সব বিমানবন্দরে স্বাভাবিক হচ্ছে ফ্লাইট, বাড়ছে যাত্রী
দেশের সব বিমানবন্দরেই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলাচল ক্রমে স্বাভাবিক হচ্ছে। এরসঙ্গে প্রতিটি ফ্লাইটে যাত্রী সংখ্যাও বাড়ছে। ইন্টারনেট সংযোগ ঠিক থাকলে কয়েকদিনের মধ্যে আকাশপথে যাতায়াত আগের মতোই বাড়বে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন, শিক্ষার্থী-পুলিশ সংঘর্ষ ও দেশজুড়ে কারফিউ জারির প্রভাবে উড়োজাহাজে সংকট দেখা দেয়। এতে কয়েকটি এয়ারলাইন্স তাদের নির্ধারিত ফ্লাইট বাতিল করে। অনেক ফ্লাইট সময় মতো বিমানবন্দর ছাড়তে পারেনি। আবার ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকায় অনেক যাত্রী টিকিট কাটতেও পারেননি। তবে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাতে দেশে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু হওয়ায় টিকিট বিক্রি স্বাভাবিক হয়েছে।
দেশের আটটি বিমানবন্দরে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার ও এয়ার অ্যাস্ট্রা।
উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো জানায়, ছাত্র আন্দোলনের কারণে গত সোমবার থেকে যাত্রীর চাপ কমতে থাকে। এরপর বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) অবরোধ এবং পরদিন থেকে টানা সংর্ঘষে যাত্রী সংকট দেখা দেয়। ফলে প্রায় অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে অনেক এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করে। আবার কিছু উড়োজাহাজে আসনের ৩০ শতাংশেরও কম যাত্রী হওয়ায় ফ্লাইট বাতিলের ঘটনাও ঘটেছে।
তবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দাবি, যাত্রী সংকটের কারণে তাদের কোনো ফ্লাইট বাতিল করা হয়নি।
জানতে চাইলে বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার জাগো নিউজকে জানান, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে তাদের কোনো ফ্লাইট বাতিল হয়নি। প্রতিটি ফ্লাইটে নির্ধারিত টিকিটের বিপরীতে যাত্রী ছিল। তবে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্নের কারণে যাত্রীদের টিকিট কাটতে কিছুটা ঝামেলা হয়েছিল। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাতে ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত আকারে চালু হওয়ায় সে সমস্যা অনেকাংশে কমেছে।
তবে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে। গত এক সপ্তাহ ধরে তাদের যাত্রী ৩০ শতাংশের কমে নেমে এসেছিল। এ কারণে গত মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) তারা দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে পাঁচটি ফ্লাইট বাতিল করে।
জানতে চাইলে ইউএস-বাংলার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে অভ্যন্তরীণ রুটের বহু যাত্রী সময় মতো বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারেননি। তারা ফ্লাইট মিস করেছেন। আবার ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় অনেকে টিকিট কাটতে পারেননি। তখন ফ্লাইটে যাত্রী সংকট তৈরি হয়েছিল। এ কারণে অভ্যন্তরীণ রুটে কিছু ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার রাত থেকে সেই পরিস্থিতি ক্রমেই স্বাভাবিক হচ্ছে।
নভোএয়ার সূত্র জানায়, ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় গত সোমবার থেকে চাহিদা কমে যায় টিকিটের। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। প্রায় একই তথ্য জানিয়েছে এয়ারঅ্যাস্ট্রাও।
দেশ-বিদেশের উড়োজাহাজের টিকিট বিক্রি করে ফকিরাপুলের ট্রাভেল এজেন্সি রায়হান ট্রাভেল। এটির স্বত্বাধিকারী আবু রায়হান বলেন, আন্দোলনের কারণে গত এক সপ্তাহে হাজারো যাত্রী অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট মিস করেছেন। ইন্টারনেট না থাকায় যাত্রীদের কোনো ধরনের সহযোগিতা করা যায়নি। এখন ইন্টারনেট সংযোগ পেয়েছি। যাত্রীদের টিকিটগুলো নিয়ম অনুযায়ী প্রসেস করা হবে।
সব বিমানবন্দর স্বাভাবিক, দাবি বেবিচকের
দেশের সব বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। বুধবার (২৪ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
তবে শাহজালাল বিমানবন্দর সূত্র জানায়, ফ্লাইটগুলো নির্ধারিত সময় থেকে বিলম্বে উড্ডয়ন করছে। বিমানবন্দরে ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত থাকায় চেক-ইন, ইমিগ্রেশনসহ প্রতিটি ধাপ পার হতে অতিরিক্ত সময় লাগছে।
এমএমএ/এমএইচআর/জেআইএম