থেকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে একই রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়কে গ্রেফতার করা হয়।

দুজনকেই ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানার হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রিমান্ডের আবেদন করে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।

ডা. দীপু মনি চাঁদপুর-৩ আসন থেকে টানা চারবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি হন। এরমধ্যে ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে সেই সরকারের মন্ত্রিসভায় দেশের প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন ডা. দীপু মনি। দশম সংসদ নির্বাচনের পর তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন।

২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর তিনি শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পান। সবশেষ দ্বাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী ছিলেন তিনি।

এদিকে আরিফ খান জয় ২০১৪ সালে নেত্রকোনা-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের টিকিটে জাতীয় সংসদ সদস্য হন। এরপর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি আর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। পরে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোশতাক আহমেদ রুহীর কাছে হেরে যান।

আরিফ খান একজন পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। ফুটবলে তার সাফল্য আছে। তিনি ঢাকা আবাহনী এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে একজন মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেছেন।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা। আত্মগোপনের তালিকায় রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তা ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বরত ব্যক্তিরা। তাদের কেউ কেউ গ্রেফতার হচ্ছেন।

কোনো মন্ত্রীকে গ্রেফতারের খবর প্রথম আসে ১৩ আগস্ট। সেদিন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেফতারের কথা জানায় ঢাকা মহানগর পুলিশ। পরে তাদের কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে এক হকার নিহত হওয়ার ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় করা হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

এরপর ১৪ আগস্ট সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু; সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক এবং ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে পল্টন থানার মামলায় গ্রেফতারের খবর জানায় ডিএমপি।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় টুকু, পলক ও সৈকতকে গ্রেফতার করা হয়।

১৬ আগস্ট রাতেই ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়ি থেকে সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনকে আটক করে পুলিশ। তাকেও একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

এর বাইরে ১৬ আগস্ট সেনাবাহিনী থেকে সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিয়াউল আহসান সর্বশেষ টেলিযোগাযোগ নজরদারির জাতীয় সংস্থা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক ছিলেন। তাকেও নিউমার্কেট থানার ওই হকার হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়।

টিটি/এমএইচআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।