নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও র‍্যাবের বিলুপ্তি চান বিশিষ্টজনেরা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:২০ পিএম, ১১ আগস্ট ২০২৪

নাগরিকের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধানকে অনেকাংশে অকার্যকর উল্লেখ করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে বর্তমান সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা।

একই সঙ্গে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) বিলুপ্তির দাবি তুলে তারা বলছেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কিত হয়েছে র‍্যাব।

রোববার (১১ আগস্ট) রাজধানীতে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব দাবি তোলেন বক্তারা। ‘নতুন বাংলাদেশে জনপ্রত্যাশা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সামাজিক সংগঠন নাগরিক বিকাশ ও কল্যাণ (নাবিক)। এতে সভাপতিত্ব করেন নাবিক সভাপতি শিহাব উদ্দিন খান। আলোচ্য বিষয়ে ধারণাপত্র পাঠ করেন নাবিকের সহ-সভাপতি বুরহান উদ্দিন ফয়সল।

আলোচনায় অংশ নেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তাহমিদ মুদ্দাসসির চৌধুরী, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মো. মাসদার হোসেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া) সাবেক উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার জেনারেল ইকতেদার আহমেদ, জেলা জজ (অব.) বীর মুক্তিযোদ্ধা ফিরোজ আলম, মানবাধিকারকর্মী নুর খান লিটন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক কর্নেল (অব.) আব্দুল হক, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, চট্টগ্রামের সাবেক অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আব্দুর রহমান, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রকৌশলী সৈয়দ জাহিদ হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুসতাসীম তানজীর ও স্থপতি মারুফ হোসাইন। আরও ছিলেন ব্র‍্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইমুম রেজা পিয়াস।

ধারণাপত্রে পাঁচটি দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো- ১. মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে র‍্যাবের বিলুপ্তি, ডিজিএফআইয়ে আমূল সংস্কার এবং পুলিশের সংস্কার ও লোগো পরিবর্তন; আওয়ামী ফ্যাসিজমের সঙ্গে জড়িত এবং সহযোগীদের কঠোর বিচার এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা; ৩. অকার্যকর ও আওয়ামী রেজিম টিকিয়ে রাখার হাতিয়ার বর্তমান সংবিধান বাতিল করে নতুন জনবান্ধব সংবিধান প্রণয়ন; ৪. ন্যায়বিচারের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নতুন বিচারক নিয়োগ এবং সাইবার সিকিউরিটি আইনসহ সব কালো আইন বাতিল করা; ৫. ন্যয়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নেওয়া।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তাহমিদ মুদ্দাসসির চৌধুরী বলেন, চারদিকে শুধু ষড়যন্ত্রের গন্ধ। বিগত শেখ হাসিনার সরকার প্রতিটি স্তরে নিজের লোক বসিয়ে রেখেছেন।

তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট রেজিমের দালালদের খুঁজে বের করা দরকার। অনেক রক্তের বিনিময়ে এই নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। সবার প্রতি আহ্বান জানাই, শহীদদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি করবেন না।

নাবিকের দাবিগুলোর সঙ্গে একমত জানিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক বলেন, ছাত্র আন্দোলনে পরিবর্তন আনা সহজ, সবার দায়িত্ব এ পরিবর্তন ধরে রাখা। এর জন্য ছাত্রদেরই ভ্যানগার্ড হতে হবে।

মানবাধিকারকর্মী নুর খান লিটন বলেন, বিগত বছরগুলোতে এমন দুঃশাসনের মধ্যে কাটিয়েছি আমরা, যা বর্ণনা করা কঠিন। এখনো পুলিশকে কাজে যোগ দিতে একটি গ্রুপ বাধা দিচ্ছে। এ গ্রুপটি গত সরকারের সময় দুর্নীতি-লুটপাটের সঙ্গে জড়িত ছিল।

সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মাসদার হোসেন বলেন, স্বৈরাচারের পতনের পর আজ মুক্ত পাখির মতো ডানা ঝাপটাতে ইচ্ছে করছে। এতদিন ছিলাম বন্দি পাখির মতো। দেশে বর্তমানে জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বলতে কিছুই নেই। শুধু আইন থাকলেই হবে না, মানুষগুলো বদলাতে হবে। এতদিন এক ব্যক্তির কথায় দেশ চলছিল।

এফএইচ/এমকেআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।