দেশে সরকারিভাবে প্রথম ভাসমান রেস্তোরাঁ নির্মাণের উদ্যোগ

মফিজুল সাদিক
মফিজুল সাদিক মফিজুল সাদিক , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:২১ এএম, ২৬ জুলাই ২০২৪
ভাসমান রেস্তোরাঁর নকশা

ভাসমান রেস্তোরাঁ পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ। গাজীপুর ও ঢাকার আশপাশে বেশকিছু এ ধরনের রেস্তোরাঁ রয়েছে। সরকারি উদ্যোগে এবারই প্রথম ভাসমান রেস্তোরাঁ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া। রেস্তোরাঁটি হবে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন। থাকবে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা।

‘টুঙ্গিপাড়ার গ্রামীণ পরিবেশ অক্ষুণ্ন রেখে ভাসমান রেস্তোরাঁ নির্মাণ এবং হোটেল মধুমতি, টুঙ্গিপাড়ার ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন’ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। চলতি সময় থেকে জুন ২০২৬ মেয়াদে ১৭ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। প্রস্তাবিত প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করছে কমিশন। শিগগির প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে পারে।

প্রকল্পের আওতায় দেশি-বিদেশি পর্যটকদের মানসম্মত সেবা দিতে বাঘিয়া নদীর ঘাটে দৃষ্টিনন্দন এ ভাসমান রেস্তোরাঁ নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি সেবার মানোন্নয়ন করা হবে হোটেল মধুমতির। নদী ছাড়াও ৮১ দশমিক ১ শতক এলাকা জুড়ে অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে রেস্তোরাঁর জন্য। এর আগে বেসরকারি উদ্যোগ দেশের নানান প্রান্তে ভাসমান রেস্তোরাঁ নির্মাণ করা হলেও প্রকল্পের আওতায় আধুনিক, দৃষ্টিনন্দন ও মানসম্মত কাজ এবারই প্রথম হচ্ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

দেশে সরকারিভাবে প্রথম ভাসমান রেস্তোরাঁ নির্মাণের উদ্যোগ

দেশে সরকারিভাবে প্রথম ভাসমান রেস্তোরাঁ নির্মাণের উদ্যোগ

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. মাহমুদ কবীর জাগো নিউজকে বলেন, ‘পদ্মা সেতুর কারণে টুঙ্গিপাড়ায় মানুষের যাতায়াত বাড়ছে। বঙ্গবন্ধুর সমাধি থাকার কারণে টুঙ্গিপাড়া এখন অন্যতম পর্যটন এলাকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে আমাদের যে অবকাঠামোগত সুবিধা রয়েছে তা পর্যটকের তুলনায় খুবই কম। ভিআইপিসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অতিথিদের আধুনিক সুবিধা দিতেই আমাদের এ উদ্যোগ।’

বঙ্গবন্ধুর সমাধি থাকার কারণে টুঙ্গিপাড়া এখন অন্যতম পর্যটন এলাকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে আমাদের যে অবকাঠামোগত সুবিধা রয়েছে তা পর্যটকের তুলনায় খুবই কম। ভিআইপিসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ অতিথিদের আধুনিক সুবিধা দিতেই আমাদের এ উদ্যোগ।- বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. মাহমুদ কবীর

সরকারি উদ্যোগে এবারই প্রথম ভাসমান রেস্তোরাঁ নির্মাণ কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে এবারই প্রথম।’

দেশে সরকারিভাবে প্রথম ভাসমান রেস্তোরাঁ নির্মাণের উদ্যোগ

প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও সুযোগ-সুবিধা

প্রকল্পের আওতায় হোটেল মধুমতি ও টুঙ্গিপাড়ায় আগত পর্যটকদের উন্নত সেবা দেওয়ার জন্য দ্বিতীয় তলায় চারটি নতুন অতিথি কক্ষ নির্মাণ, দ্বিতীয় তলার খালি টেরেসে ৩০ থেকে ৩৫ আসনের ভিআইপি রেস্তোরাঁ নির্মাণ ও বিদ্যমান সুবিধা আধুনিকায়ন করা হবে।

দেশে সরকারিভাবে প্রথম ভাসমান রেস্তোরাঁ নির্মাণের উদ্যোগ

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য দৃষ্টিনন্দন ল্যান্ড স্কেপিংসহ থাকবে স্বাস্থ্যসম্মত ক্যাটারিং। আধুনিক সেবা দিতে ভাসমান রেস্তোরাঁ নির্মাণের লক্ষ্যে ছয়টি কিয়স্ক নির্মাণ, স্থানীয় পণ্যের বিপণন, রাজস্ব আয় বৃদ্ধিসহ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে আয় বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন করা হবে।

দেশে সরকারিভাবে প্রথম ভাসমান রেস্তোরাঁ নির্মাণের উদ্যোগ

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন জানায়, নানা কারণে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হচ্ছে। টুঙ্গিপাড়ায় বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য ও সরকারি উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং দেশি-বিদেশি আগত পর্যটকদের পর্যটনসেবা দেওয়া হচ্ছে। এজন্য বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন ২০০১ সালে টুঙ্গিপাড়ায় হোটেল মধুমতি নির্মাণ করে। যার বিদ্যমান অবকাঠামো প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।

দেশে সরকারিভাবে প্রথম ভাসমান রেস্তোরাঁ নির্মাণের উদ্যোগ

হোটলটিতে ২২টি অতিথি কক্ষ এবং ৫০ থেকে ৬০ আসনের একটি ভাসমান রেস্তোরাঁ রয়েছে। পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এ হোটেলে আগত অতিথি সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। বাস্তবতার নিরিখে চাহিদা পূরণ ও সেবার মান বাড়াতে আটটি নতুন কক্ষ তৈরি এবং বিদ্যমান সুবিধার আধুনিকায়ন করা আবশ্যক। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এমওএস/এএসএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।