ঢাকার সড়কে গণপরিবহন কম, রিকশার আধিপত্য
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আজ রোববার থেকে সারাদেশে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই দিনে আজ রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের আওতাধীন সব ওয়ার্ডে এবং দেশের সব জেলা ও মহানগরে কর্মী জমায়েত কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। এসব কর্মসূচি ঘিরে জনমনে সংঘাত-সহিংসতার আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ কারণে রাজধানীতেও এক ধরনের স্থবিরতা নেমেছে।
রোববার (৪ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে যানবাহনের সংখ্যা একেবারেই কম। গণপরিবহন নেই বললেই চলে। পথচারীও কমেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া অনেককেই এদিন ঘরের বাইরে বের হতে দেখা যায়নি।
সকাল থেকে সড়কে বাস-মিনিবাস না থাকার সুযোগে আধিপত্য বেড়েছে রিকশার। পাশাপাশি রয়েছে সিএনজি ও অটোরিকশা। মাঝে মাঝে চোখে পড়ছে ব্যক্তিগত (প্রাইভেটকার) গাড়ি। সকাল ১০টার দিকে মগবাজার, মালিবাগ, মৌচাক, শান্তিনগর, কাকরাইল ও নয়াপল্টন ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
- আরও পড়ুন
শহীদ মিনার থেকে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা
আজ সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল
এদিকে, গণপরিবহন না থাকায় অফিস-কর্মস্থলগামী মানুষদের চরম ভোগান্তি পোহাতে দেখা গেছে। অনেককেই পায়ে হেঁটে বা দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া দিয়ে রিকশায় করে গন্তব্যে গিয়েছেন।
গণপরিবহন না থাকার সুযোগে ভাড়া বাড়িয়েছেন রিকশাচালকেরা। এ বিষয়ে রিকশাচালক জালিমদ্দি জাগো নিউজকে বলেন, আমরা প্রতিদিনই একই ভাড়া নেই যাত্রীর কাছ থেকে। তবে মাঝে মাঝে যাত্রীরা খুশি হয়ে বেশি দেয়, বা আমরা কিছু বেশি দাবি করলেও তারা মেনে নেয়। এখানে জোর-জুলুম করা হয় না।
তবে ভাড়া বাড়েনি ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে। চালকদের দাবি, এখন কোনো যাত্রী ঢাকার বাইরে যাচ্ছেন না। এ কারণে দূরের ভাড়া মিলছে না। ঢাকার ভেতরে কাছাকাছি গন্তব্যের ভাড়া বাড়েনি।
শনিবার (৩ আগস্ট) রাতে সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের জানান, ঢাকাসহ দেশের চার জেলায় কারফিউ শিথিলের সময় আরও বাড়ছে। রোববার (৪ আগস্ট) থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকবে।
গতকাল শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সমাবেশ থেকে সরকারের পদত্যাগ দাবিতে এক দফা ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই সঙ্গে জাতীয় সরকার গঠনের দাবি জানানো হয়।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা-সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে গত ১৯ জুলাই রাতে সারাদেশে কারফিউ জারি করে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সহিংসতা দমনে সরকার অভিযান চালালে গত ২২ জুলাই থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। ক্রমে বাড়ে কারফিউ শিথিলের সময়। সর্বশেষ গত বুধবার থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অর্থাৎ ১৩ ঘণ্টা করে কারফিউ শিথিল ছিল।
ইএআর/এমকেআর/জেআইএম