এ সরকার নতুন বাংলাদেশ উপহার দেবে: নাহিদের বাবা

তৌহিদুজ্জামান তন্ময়
তৌহিদুজ্জামান তন্ময় তৌহিদুজ্জামান তন্ময় , নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:০১ পিএম, ০৮ আগস্ট ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠন হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই সরকারের ১৭ জন উপদেষ্টার মধ্যে দুজন ছাত্র প্রতিনিধি জায়গা পেয়েছেন। তারমধ্যে নাহিদ ইসলাম অন্যতম। নাহিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। তিনি সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তার বাবার নাম বদরুল ইসলাম জামির। তিনি একজন কলেজ শিক্ষক।

নাহিদ ইসলামের স্থায়ী ঠিকানা ঢাকার বাড্ডা এলাকার বেরাইদ ইউনিয়নে। বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে থাকেন রাজধানীর দক্ষিণ বনশ্রী এলাকায়। তিনি একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে জায়গা পাওয়া ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নাহিদ ইসলামের বাবা মো. বদরুল ইসলাম জামির সঙ্গে কথা বলেছে জাগো নিউজ।সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তৌহিদুজ্জামান তন্ময়

জাগো নিউজ: নাহিদ ইসলাম অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা হয়েছেন। বাবা হিসেবে আপনার অনুভূতি কেমন?

বদরুল ইসলাম: আলহামদুলিল্লাহ, অনেক খুশি, জীবনের অনেক পাওয়া মনে হচ্ছে। সবচেয়ে ভালো থাকবো, দেশবাসী যদি অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা করে নতুনভাবে দেশ গড়ার জন্য সহায়তা করে।

জাগো নিউজ: অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আপনার চাওয়া কী?

বদরুল ইসলাম: সরকারের দায়িত্বে যারা আছেন আশা করি তাদের সবাই সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। যেভাবে আন্দোলনের সময় দেশবাসী শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করেছে। কোনো কাজে কোথাও যেন দুর্নীতি না ঘটে। ঘুস, অবৈধ কাজ এবং সব অনিয়ম দূর করতে হবে। আশাকরি, নতুন সরকার একটি নতুন বাংলাদেশ উপহার দেবে। সেই অপেক্ষায় থাকবো।

জাগো নিউজ: কোটা আন্দোলনের সময় নাহিদকে যখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন আপনাদের কেমন মনে হতো?

বদরুল ইসলাম: অনেক কষ্ট, অনেক দুঃখ লেগেছিল, ভাষায় বোঝানো যাবে না। এরপর নাহিদকে খুঁজে পাওয়া গেলেও চিকিৎসারত অবস্থায় হাসপাতাল থেকে আবার নিয়ে যাওয়া হয়। তখন মনে হয়েছিল বিশ্বের অসভ্য দেশে বাস করছি। এরপর কত হয়রানি তা বলার নয়। তবে সেসব কষ্ট দূর হয়ে গেছে। সব ভুলে গেছি। আমার ছেলে একটা ভালো জায়গায় গেছে।

জাগো নিউজ: শিক্ষার্থীরা কী পারবে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে?

বদরুল ইসলাম: গত কয়েকদিন ধরে অনেক সুন্দরভাবে ট্রাফিক পুলিশের কাজ করছে ছাত্ররা। অথচ সরকার পুলিশকে বেতন-বন্দুক দিয়েও ছাত্রদের মতো সড়কে এত শৃঙ্খলা ফেরাতে পারেনি পুলিশ। আন্দোলন কাকে বলে দেখিয়ে দিয়েছে ছাত্ররা। দেশটা কীভাবে গড়তে হবে সেই অপেক্ষায় আমরা থাকবো। দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।

জাগো নিউজ: সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন এলাকায় লুটপাট ও ডাকাতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। সমাধান কীভাবে?

বদরুল ইসলাম: শিক্ষার্থীরা এখনো মাঠে আছে। চুরি-ডাকাতি রোধে তারা রাতে পাহারা দিচ্ছে। আবার অনেক সময় ডাকাতির ভুয়া খবরও আসছে। বিভিন্ন মসজিদ কমিটির সভাপতি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তারা হুজুরদের দিয়ে ঘোষণা দেওয়াচ্ছে যে ডাকাতি হচ্ছে। আসলে কোথাও ডাকাতি নেই। কারণ একটি আবাসিক এলাকায় গেট লাগানো থাকে সেখানে ডাকাতি হয় কীভাবে। আমরা খবর নিয়ে দেখেছি কোনো ডাকাতি নেই। তবুও পাহারা দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

জাগো নিউজ: নাহিদের মায়ের অনুভূতি কী?

বদরুল ইসলাম: সেও আমার মতো আনন্দিত। সন্তানকে নিয়ে সে গর্বিত। সারাদিন আমাদের বাসায় মানুষ মিষ্টি নিয়ে আসছে। শত শত টেলিফোন আসছে। সবাই অভিনন্দন জানাচ্ছে। সবাই নাহিদের সফলতা কামনা করছেন।

জাগো নিউজ: এলাকাবাসী বর্তমানে আপনাকে কেমনভাবে দেখছে?

বদরুল ইসলাম: এলাকাবাসী আগে আমাকে জমির স্যার নামে ডাকতেন। এখন আমাকে নাহিদের আব্বু বলে ডাকেন। এতে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করি। রাস্তায় বের হলেই সবাই ছবি তুলছেন।

টিটি/এমএএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।