রাতগুলো কাটছে ডাকাত আতঙ্কে

আবদুল্লাহ আল মিরাজ
আবদুল্লাহ আল মিরাজ আবদুল্লাহ আল মিরাজ , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৫৭ এএম, ০৯ আগস্ট ২০২৪
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গভীর রাতে চোর-ডাকাতের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে রাস্তায় নেমে পাহারা দেয় এলাকাবাসী

সারাদেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে প্রায় সব থানাই কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে। এই সুযোগে দেশের বিভিন্ন জায়গায়ই বেড়েছে চুরি-ডাকাতি। রাত গভীর হলেই নেমে আসছে বিভীষিকা।

গত দুদিন মঙ্গল ও বুধবার (৬-৭ আগস্ট) রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় রাত ১টার পর থেকে ডাকাতির খবর পাওয়া যায়। রাজধানীর বসিলা, উত্তরা, মোহাম্মদপুর, শেখেরটেক, আদাবর, নবোদয় হাউজিং, ইসিবি চত্বর, মিরপুর-৬, মিরপুর-২, ধানমন্ডি ও বেশকিছু এলাকায় ডাকাতির খবর পাওয়া যায়। এছাড়া যেসব এলাকায় ডাকাতি হয়নি সেখানেও ছিল আতঙ্ক।

মিরপুর-১০ এর বাসিন্দা সাজিদ জাগো নিউজকে বলেন, সারাদিন অফিস করে বাসায় এলাম। দিনের বেলায় অনলাইনে ও সবার মুখে ডাকাতি হতে পারে এমন কথা শুনলাম। ভয়ও ছিল মনের মধ্যে। সবশেষে রাতে ঘুমাতে গেলাম। মাঝে হঠাৎ রাত ৩টার দিকে মসজিদের মাইকে মাইকে ঘোষণা করে যে এলাকায় ডাকাত ঢুকেছে। আওয়াজ শুনেই লাফ দিয়ে উঠি। এরপর ঘরে সবার মধ্যে আতঙ্ক। এলাকার সবাই রাস্তায় লাঠি, দা নিয়ে নেমে পড়ি। রাত পোহানোর আগপর্যন্ত এলাকার সবাই মিলে পাহারা দেই।

মিরপুর-২ এর বাসিন্দা আসাদ বলেন, রাতে সব কাজ শেষে মনের মধ্যে আতঙ্ক নিয়েই ঘুমাতে গেলাম। রাতে মাইকে ডাকাতের কথা শুনে আমার মেয়ে চিল্লাইয়া আমাদের সবাইকে ডাকে। ঘুম থেকে চিল্লানি শুনে লাফিয়ে উঠি। সারারাত আর আতঙ্কে ঘুমাতেই পারিনি।

উত্তরার বাসিন্দা আহসান বলেন, বুধবার সন্ধ্যা থেকেই এলাকার বিভিন্ন গ্রুপে ডাকাত আসতে পারে এমন কথা বলা হচ্ছিল। ঘরে ঢোকার পরও ভয়ে ছিলাম। তবে এলাকার সবাই মিলে বাসার নিচে পাহারা দেওয়া শুরু করছি। রাতে কয়েক জায়গায় ডাকাত আসেও। সেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ও ডাকাতদের আটকও করেন।

হাসান নামে উত্তর বাড্ডার বাসিন্দা বলেন, ঘরে বেশি কিছু নেই, সোনার কিছু অলংকার আছে। বাসার মালিক এসে বলে গিয়েছিলেন ডাকাতের সমস্যা বাড়ছে সাবধানে থাকতে। আমার বউ দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। সারারাত ঘুমানোই হয়নি।

এছাড়া অনলাইনের বিভিন্ন গ্রুপে সারারাত চলে ডাকাত আসছে বা গোলাগুলি নিয়ে পোস্ট। এতে করে সব জায়গায়ই মানুষ আতঙ্কিত ছিল।

সাধারণ মানুষরা জানান, দ্রুত পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। সাধারণ মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারা কিংবা সমস্যার সমাধান করতে হলে অবশ্যই পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তৎপর হতে হবে।

অন্যদিকে এই দুর্যোগ কাটাতে পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম সারাদেশে পুলিশ সদস্যদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) কর্মস্থলে যোগ দিতে সবাইকে পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতা করতে আহ্বান জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

এএএম/এমআইএইচএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।