পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পর ‘দেখামাত্র গুলি’র ঘটনা ঘটেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:২৯ এএম, ২৯ জুলাই ২০২৪

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পর নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে ‘দেখামাত্র গুলি’ করার একটি ঘটনাও ঘটেনি। আইন প্রয়োগকারী অভিযানের সময় হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে সরকার।

রোববার (২৮ জুলাই) রাতে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও সহিংসতার ঘটনায় নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও কিছু আন্তর্জাতিক অংশীদারের উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টি লক্ষ্য করেছে সরকার। বিশেষ করে প্রোপাগান্ডা, অপতথ্য ও গুজব প্রচারের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে অকুণ্ঠ সমর্থন ও পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্যক ধারণার জন্য সরকার কৃতজ্ঞ। সরকার সব আন্তর্জাতিক অংশীদারদের আশ্বস্ত করতে চায় যে, সরকার এবং জনগণের সময়োপযোগী এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে।

নিহতদের পরিবারের জন্য সরকার সহায়তার হাত বাড়িয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, প্রাণহানির জন্য ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন প্রধানমন্ত্রী। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের চাকরির নিশ্চয়তা দিয়েছেন তিনি। ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের যে ভোগান্তি হচ্ছে, তা সুরাহায় অঙ্গীকারাবদ্ধ সরকার। এটা খুবই পরিষ্কার যে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের ছাত্র সংগঠনগুলো এ আন্দোলনের ওপর চেপে বসে সন্ত্রাসের রাজত্ব ছড়িয়েছে। পাশাপাশি তারা ব্যাপক প্রোপাগান্ডা ও অপতথ্য ছড়িয়েছে।

গত ৫ জুন কোটাপ্রথা পুনর্বহালে হাইকোর্টের রায়ের পর কয়েক সপ্তাহ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। তারা সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবি জানিয়ে এ আন্দোলন করে আসছিলেন। ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে কোটাপ্রথা সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে দেয় সরকার। সরকারের সুস্পষ্ট নির্দেশনা পেয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ছাত্রদের আশ্বস্ত করেছিল যে তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে পারবেন এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা উপভোগ করবেন। এ সময়ে রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি দিতে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেছিল সরকার। একটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহিতায় নিয়ে আসতে অঙ্গীকারাবদ্ধ সরকার। এরই মধ্যে হাইকোর্টের এক বিচারকের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশনও গঠন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

অব্যাহত প্রোপাগান্ডার মুখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সরকার কিছু বিষয়গুলো তুলে ধরতে চায় উল্লেখ করে এতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ ও সুনির্দিষ্ট আন্দোলনকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করার কোনো সুযোগ নেই। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে হত্যা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পর নিরাপত্তা বাহিনীর মাধ্যমে ‘দেখামাত্র গুলি’ করার একটি ঘটনাও ঘটেনি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের সময় হেলিকপ্টার থেকে গুলির ঘটনাও ঘটেনি। আইন প্রয়োগকারী অভিযানের সময় হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেনি। মূলত নজরদারি, নির্দিষ্ট স্থানে আটকা পড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মীদের উদ্ধার এবং জরুরি পরিস্থিতিতে অগ্নিনির্বাপক সুবিধা দেওয়ার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়েছে। একটি সাঁজোয়া যান সাবধানতাবশত মোতায়েন করার পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। সেটিতে জাতিসংঘের লোগো ঢেকে দেওয়ার জন্য রঙের ব্যবহার হলেও তা দৃশ্যমান ছিল। যদিও প্রশ্নবিদ্ধ যানটি দ্রুত সেবা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

ব্রডব্যান্ড এবং মোবাইল ইন্টারনেট–সংযোগ এখন পুরোপুরি চালু হয়েছে। অস্থিরতা ও সহিংসতার পুরো সময়কালে ভূমিভিত্তিক এবং মোবাইল টেলিযোগাযোগসহ যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমগুলো কার্যকর ছিল। প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়াগুলো কারফিউ ঘণ্টার সময় অন্যান্য জরুরি পরিষেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে মিডিয়াকর্মীদের জন্য ছাড়ের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সরকার যে কোনো মূল্যে জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকারকে সমুন্নত রেখেছে এবং অব্যাহত রাখবে।

আইএইচআর/এমএএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।